ঢাকা, রবিবার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ১৩ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসছে শনিবার

প্রকাশিত : ০৮:২৬ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ১২:১৪ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শনিবার

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রমত্তা পদ্মার স্রোত আর ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে দৃশ্যমান হতে চলেছে পদ্মা সেতু। আগামীকাল (শনিবার)পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হবে। মুন্সিগঞ্জে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ধূসর রঙের এই স্প্যান নিয়ে যাওয়া হয়েছে জাজিরা প্রান্তে। জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারেই বসছে প্রথম স্প্যান। যার উপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রথম দিকে স্প্যানের রং সোনালি হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা ধূসর রংয়ের করা হয়েছে। ফলে পদ্মা সেতুটি দেখতে ধূসর রঙের হবে।

শনিবার স্প্যান বসানোর সময় উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সেতু প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার মাওয়া থেকে ৭বি স্প্যানটি ক্রেনে করে জাজিরার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রায় ১৫০ মিটার স্প্যানটি আজ শুক্রবার ৩৫ নম্বর পিলারের সামনে ছিল। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে শনিবার সময়মতো পিলারের উপর বসানোর কাজ সম্পন্ন হবে।

প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, পানির স্তর থেকে ৫০ ফুট উঁচুতে বসবে প্রতিটি স্প্যান। কাজের গতি বাড়াতে সিঙ্গাপুর থেকে আরও ২টি হাইড্রোলিক হ্যামার আনা হয়েছে। এসেছেন নতুন পারদর্শী শ্রমিক ও নতুন দক্ষ প্রকৌশলী। মূল নদীর মধ্যে ১৫০ মিটার পর পর ৪২টি পিলারের প্রতিটি পিলারে ৬টি করে মোট ২৫২টি পাইল থাকছে। এর মধ্যে ২৮টি পাইলের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। ৫৮টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে ৫০ ভাগ। এই মুহূর্তে ৫টি স্প্যান বসানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। ইতোমধ্যেই প্রস্তুত করা স্প্যানের লোড টেস্ট করা হয়েছে।  

পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ভায়াডাক্টসহ দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৯ কিলোমিটার। দ্বিতল এই সেতুটি হবে স্টিলের। পদ্মা সেতুতে কংক্রিটের ৪২টি খুঁটি বা পিলার হবে।

পদ্মা সেতুর নিচের তলার ভেতর দিয়ে চলবে রেল। আর যানবাহন ওপরে পিচঢালা পথ দিয়ে চলবে।  পদ্মা সেতুতে রাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আদলে লাল ও সবুজ বাতি জ্বলবে।

সরকার ২০১৮ সালের নভেম্বরে কাজ শেষে সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মূল সেতুর কাজ করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজে নিয়োজিত আছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন। পদ্মা সেতুর কাজ ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মূল সেতু ও নদীশাসন হচ্ছে বড় দুটি কাজ। এর বাইরে দুই পারে সংযোগ সড়ক ও টোলপ্লাজা নির্মাণ এবং অফিস, বাসাসহ নির্মাণ অবকাঠামোর কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের এ পর্যন্ত ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে শফিকুল ইসলাম জানান, প্রথম স্প্যানটি অস্থায়ী বেয়ারিংয়ের উপর বসানো হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তার দেওয়া সময় অনুযায়ী তার উপস্থিতিতে চূড়ান্তভাবে স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। 

ডব্লিউএন