ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

তালগোল পাকানো ব্যাটিং : ৩৩৩ রানে হার

প্রকাশিত : ০৫:১০ পিএম, ২ অক্টোবর ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৩:৪০ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৭ মঙ্গলবার

আশা নিয়ে শুরু করা দিন শেষ হল দুঃস্বপ্নে। তালগোল পাকানো ব্যাটিংয়ে পেতে হল বিব্রতকর হারের স্বাদ। পুরো দিন কাটিয়ে দেওয়ার আশা নিয়ে নামা বাংলাদেশ টিকতে পারলো না এক সেশনও।

চতুর্থ দিনের  চা বিরতির আগেই ৩ উইকেট হারিয়ে হারের সময় গুনছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই হারটা যে এত দ্রুত এসে পড়বে, সেটা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেনি । পচেফস্ট্রুম টেস্টের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানরা প্রতিরোধ গড়বেন এমন স্বপ্ন অনেকেই দেখছিলেন। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান কিংবা লিটন দাসরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করবেন—এমন প্রত্যাশা তো অমূলক কিছু ছিল না। কিন্তু তারা ব্যর্থ হলেন খুব বাজেভাবেই। শেষ দিন সকালে দেড় ঘণ্টা না যেতেই ৯০ রানে অলআউট বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯০ রানে মুশফিকুর রহিমের দলকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৩৩৩ রানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ খেলতে পেরেছে কেবল মাত্র  ৩২.৪ ওভার।

ইনিংসে নেই কোনো ফিফটি। উইকেটে পড়ে থাকার মানসিকতা দেখা যায়নি কারোর মধ্যেই। কোনো ব্যাটসম্যানই খেলতে পারেননি দায়িত্ব নিয়ে। ৪১ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছে চন্দিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।    

আগের দিনই বিদায় নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক ও ইমরুল কায়েস। ৩ উইকেটে ৪৯ রান নিয়ে সোমবার সেনওয়েস পার্কে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।

দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার মর্নে মর্কেল ছিলেন না চোটের জন্য। অনভিজ্ঞ বোলিং লাইন আপকে সামলানো তুলনামূলক সহজ ছিল। কিন্তু ম্যাচ বাঁচানোর ধারে কাছে যেতে পারল না বাংলাদেশ।

সবচেয়ে বড় ভরসা মুশফিকুর রহিম ফেরেন সবার আগে। আগের দিন ১৬ রান করা অধিনায়ক কোনো রান যোগ করতে পারেননি। কাগিসো রাবাদার বাড়তি বাউন্স সামলাতে না পেরে ফিরেন হাশিম আমলাকে ক্যাচ দিয়ে।

মর্কেলের অনুপস্থিতিতে বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া রাবাদাই শেষ করে দেন বাংলাদেশের সব আশা। মুশফিকের পর ফিরিয়ে দেন মাহমুদউল্লাহ ও লিটন দাসকে।

প্রথম ইনিংসে অর্ধশতক পাওয়া মাহমুদউল্লাহ ফিরেন বোল্ড হয়ে। উইকেটের পিছনে দারুণ সময় কাটানো লিটন বিবর্ণ উইকেটে সামনে। রাবাদার ফুল লেংথ বলে ফিরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।

রাবাদার তিন উইকেটে বাংলাদেশের পরাজয় সময়ের ব্যাপারে পরিণত হয়। সাব্বির রহমানের সামর্থ্য ছিল পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর। দলের দ্বিতীয় ইনিংস আরেকটু বড় করার। হতাশ করেছেন তিনিও, সুইপ খেলতে গিয়ে ফিরেছেন বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।

ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে যা একটু লড়াই করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একটি করে ছক্কা-চারে অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে। তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে নেন মহারাজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৯৬/৩ ডি.

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩২০

দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ২৪৭/৬ ডি.

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ৩২.৪ ওভারে ৯০ (তামিম ০, ইমরুল ৩২, মুমিনুল ০, মুশফিক ১৬, মাহমুদউল্লাহ ৯, লিটন ৪, সাব্বির ৪, মিরাজ ১৫*, তাসকিন ৪, শফিউল ২, মুস্তাফিজ ১; মর্কেল ২/১৯, রাবাদা ৩/৩৩, অলিভিয়ের ০/১২, মহারাজ ৪/২৫, ফেলুকওয়ায়ো ০/০)

ফলাফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৩৩ রানে জয়ী

সিরিজ: দক্ষিণ আফ্রিকা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে

ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন ডিন এলগার।

/ কে আই