মেডিকেল পরীক্ষা করাতে আপত্তি
হাজতে নির্ঘুম রাত কাটল হানিপ্রীতের
প্রকাশিত : ১১:৩৪ এএম, ৪ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার
ধর্ষণের মামলায় সাজা পাওয়া ভারতের হরিয়ানার স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিমের ‘দত্তক কন্যা’ হানিপ্রীত ৩৮ দিন পর গ্রেফতার হয়েছেন। মঙ্গলবার হরিয়ানা পুলিশ চণ্ডীগড় থেকে গ্রেফতারের পর হানিপ্রীতের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার রাতভর হাজতে থাকতে হয়েছে হনিপ্রীতের। হরিয়ানার সেক্টর ২৩ থানায় হনিপ্রীতকে জেরা করা হয় বলে জানা গেছে। থানায় হানিপ্রীতকে ডাল ও দুটো রুটি খেতে দেওয়া হয়। খাবার খেয়ে থানার একটি কামরায় বেশ কিছুক্ষণ একা ছিলেন তিনি। এরইমধ্যে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকদের একটি দল হাসপাতালে পৌঁছায়। কিন্তু ওই দলে কোনও নারী চিকিৎসক ছিলেন না। হানিপ্রীত মেডিক্যাল পরীক্ষা করতে রাজিও হননি।
সূত্রের খবর, জেরার সময় বেশ কয়েকবারই কেঁদে ফেলেন তিনি। উল্লেখ্য, সংবাদমাধ্যমে হনিপ্রীত দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। নিজেকে নির্দোষ বলেও জাবি করেছেন তিনি। হানিপ্রীতের দাবি, রাম রহিমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বাবা ও মেয়ের।
জানা গেছে, থানায় হনিপ্রীতকে গভীর রাত পর্যন্ত জেরা করা হয়। হনিপ্রীতের মুখ থেকে সত্যি কথা বের করার জন্য হরিয়ানা পুলিশ বিশেষ একটি দল গঠন করেছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন আইজি মমতা সিংহ।
পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, গত ৩৮ দিন কোথায় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন হানিপ্রীত। সেই সময় কোন কোন ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল।
ধর্ষণের মামলায় রাম রহিমের সাজা ঘোষণার দিন হিংসার ঘটনার ছক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুলিশ হানিপ্রীতকে জেরা করে। ২৫ অগস্ট জোড়া ধর্ষণ কাণ্ডে রাম রহিমের ২০ বছর কারাদণ্ড ঘোষণার দিন থেকেই ফেরার ছিলেন হানিপ্রীত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে বাবাকে নিয়ে পালানোর ছক কষেছিলেন। ৩৮ দিন ফেরার থাকার পর গতকাল টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায় তাঁকে।
হানিপ্রীত জানান, এখন আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করার কথা ভাবছেন। কিন্তু আর দেরি করেনি হরিয়ানা পুলিশ। তৎক্ষণাৎ বিশেষ দল গড়ে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। পুলিশের দাবি, সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হওয়ার ঘণ্টা ছয়েকের মধ্যেই চণ্ডীগড় জাতীয় সড়কের কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয় হানিপ্রীত ও তাঁর সঙ্গী এক মহিলাকে। আজ হানিপ্রীতকে আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পঞ্চকুলার পুলিশ কমিশনার এ এস চাওলা।
৩৬ বছরের হানিপ্রীতের আসল নাম প্রিয়াঙ্কা তানেজা। বিশ্বাস গুপ্ত নামে একজনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। স্বামী ছিলেন রাম রহিমের ভক্ত ও ডেরা সচ সউদার একনিষ্ঠ কর্মী। রাম রহিমের নজরে পড়তে প্রিয়াঙ্কার দেরি হয়নি। এরপর ক্রমে ক্রমে তিনি রাম রহিমের ঘনিষ্ঠতম হয়ে ওঠেন। নতুন নাম হয় হানিপ্রীত। রাম রহিমের তৈরি মোট ছয়টি সিনেমার তিনিই ছিলেন নায়িকা। বিশ্বাস গুপ্তর অভিযোগ, ডেরায় তিনি নিজে রাম রহিমের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কাকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখেছেন। রাম রহিমের চাপেই জোর করে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো হয়। এরপর থেকেই হানিপ্রীত স্বঘোষিত ধর্মগুরুর চব্বিশ ঘণ্টার সঙ্গী।
সূত্র : এনডিটিভি।
//এআর