ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

‘রোহিঙ্গা সঙ্কটে চীন-রাশিয়ার দ্বিচারিতা গ্রহণযোগ্য নয়’

প্রকাশিত : ০২:৩৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ১০:১৩ পিএম, ২ অক্টোবর ২০১৭ সোমবার

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নিপীড়নকে সমর্থন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণের আশ্বাস দেওয়ায় চীন ও রাশিয়ার সমালোচনা করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দেশ দুটির এমন অবস্থানকে ‘দ্বিচারিতা’ আখ্যা দিয়ে এ থেকে সরে আসারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমী পরিদর্শনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের দুই দেশের সমালোচনা করেন।  


ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মাধ্যমে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মুক্ত আলোচনা সম্পর্কে আমরা জানতে পারছি যে, চীন ও রাশিয়া রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এর মধ্যে চীন মানবিক সাহায্যও পাঠাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, মানবিক সাহায্য যারা করতে চান, করবেন। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বর্বর গণহত্যাকে সমর্থন করা দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক। আমি আশা করি এটাই তাদের শেষ পদক্ষেপ নয়। চীন ও রাশিয়া এ মানবিক সঙ্কটে, মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে, মানবতার, সত্য-ন্যায় ও যৌক্তিকতার পক্ষে অবস্থান নেবে আমি আশা করি। দ্বিচারিতা আমরা আশা করি না। একদিকে সাহায্য, অন্যদিকে অত্যাচারী ঘাতকদের সমর্থন এবং নিপীড়িতদের মানবিক সাহায্য দ্বিচারিতা। তা সমর্থন যোগ্য নয়।


আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘চীন ও রাশিয়া বৃহৎ শক্তি। তারাও আমাদের বন্ধু দেশ। এ মানবিক সংকটে তারা যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। এ মানবিক সংকটে আমাদের সাহায্যের অভাব নেই। ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। তারাও আমাদের সাত হাজার টন ত্রাণ সাহায্য দিয়েছে, যার প্রথম চালান আমি নিজেই গ্রহণ করেছি। সাহায্য আমরা পাচ্ছি, আমাদের দেশের ভেতর থেকেও এত সাহায্য আসছে যে এখনো আমাদের সরকারি ত্রাণ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি।’


ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে তাদের উপর অমানুষিক টর্চার, রেইপ নেমে এসেছে। বর্মী সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন কত বর্বর, কত পাশবিক... নৌকায় সাগর পাড়ি দেওয়া থেকে ভয়ঙ্কর। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অত্যাচার, নিপীড়ন মানব সভ্যতার ইতিহাসে, এই নিষ্ঠুরতা আদিম সাম্যবাদী সমাজ, মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।


অসম্প্রদায়িক মানবতাবাদী শক্তির নব উত্থানের আশা প্রকাশ করে সেতু মন্ত্রী বলেন, আজকে দেবী দুর্গার যে চেতনা আসুরিক শক্তির বিরুদ্ধে, সেই আসুরিক শক্তির বিরুদ্ধে অসম্প্রদায়িক মানবতাবাদী শক্তির নব উত্থান ঘটুক, এই দেবী দুর্গা উৎসবে এটাই আমাদের সবার প্রত্যাশা।


তিনি বলেন, আজকে দেশি বিদেশি আসুরিক শক্তির দাপটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বারে বারে আঘাতের সম্মুখীন হচ্ছে। এতে আজকে মাইনরিটিরাই বেশি সাফার করছে।


প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে স্মরণ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, আজকের এই দিনে আমি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি আপনাদের প্রিয় মানুষ, যার সাথে এখানে এক সঙ্গে আসতাম, একসঙ্গে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতাম, সেই শ্রদ্ধাভাজন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে।


এসময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মুকুল বোস, কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মেরিনা জামান, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেনগুপ্প, সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল, ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিএল চ্যাটার্জীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।