ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করতেই রোহিঙ্গা সঙ্কট : আবুল বারকাত

প্রকাশিত : ০৩:৪৫ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০১:৫১ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শনিবার

দ্রুত অগ্রসরমান বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করতেই পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা সঙ্কট তৈরি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। জাতীয় প্রেস ক্লাবে শুক্রবার ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের প্রতিবাদ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। এসময় তিনি ত্রাণ সচিবের ‘রোহিঙ্গারা শরনার্থী নয়’ বক্তব্যের সমালোচনা করেন। বলেন, এই বক্তব্য ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’র মত অবস্থা।

রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য সাময়িক নয়, দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে আবুল বারকাত বলেন, রাখাইন রাজ্য ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপুর্ণ অবস্থান হওয়ার কারণে বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মিয়ানমারের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরনে বিনিয়োগ ও রাখাইন রাজ্যে বহুমুখি যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ, সামরিক আগ্রাসী শক্তিসহ স্বৈরাচার জিইয়ে রাখা, ধর্মভিত্তিক উগ্রতা পরিপুষ্ট করে এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করা ও উঠতি অর্থনীতির বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করাসহ সংশ্লিষ্টসহ অনেক কিছুই এসবের পেছনে ভুমিকা রাখছে। এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশকে কুটনৈতিক লবি জোরদারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতিও জোরদার করতে হবে। যে করেই হোক রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

‘রোহিঙ্গারা শরনার্থী নয়’ ত্রান সচিবের এমন বক্তব্যকে ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’ বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে জাতিসংঘে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী বলেছেন, ত্রান সচিব সেখানে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকারী হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এটা ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’র মত অবস্থা।

আবুল বারকাত বলেন, কোনো জনগোষ্ঠীকে অনুপ্রবেশকরী বললে ওই জনগোষ্ঠীর প্রতি দায় দায়িত্ব থাকে না। কিন্তু শরণার্থী বললে ওই সব জনগোষ্ঠীর প্রতি সরকার ও সেই দেশের জনগণের দায়-দায়িত্ব থাকে। ১৯৯১ সাল থেকে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা এদেশে বসবাস করছেন। এরপর আবার প্রায় ৫ লাখ নতুন করে প্রবেশ করেছে। সরকার তাদের বাসস্থান, খাওয়া পরার ব্যবস্থাসহ নানামুখি কল্যাণের কথা ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথাও বলেছেন, ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়া পরার ব্যবস্থা করতে পারলে ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর খাওয়া-পরা ও বাসস্থান করতে পারবো। এ বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তিনি মিয়ানমারে জাতিগত ও সমাজ-গোষ্ঠীগত নিধনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছেন। ত্রান সচিব রোঙ্গিাদের অনুপ্রবেশকারী বলে তাদের খাটো করেছেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমার যা করছে তা শুধু মানবাধিকার লংঘন নয়, একই সঙ্গে এটা গণহত্যা, জাতিগত নিধন ও সমাজ-গোষ্ঠী হত্যা এবং পুরো একটি সার্বভৌম জনগোষ্ঠীকে ‘অজনগণকরণ’করা। আমাদের কাছে  মিয়ারমারে রোহিঙ্গা নিধনের কার্য-কারণ মোটামুটি এটাই স্পষ্ট হয়েছে।

সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদন ড. জামাল উদ্দিন আহমেদসহ অন্য সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 

আরকে//এআর