ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বৃন্দাবনের জমজ ছেলেদের সঙ্গে আড্ডা

একই বৃন্তের দুটি ফুল

সোহাগ আশরাফ

প্রকাশিত : ০১:৪৫ পিএম, ১ অক্টোবর ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ০১:৪২ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৭ মঙ্গলবার

বাবা বৃন্দাবন দাসের সঙ্গে সৌম্য ও দিব্য

বাবা বৃন্দাবন দাসের সঙ্গে সৌম্য ও দিব্য

বড় হয়ে গেছে দিব্য-সৌম্য। ওরা জমজ। দেখলে মনে হবে ওরা যেনো ‘একই বৃন্তের দুটি ফুল’। যেখানে যায় একই পোশাক পরে। এমনকি বাড়িতেও। ওরা জনপ্রিয় নাট্যকার ও অভিনেতা বৃন্দাবন দাস এবং অভিনেত্রী শাহনাজ খুশির ছেলে। দুই ভাইয়ের সব কিছুই এক রকম। কথা বলার ভঙ্গি, কণ্ঠস্বর, চেহারা, গায়ের রং সব।

পুরো নাম দিব্য জ্যতি ও সৌম্য জ্যতি। সেই ছোট্ট দিব্য-সৌম্য সম্প্রতি ‘ও’ লেভেল পাশ করেছে। এবারের ঈদে ওরা অভিনয় করেছে মায়ের সঙ্গে বাবার লেখা নাটকে।

মায়ের সঙ্গে দুই ভাই

সম্প্রতি একুশে টেলিভিশন অনলাইনের সঙ্গে আড্ডা হয় দুই ভাইয়ের। ওরা জানায়, নিজেদের এবং বাবা-মায়ের গল্প।

বাবা একজন নাট্যকার ও জনপ্রিয় অভিনেতা- কেমন লাগে জানতে চাইলে দিব্য বলে, ‘এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের। আমরা যখন স্কুলে যাই বা রাস্তায় বের হই তখন সবাই আমাদের দেখিয়ে বলে ওরা বৃন্দাবন দাস ও খুশির ছেলে। এটি একটি অন্যরকম ভালো লাগা।’

কথা শেষ না হতেই সৌম্য বলে, ‘আমি এবিষয়টি নিয়ে প্রাউড ফিল করি। জন্মের পর থেকেই আমরা বাবা-মায়ের একটি বড় পরিচয় নিয়ে বড় হয়ে উঠছি। এটা সত্যিই গর্বের। মাঝে মাঝে ভাবী কি করে সম্ভব একজন মানুষের মাথা থেকে এতো গল্প তৈরি হচ্ছে। কোনো গল্পের সঙ্গে কোনটার মিল নেই। গল্পের এই প্লট কোত্থেকে আসে ভেবে পাই না। তাই বাবার এই কাজকে আমি অনেক অনেক সম্মান করি।’ 

হ্যাপী ফ্যামিলি নাটকে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে দিব্য ও সৌম্য।

সম্প্রতি ওরা দুই ভাই ঈদের দুটি নাটকে অভিনয় করেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে বাবা বৃন্দাবন দাসের লেখা এ নাটকে মায়ের সঙ্গেই অভিনয় করেছে দুই ভাই। এর আগে ক্যামেরার সামনে এলেও এবারই ওরা নিজেদের মত করে অভিনয় করতে চেষ্টা করেছে।

অভিনয় সম্পর্কে দিব্য বলে, ‘অভিনয় করতে ভালো লাগে। কিন্তু অনেক কঠিন কাজ এটি। সাহস, অভিজ্ঞতা সবই লাগে।’

দিব্যর সুরে সুর মিলিয়ে সৌম্য বলে, ‘অভিনয় করতে যে এতো কষ্ট তা ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েই বুঝতে পেরেছি। বাবা-মাকে দেখি অভিনয় করে। কিন্তু এখন বুঝতে পেরেছি এটা কত কঠিন কাজ।’

দুই ছেলের অভিনয় নিয়ে একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বৃন্দাবন দাস বলেন, ‘ওরা আমাদের পথে হাঁটুক সেটা বলব না। স্রেফ শখের বশে দিব্য-সৌম্যকে অভিনয়ে নিয়ে আসা। আর সম্প্রতি ওরা  ও লেভেল শেষ করেছে। ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে নাটকে অভিনয়ের কথা জিজ্ঞেস করায় ওরা আগ্রহ দেখিয়েছে দু’জনই। তাই সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বড় হয়ে ওরা কেন পথে যাবে তা একান্তই ওদের নিজস্ব বিষয়। এটি ওদের উপর ছেড়ে দিয়েছি।’

দুই ভাই চেহারায় একই রকম হওয়ায় অনেকেরই চিনে নিতে সমস্যা হয়। এমনকি বাবা-মায়েরও।

এবিষয়ে দিব্য বলে, ‘ছোট বেলায় বাবার মাঝে মাঝে চিনতে সমস্যা হতো। এখন ঠিক হয়ে গেছে। যারা সব সময় আমাদের সঙ্গে মেলামেশা করে তাদের সমস্যা হয় না। কিন্তু নতুন অনেকেই ঘুলিয়ে ফেলে। এছাড়া এখন বড় হয়ে ওজনের তারতম্য হয়েছে।’

ঘরে বাইরে ওরা দুই ভাই সব সময় একই পোশাক পড়ে। ছোটবেলা থেকেই এভাবে অভ্যস্ত ওরা।

এ বিষয়ে বৃন্দাবন দাস বলেন, ছোট বেলা থেকেই ওদের একই পোশাক পড়ানো হয়েছে। আলাদা রঙের বা ডিজাইনের কিনে আনলে ওদের মধ্যে ঝামেলা হতো। কে কোনটা নিবে এটা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হতো। দেখা যেতো একটাই দুজনের পছন্দ হয়েছে। তাই ওর মা যখন কিছু কিনে আনে একই রকম নিয়ে আসে।’

দুই ভাইয়ের মধ্যে মিল ও আন্তরিকতা যেমন, ঠিক তার বিপরিতে মাঝে মাঝে ঠুকাঠুকিও হয়। অনেক সময় ঝগড়া চরম আকার পৌঁছালে বাবা-মাকেই তা সমাধান করতে হয়। তবে এটি নিয়ে দুজনই লাজুক ভাবে বলে, ‘এটা যখন করি তখনতো বুঝতে পারি না। পরে বুঝতে পারি ঠিক হয়নি। তাই আবারও মিলে যাই।’

 

//এআর