ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ইটিভি অনলাইনকে শিমু

দর্শকদের ভালোবাসা-ই সবচে বড়

প্রকাশিত : ০৩:০৩ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ১০:৩২ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৭ মঙ্গলবার

মুখে মুক্তোমাখা হাসি। মিষ্টি কথা আর বৈচিত্রময় অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মনে জায়গা পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন এরইমধ্যে। এ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় মুখ তিনি। নড়াইলের বিখ্যাত চিত্রা নদীর পাশে কেটেছে যার শৈশব। বলছি শিক্ষিত ও মার্জিত স্বভাবের সুমাইয়া শিমুর কথা। অভিনয়ে দেড় যুগেরও বেশি সময় দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় নাটক। একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইনের একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে শিমুর ভালোলাগা, শৈশব ও বর্তমান। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ

একুশে টেলিভিশন  অনলাইন: আপু কেমন আছেন?

সুমাইয়া শিমু : জি অনেক ভালো আছি।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: বিয়ের পর কিছুদিন বিরতি নিয়েছিলেনতখন দর্শক আপনাকে মিস করেছেকেনো এই বিরতি?

সুমাইয়া শিমু : হ্যাঁ। কিছুদিন বিরতি নিয়েছিলাম। তবে শুধু বিয়ে বা সংসারের জন্য নয়; ওই সময়টাতে বেশ কিছু কারণে আমাকে অভিনয় থেকে দূরে থাকতে হয়েছে। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার ও রাজনীতিবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেছি। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাট্যকলা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী নিয়েছি। ওই সময়টাতে আমার থিসিস লেখা, জমা দেওয়া নিয়ে অনেকটা সময় দিতে হয়েছে। তাছাড়া একই সময়ে আমার বাবা অনেক অসুস্থ ছিলন। তখন বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া আসা, পরিবারকে সময় দেওয়া-সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় কেটেছে। এরপর বাবা চলে গেলেন। সেই সময় মাকে সময় দিতে হয়েছে।

একই সঙ্গে নতুন সংসার, নতুন মানুষ, নতুন আত্মীয় স্বজন সব কিছু মিলিয়ে তাদেরকে বুঝে উঠতে কিছুটা সময় নিতে হয়েছে। দর্শক, নির্মাতারা এসময়টাতে অনেকটা অভিমানই করেছিলেন আমার উপর। কিন্তু সবারতো একটা ব্যক্তিগত জীবন থাকে। তাই কিছুটা বিরোতি নিয়েছি। তবে সবার ভালোবাসা ছিলো বলে আমি আবারও ফিরে এসেছি।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনি তো নাট্যকলা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী নিয়েছেনঅভিনয় ছাড়া অন্য কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

সুমাইয়া শিমু : ঠিক এ মুহুর্তে অন্য কিছু ভাবছি না। অভিনয়টায় ভালো করে করতে চাই। 

একুশে টেলিভিশন অনলাইন : বর্তমানে কি কি কাজ করছেন?

সুমাইয়া শিমু : ঈদের সময় কিছু একক নাটক, টেলিফিল্ম করেছি। ঈদের পরেও বেশ কিছু কাজ করেছি। তবে ধারাবাহিক বা সিরিয়ালে বেশি কাজ করা হয়নি। আশা করি খুব শিগগিরই নতুন কিছু কাজ করব। সেভাবেই কথা হচ্ছে। গল্প দেখছি। সব কিছু মিলে গেলে নতুন করে ধারাবাহিকে কাজ করবো।  

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনি একক নাটক, টেলিফিল্ম ধারাবাহিকের মধ্যে কোনটাতে অভিনয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন?

সুমাইয়া শিমু : আসলে আমি সবগুলোতেই আনন্দ পাই। বেছে বেছে কাজ করি। গল্প ও চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে তুলে ধরতে ভালো লাগে। একক নাটক বা টেলিফিল্ম দর্শক পছন্দ করে। তবে ধারাবাহিক বা সিরিয়ালে দীর্ঘ সময় ধরে একটা চরিত্র নিয়ে কাজ করতে হয়। এসময় দেখা যায় চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে নিতে হয়। দর্শকও তখন একটি চরিত্রের সঙ্গে অভিনেত্রীকে দেখে।

আসলে ধারাবাহিকগুলো এমন হয় যে, গল্প, নির্মাণ কৌশল, নির্মাতার ভাবনা ও উপস্থাপনা যদি ঠিকঠাক মিলে যায় তবে রসায়নটা বেশ ভালো হয়। মোট কথা আমি সবগুলোতেই কাজ করি এবং করতে চাই।

একুশে টেলিভিশন : আপনার অভিনিত অনেক নাটকই আছে জনপ্রিয়এর মধ্যে কোন নাটকটি আপনার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে?

