জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ক্যামেরায় বিরক্ত পরীমনি
সোহাগ আশরাফ
প্রকাশিত : ০১:১৩ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার
কথা ছিলো ৭টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে। সেভাবেই নিমন্ত্রণ করা হয় সবাইকে। ঘড়ির কাটা যখন ৭টা, তখন থেকেই অতিথিরা আসতে শুরু করেন। বিশেষ করে সাংবাদিকরা। সময় যতো বাড়তে থাকে ফুল হাতে আসতে থাকেন পরিচালক, সাংবাদিক, তারকা সহ কাছের আত্মীয় স্বজন। আগত অতিথিদের সব রকম চেষ্টা ছিলো সাদা-নীল পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে তবেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া। সন্ধ্যার পর থেকে যারা অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেছেন তাদের প্রত্যেককেই দেখা গেছে তেমন সাজে। যতটুকু সম্ভব নীল-সাদা ম্যাচ করার চেষ্টা যেনো অতিথিদের অনেক বিপদেই ফেলে দিয়েছিলো। কারণ আগে থেকেই ‘ড্রেস কোড’ বেধে দেওয়া হয়েছিলো। বলছি হালের আলোচিত নায়িকা পরীমনির জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা।
সাদা বেলুন, সাদা বাতি, হালকা নীল সাদা ফুলের সাজে সজ্জিত স্টেজ। অপেক্ষা পরীর। কখন পরী আসবেন সেই প্রতিক্ষা সবার। সাংবাদিকরা এসেছেন সাদা নীল ফুলের ডালি হাতে। জন্মদিনে পছন্দের নায়িকার নেমন্ত্রণ বলে কথা। সবার মনে নীল পরীর স্বপ্ন। পরী আসবেন। সবার সঙ্গে কথা বলবেন। শুভেচ্ছা বিনিময় হবে। ক্যামেরায় বন্দি হবে আনন্দময় মুহূর্তগুলো। ইচ্ছেটা সবার এমনই।
কিন্তু সময় যায় অতিথিদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। পরীর দেখা নাই। এর মধ্যে হঠাৎ নামে বৃষ্টি। পুরো বনানী এলাকা ভিজে গেছে ঝুম বৃষ্টির পানিতে। আগত অতিথিরাও জমে ঠান্ডা হয়ে গেছেন পরীর অপেক্ষায়। অতিথিদের কেউ কেউ সেলফি তোলায় ব্যস্ত পরীর স্টেজে।
ঘড়ির কাটা ৭টা থেকে পৌছে গেলো সাড়ে ৯টায়। সবার একই প্রশ্ন পরী কোথায়! হঠাৎ খবর এলো পরী আসছেন কিছু সময়ের মধ্যেই। কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ ঘোষণা। সুঠাম দেহের একজন যুবক দরাজ কণ্ঠে বলে উঠলেন- ‘সাংবাদিক কে কে আছেন কাছে আসেন। আপনারা আপনাদের ক্যামেরা ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলেন। পরী আপু নিজে ফোন করে বলেছেন, কোন ক্যামেরা থাকতে পারবে না। কেউ মোবাইল দিয়েও ছবি তুলতে পারবে না। সবাইকে বলছি আপনারা কেউ ছবি তুলবেন না। টেলিভিশন থেকে যারা এসেছেন তারাও কেউ ভিডিও করতে পারবেন না। পরী আপুর নিজের ক্যামেরাম্যান আছে তারাই শুধু ছবি তুলবে। আর কেউ নয়। আগে থেকেই কিন্তু সাবধান করেদিলাম।’
ঘোষণা শুনে হতবাক সবাই। এতো সময় ক্যামেরাম্যানেরা যে প্রস্ততি নিলেন, তা ভেস্তে গেলো। সবার মন খারাপ। তারপরও কেউ কেউ মনে করেছে যে হয়তোবা পরী আসলে তোলা যাবে। কিন্তু না; পরী আসলেন সাড়ে ৯টার পরে (নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘন্টা পর)। পরী এসেছেন নীল ড্রেস পড়ে। সাংবাদিকরা ক্যামেরা হাতে নিতেই পরী যেনো তেলেবেগুণে জ্বলে উঠলেন। সোজা চলে গেলেন ভেতরে। কিছু সময় পর আবার আসলেন। সুঠাম দেহের ছেলেটি উচ্চ স্বরে বলতে লাগলো আপু কিন্তু ক্যামেরাতে খুব বিরক্ত হচ্ছেন। কেউ ক্যামেরা অন করবেন না।
পরী স্টেজে উঠলেন। কেউ ফুল দিচ্ছেন না। সবাই স্তব্ধ। পরী হাসছেন। তবে যেহেতু জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে সবার আগমন তাই মনের মধ্যে কষ্ট চাপা দিয়ে পরীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন সবাই। সাংবাদিকরাও ফুল দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানালেন। আসলেন পরীর বয়ফ্রেন্ড। নিজের পছন্দের লোকদের নিয়ে সেলফি কিন্তু তুলছেন পরী। শুধু সাংবাদিকদের ক্যামেরায় বিরক্ত তিনি। ১০টার অনেক পরে কেক কাটা হলো। এরই মধ্যে কেউ কেউ চলে গেছেন অভিমান নিয়ে।
কেক কাটা শেষে রাতের নৈশ ভোজ। তারপর ডিজে। এভাবেই চলে অনেক রাত পর্যন্ত আয়োজন।
তবে কেনো এই বারণ বলতে নারাজ পরীমনির লোকজন।
এসএ/ এআর