ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

‘চাপ প্রয়োগে প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানো নজিরবিহীন’

প্রকাশিত : ০১:১১ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:১৯ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৭ মঙ্গলবার

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এটা বিচার বিভাগের জন্য নজিরবিহীন ঘটনা।


মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে জয়নুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি এমন কী করেছেন যে, তিনি ছুটি নিয়ে চলে গেছেন। তার ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করা হয়েছে, যাতে তিনি ছুটি নিয়ে চলে যান। দেশ জানে, জাতি জানে, সারা পৃথিবী জানে, একটি রায়ের পর সরকার তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। যাতে তিনি পদত্যাগ করেন। তিনি ছুটিতে যাননি, ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, যেতে তাঁকে বাধ্য করা হয়েছে।


আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, আজ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আইনজীবী সমিতি যাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে ১৪ জন সদস্যের মধ্যে ১৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।


সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, গতকাল আমরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। জানতে চাইছিলাম কোনো চাপে, কোনো কারণে তিনি ছুটিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন কি না। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেন নাই। তিনি সকালে এসে দুপুর ১টার সময় ছুটির দরখাস্ত দিয়ে কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। অথচ তিনি এর আগে আমাদের চিঠি দিয়ে বলেছেন, আদালত খোলার দিন তিনি আমাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অতীতের রেকর্ড বলে, কোনো প্রধান বিচারপতি দাওয়াত দিয়ে এভাবে ছুটি নিয়ে চলে যান নাই। অথচ সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিম এভাবে দাওয়াত করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে তিনি হুইল চেয়ারে করে এসে আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।


বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশের পর থেকে মন্ত্রী-এমপিদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি। জাতীয় সংসদেও তাঁর সমালোচনা করা হয়। এর মধ্যেই গত ১০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি দেশের বাইরে ছুটিতে ছিলেন। ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফেরেন।


আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করব। আইনজীবীরা আজ আমাদের কাছে জানতে চান, তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে যাচ্ছেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে সাক্ষাৎ করা প্রয়োজন। আজ যদি মানুষ ছুটির কারণ জানতে না পারে, তাহলে জাতির জন্য সেটা দুঃখজনক হবে।


প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার এক মাসের ছুটির পর সোমবার দিবাগত রাতে বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের চলমান অবকাশকালীন ছুটির পর সৌজন্য সাক্ষাতের আয়োজন চলছে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে। সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবন প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
//এআর