সুমাইয়া শিমু : আসলে এভাবে ভাবিনি। পছন্দ সবগুলোই। কারণ আমি চেষ্টা করি আমার সবটুকু দিয়ে অভিনয় করতে। আলাদা করে বলা খুব কঠিন। তবে আমার অনেক নাটক আছে যেগুলো দর্শকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। যেমন ধরুন- বিহাইন্ড দ্য সিন, ইডিয়ট, মন কাঁদে, মিস্টার এন্ড মিসের সরকার, হ্যালো, আনন্দ, সাদা গোলাপ, শিউলি অথবা রক্তজবার গল্প, লেক ড্রাইভ লেন, স্বপ্নচূড়া, ‘মনোবাসিতাল’ ‘মধুরা’ ‘ললিতা’ অন্যতম। অধিকাংশ নাটকই দর্শকের পছন্দ হয়েছে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন : আপনাকে ছোট পর্দায় দর্শক বেশি চেনেছোটপর্দার অনেকেই আছেন যারা বড় পর্দায় কাজ করছেন। আপনারও আগ্রহ আছে কি?

সুমাইয়া শিমু : আমি ছোট পর্দায় কাজ করেই জনপ্রিয়তা পেয়েছি। দর্শকও আমাকে অনেক ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। বড় পর্দার জন্য খুই আকাঙ্ক্ষা নেই। তবে কখনও যদি সুযোগ চলে আসে বা ব্যাটে বলে হয়ে যায় তবে অভিনয় করতে পারি।

 একুশে টেলিভিশন : আপনার শৈশব কেটেছে নড়াইলেশৈশব নিয়ে কিছু বলেন

সুমাইয়া শিমু : আসলে শৈশব নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে (হাঁসি দিয়ে বলেন)। এর মধ্যে একটা স্মৃতি আমার খুব মনে পড়ে। ভাবলে অনেক ভালোও লাগে। বিখ্যাত শিল্পী এস এম সুলতান, ক্রিকেটার মাশরাফির দেশ নড়াইলে একটি বিখ্যাত নদী রয়েছে ‘চিত্র’। আমাদের বাড়ি থেকে মাত্র ৩-৪ মিনিটের দূরত্ব। আমার মনে আছে, দাদু আমাকে সেই নদীতে গোসল করতে নিয়ে যেতো। আমাকে সাঁতার শিখিয়েছে দাদু। চিত্রা নদী আমার কাছে অনেক আবেগের জায়গা। দাদুর কাছেই আমার সাঁতার শেখা। সেই স্মৃতি মনে পড়লে ভালো লাগে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: ব্যাক্তি শিমু অনেক সুন্দরী। অভিনয় অনেক চমৎকার। দর্শকও আপনাকে তাদের হৃদয়ে স্থান দিয়েছেন পছন্দের তালিকায়। দর্শকদের জন্য কিছু বলবেন?

সুমাইয়া শিমু : দর্শকই আমার প্রাণ। তাদের ভালোবাসা আছে বলেই আমি কাজ করার প্রেরণা পাই। দর্শকদের ভালোবাসার জন্যই আসলে কাজ করা। হয়তো আমি যদি অন্য পেশা বা অন্য কোন কিছুর সঙ্গে যুক্ত থাকতাম তবে আমার অনেক টাকা বা সম্পদ হতে পারতো। কিন্তু অভিনয়ে এসে আমি দর্শকদের যে ভালোবাসা পেয়েছি তা অনেক বড় কিছু।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন : আপু একুশে টেলিভিশন অনলাইনের পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইলো।

সুমাইয়া শিমু : একুশে টেলিভিশনকেও অনেক ধন্যবাদ। অনলাইনের সব পাঠকদের প্রতি অনেক ভালোবাসা। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।  

//এস এ // এআর