ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

মানব ভ্রূণে অস্ত্রোপচার

প্রকাশিত : ০৯:৫০ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৫৩ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার

মানবভ্রুনে ডিএনএ সার্জারির মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন চীনের একদল চিকিৎসাবিজ্ঞানী। সান ইয়াত সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষক দল জানাচ্ছে, মানবদেহের জেনেটিক কোড সংশোধন করে এটা সম্ভব।

এবারই প্রথম মানব ভ্রূণে ‘রাসায়নিক অস্ত্রোপচার’ করে রোগ নিরাময়ের দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। সান ইয়াত-সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই অস্ত্রোপচার করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টি বলেছে, ভ্রূণের মূল উপাদান সম্পাদনা প্রযুক্তির ব্যবহার করে গবেষকেরা জেনেটিক কোডে ত্রুটি খুঁজে বের করে তা দূর করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বেটা-থ্যালাসেমিয়া রোগ নিরাময়ে গবেষণাগারে তৈরি ভ্রূণ সম্পাদনা করেছেন ওই বিজ্ঞানীরা।

অ্যাডেনিন, সাইটোসিন, গুয়ানিন ও থাইমিন—এই চারটি হলো ডিএনএর মূল উপাদান। এই উপাদানগুলো যথাক্রমে এগুলোর নামের আদ্যক্ষর ‘এ’, ‘সি’, ‘জি’ ও ‘টি’ দিয়ে পরিচিত। চীনের ওই বিজ্ঞানীরা ভ্রূণ সম্পাদনার ক্ষেত্রে এই উপাদানগুলোতেই রদবদল এনেছেন। জার্মানির স্প্রিঙ্গার সায়েন্স প্লাস বিজনেস মিডিয়ার প্রোটিন অ্যান্ড সেল সাময়িকীতে এ-সংক্রান্ত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।

রক্তে হিমোগ্লোবিন শিকলে বেটা চেইন সংশ্লেষণের অনুপস্থিতির কারণে প্রাণঘাতী বেটা-থ্যালাসেমিয়া রোগ হয়। জেনেটিক কোডে একটি মাত্র মূল উপাদানজনিত ত্রুটির কারণে জন্মগত এই রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। চীনের বিজ্ঞানীরা এই ত্রুটি সারতে ডিএনএ স্ক্যান করে ‘জি’ উপাদানকে ‘এ’তে রূপান্তরিত করেছেন।

গবেষক দলের একজন জুনজিউ হুয়াং দাবি করেন, মূল উপাদান সম্পাদনাব্যবস্থার মাধ্যমে রোগ নিরাময়ে তাঁরাই প্রথম সফল হয়েছেন। রক্তে ত্রুটি আছে এমন একজন রোগীর শরীর থেকে টিস্যু নিয়ে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে তাঁরা প্রথমে গবেষণাগারে মানবভ্রূণটি পান। তারপর ভ্রূণটি সম্পাদনা করে রোগটি সারিয়ে তোলেন বলে জানান এই গবেষক।

চীনের গবেষকদের এই ভ্রূণ সম্পাদনাকে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে অবস্থিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড লিউ ‘রাসায়নিক অস্ত্রোপচার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ভ্রূণ সম্পাদনায় বর্তমানে আলোচিত সিআরআইএসপিআর প্রযুক্তির তুলনায় এই প্রযুক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হবে বলে তিনি মনে করছেন।
সূত্র : বিবিসি।
//এআর