মোনালিসার ৭টি অজানা তথ্য
প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৬:৩৫ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৭ সোমবার
মোনালিসা নাম জুড়েই যেন হাঁসি। তবে সে হাঁসি সাধারণ হাঁসি নয়, সে যেন এক রহস্যময় ভূবন জুড়ানো হাঁসি। মনকাড়া এ হাসির জন্য কয়েক শতাব্দী ধরে সারা দুনিয়ায় আলোচনার বিষয় ‘মোনালিসা’৷ বহু শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সঙ্গীতশিল্পী এবং লেখককে অনুপ্রেরণা জোগায় এই শিল্পকর্ম৷ মোনালিসার ৫০০ বছরের ইতিহাস এখনও মানুষকে আবিষ্ট করে৷ সেই ভূবন জুড়ানো হাঁসির মোনালিসার ৭টি তথ্যই হয়তো আপনি জানেন না।
১. নানা জল্পনা-কল্পনা: ১৬ শতকের শুরুতে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি যার ছবি আঁকেন তা নিয়ে নানান ধরনের জল্পনা-কল্পনা ছিল৷ অনেকে বলতেন, নারী ও পুরুষ- উভয়েই ওই ছবির মডেল হয়েছিলেন৷ তবে আরও ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ব্যাখ্যা মতে, মোনালিসা আসলে ফ্লোরেনটাইনের এক রেশম ব্যবসায়ীর স্ত্রী লিসা দেল জিওকোন্ডো৷
২. বিখ্যাত অনুরক্তরা: ১৫১৯ সালে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মৃত্যুর পর ফরাসি রাজাদের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছবিটি রাখা হয়৷ ফরাসি বিপ্লবের পর নেপোলিয়ন বোনাপার্টের শোবার ঘরে জায়গা হয় মোনালিসার৷ ১৮১৫ সালে জনসাধারণের দেখার জন্য এই চিত্রকর্ম রাখা হয় প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়ামে৷
৩. মোনালিসার জুড়ি: যমজ মোনালিসার দেখা মেলে মাদ্রিদের মিউজিও ডেল প্রাডোতে৷ ২০১২ সালে জানা যায় যে এই ছবিটি মূল ছবির সময়েই আঁকা হয়েছিল৷ দুটি ছবি একই ইতালীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ও ল্যাণ্ডস্কেপে করা৷ দ্বিতীয় ছবিটি সম্ভবত ভিঞ্চির এক ছাত্র ফ্রান্সিসকো মেলজির আঁকা৷
৪. অদৃশ্য কাজ: হারিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ‘মোনালিসা’ কিন্তু সেই অর্থে বিখ্যাত কোনো শিল্পকর্ম ছিল না৷ নিজের দেশে ফেরত নিয়ে যাবার আশায় এক ইতালীয় ১৯১১ সালে প্যারিসের ল্যুভর থেকে ছবিটি চুরি করে৷ ওই ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়ার আগে প্রায় দুই বছর ছবিটির কোনো হদিস ছিল না৷ তারপর ছবিটি আবারও ল্যুভরে ফিরে আসে৷
৫. আক্রমণের লক্ষ্য: মোনালিসাকে নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করে থাকেন, যার সবই কিন্তু ইতিবাচক নয়৷ ১৯৫৬ সালে এই ছবির ওপর ভাঙচুরের দুটি ঘটনা ঘটে৷ একজন তো ছবিটির ওপর অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে৷ ফলে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় চিত্রকর্মটি৷ এরপর এক বলিভিয়ান পর্যটক এর ওপর পাথর ছোঁড়ে৷ তারপর থেকে, মোনালিসাকে বুলেটপ্রুফ কাঁচের ভেতরে সুরক্ষিত রাখা হয়৷
৭. রহস্যের পেছনে ‘স্ফুম্যাটো`র প্রভাব: অগণিত বিজ্ঞানী ও ইতিহাসবিদ এই শিল্পকর্মের বিশ্লেষণ করেছেন৷ পেয়েছেন বিস্ময়কর সব তথ্য৷ ২০০৮ সালে, মোনালিসার হেঁয়ালিপূর্ণ হাসির রহস্য ভেদ করা হয়৷ ছবি আঁকার একটি কৌশলের নাম ‘স্ফুম্যাটো’৷ ভিঞ্চি ঝাপসা এক ধরণের এফেক্ট তৈরি করতে রংয়ের পাতলা অনেকগুলো স্তর তৈরি করতেন৷ এর ফলেই ছবিতে সৃষ্টি হতো এক ধরনের রহস্যময়তা৷
৭. এক দীর্ঘ ইতিহাস: শিল্পের ইতিহাসে ‘মোনালিসা’ কেবল প্রশংসাই লাভ করেনি, বরং অগণিত শিল্পীকে বৈচিত্রপূর্ণ কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছে৷ বিংশ শতাব্দীর এই মিডিয়া আইকনকে সাহিত্য, সঙ্গীত, বিজ্ঞাপন সবকিছুতেই পাওয়া যায়৷ বব ডিলান একবার বলেছিলেন, মোনালিসার অবশ্যই হাইওয়ে ব্লুজ আছে৷ ওর হাসি দেখেই তা বলে দেয়া যায়৷ ডয়েচে ভেলে।
আরকে/ডব্লিউএন