রাখাইনে পুড়ে যাওয়া জমি দখলে নেবে সরকার
প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:১০ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার
রাখাইন রাজ্যে পুড়িয়ে দেওয়া রোহিঙ্গাদের ভূমির দখল নেবে মিয়ানমার সরকার। রাখাইনের রাজধানী সিতভিতে মঙ্গলবার এক বৈঠকে দেশটির সমাজকল্যাণ ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াত আইয়ে এ কথা জানান।
দেশটিতে প্রচলিত একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, দেশের আইনানুযায়ী পুড়ে যাওয়া ভূমি সরকারের দখলে চলে যায়। সরকার সেসব ভূমির পুনঃউন্নয়ন করে থাকে। ভূমি পুনঃউন্নয়ন কাজ খুবই কার্যকর হবে এখানে।
মিয়ানমারের সরকারি দৈনিক ‘নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ এর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, যেকোনো ধরনের দুর্যোগ বা সংঘর্ষের কারণে কোনো এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকার সেই এলাকার পুনঃউন্নয়ন কাজ তদারকি করবে। তবে সরকারের পুনঃউন্নয়ন পরিকল্পনা কী, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি।
দেশত্যাগ করা রোহিঙ্গারা যদি দেশে ফিরে যায় তবে তাদের নিজ গ্রামে প্রবেশ বা সম্পত্তির দখল নিতে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি। এ বিষয়ে জানতে ওই মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইনে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলার পর থেকে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ছবি বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন জানায়, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে প্রায় চারশটি রোহিঙ্গা গ্রামের অর্ধেকের বেশি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। যাদের অনেকের শরীরে গুলি বা পোড়া ক্ষত রয়েছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মুখে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধদের নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা পাওয়া যায়। তারা জানায়, সেখানে তাদের হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে। পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের বাড়িঘর।
যদিও মিয়ানমার সরকারের দাবি, এআরএসএ জঙ্গিরা রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে আক্রমণ করছে এবং তাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। যে কারণে রাখাইনের রোহিঙ্গা গ্রামগুলো খালি হয়ে গেছে। সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সহিংসতায় প্রায় পাঁচশ মানুষ নিহত হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলেছে। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটির সরকার।
/আর/এআর