ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

নিয়মিত রাত জাগায় ঝুঁকি বাড়ে ক্যান্সারের

প্রকাশিত : ০৪:১৭ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:৫০ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০১৭ শনিবার

আমাদের শরীরের ভিতরে একটি দেহ ঘড়ি আছে, যেটি  বায়োলজিক্যাল ক্লক নামে পরিচিত । একজন  মানুষের ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে শুতে যাওয়া পর্যন্ত  সব কিছু এর মধ্যে  নথিভুক্ত রয়েছে। অর্থাৎ শরীরকে কখন কোন কাজটা করতে হবে, তা মূলত এই বায়োলজিকাল ক্লকই নির্দেশ দিয়ে থাকে।

এখন কথা হলো, কেউ যদি রাতে ঘুমনোর সময়ে না ঘুমিয়ে অন্য কাজ করে, তাহলে বায়োলিজক্যাল ক্লক বুঝে উঠতে পারে না ।ফলে  শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এমনটা হওয়ার কারণেই  প্রথমেই অনিদ্রা রোগ  এবং সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে আরও সব জটিল রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হঠাৎ মৃত্যুর  আশঙ্কা বাড়ে। তাই তো বছর বছর বাড়ছে অকাল মৃত্যুহার।

সম্প্রতি বায়োলিজক্যাল ক্লকের উপর গবেষণা চালিয়ে তিন মার্কিন গবেষক নোবেল প্রাইজে ভূষিত হয়েছেন। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে বায়োলজিকাল ক্লককে মন মতো চালালে মারাত্মক বিপদ হয়! এক্ষেত্রে যে যে ঘটনাগুলি ঘটার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, সেগুলি হল...

১. ক্যান্সারে  আশঙ্কা বৃদ্ধি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টেই একথা প্রমাণিত হয়, দিনের পর দিন রাত জাগলে শরীরের অন্দরে ক্ষয় এত বেড়ে যায় যে সেই ফাঁক গলে ক্যান্সার সেল দেহের অন্দরে বাসা বাঁধার সুযোগ পেয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মরণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই এখন  থেকে বেশি রাত জাগার  আগে ভাবা উচিত ।

২. রোগ প্রতিরোধ  ক্ষমতা  হ্রাস পায়
গবেষণায় দেখা গেছে রাত জেগে কাজ করলে কর্টিজল হরমোনের মতো স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ মারাত্মক বেড়ে যায়। ফলে  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমে যায়। যার কারণে অল্প সময়ে নানাবিধ রোগ ঘাড়ে চেপে বসে। প্রসঙ্গত, স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পেলে মানসিক চাপও বাড়তে শুরু করে, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক।

৩. ওজন বাড়তে থাকে
দিনের পর দিন রাতে জেগে থাকলে খাবার ঠিক মতো হজম হতে পারে না। ফলে একদিকে যেমন গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, তেমনি ওজনও বাড়তে থাকে । আর ওজন বাড়লে ধীরে ধীরে সুগার, প্রেসার এবং কোলেস্টেরলের মতো মরণ রোগ  শরীরে এসে বাসা বাঁধে। ফলে আয়ু কমে যায়।

প্রিটার্ম ডেলিভারির আশঙ্কা বৃদ্ধি
শরীরের নিজস্ব ছন্দ হারালে দেহের ভিতরে এমন কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন হতে থাকে, যা সরাসরি প্রভাব পড়ে মা হওয়ার ক্ষেত্রে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে সব মেয়েরা নিয়মিত নাইট শিফট করেন তাদের মিসক্যারেজ এবং প্রিটার্ম ডেলিভারি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে কম ওজনের বাচ্চা জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই মা হওয়ার পরিকল্পনা করলে  রাত জেগে কাজ করা উচিত না ।

৫. মনোযোগ ও শরীরের সচলতা কমতে থাকে
সারাদিন যতই ঘুমোনো হোক না কেন, রাতে ঘুম আসতে বাধ্য। এমন পরিস্থিতিতে মনোযোগ যেমন হ্রাস পায়, তেমনি শরীরের সচলতাও কমতে শুরু করে। ফলে অফিসে চোট-আঘাত লাগার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

৬. ব্রেন পাওয়ার কমে যায়
রাতের বেলা মস্তিষ্কের আরাম নেওয়ার সময়। তাই তো দিনের পর দিন রাত জেগে  কাজ করলে ধীরে ধীরে ব্রেন পাওয়ার কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ডিপ্রেশন, হাইপোলার ডিজঅর্ডার, স্লো কগনিটিভ ফাংশন, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া সহ আরও সব সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

 সূত্র : বোল্ডস্কাই।

//এআর