আয়ুবর্ধক ৮ আয়ুর্বেদিক উপাদান
প্রকাশিত : ০১:৪৬ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার
দীর্ঘজীবী হতে কে না চায়? কিন্তু এতে বাধা দেয় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা। হাতে ব্যাথা, পায়ে ব্যাথা, মাথায় ব্যাথা থেকে শুরু করে চোখের সমস্যা, হার্টের সমস্যা আরও কত কত কি সমস্যা। বর্তমানে যে কোন বয়সে যে কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে । এর পেছনে মূল কারণ আমাদের অতি আধুনিক খাদ্যাভ্যাস ,জীবনধারা এবং পরিবেশের নানা ঝুঁকি।
তবে, নানা রকম শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে আমাদের পরিবেশের ওপর ভরসা করতেই হবে। আর ঠিক এই কারণেই আমাদের বেশ কিছু পুরনো পদ্ধতি নিয়মিত মেনে চলতে হবে। যার মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনকে ভালোভাবে উপভোগ করতে পারব। এক্ষেত্রে আমাদের প্রতিদিনের খাবারে বেশ কিছু আয়ুর্বেদিক উপাদান রাখতে পারি।
আমলকী
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আমলকী একটি অতি পরিচিত নাম। বহু প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষে আমলকী ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, আমলকী আমাদের শরীরে তিনটি দোষ, অর্থাৎ বায়ু, পিত্ত এবং কফের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আমলকীর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি উপস্থিত থাকে। যার ফলে নানারকম রোগ এবং জীবাণুর হাত থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। এছাড়াও আমলকীর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে অকাল বার্ধক্যের সমস্যা দূর হয়।
আদা
আদার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকে। মনে করা হয় যে, আদাতে প্রায় ২৫ ধরণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি নানারকম রোগ নির্মূল করতে সাহায্য করে। এছাড়াও হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাড়ের সমস্যা এবং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারে।
এলাচ
চিনে এলাচ চায়ের বেশ কদর। কারণ ওই দেশে বিশ্বাস করা হয় যে, এলাচ চা পান করলে দীর্ঘজীবী হওয়া যায়। আদতে, এলাচ আমাদের শরীরের ভিতর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বেড়িয়ে যেতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রসঙ্গত, এলাচের মধ্যে এক ধরণের তেল থাকে, যা আমাদের হজিম শক্তি বাড়িয়ে তোলে, রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে, রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং এনার্জি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
জোয়ান
জোয়ান হৃদযন্ত্রের জন্য দারুণ উপকারি। কারণ জয়ানের মধ্যে নিয়াসিন এবং থাইমল উপস্থিত থাকে, যা হৃদয় সুস্থ রাখে। এছাড়াও জোয়ান খুবই উপকারি একটি অ্যান্টিবায়োটিক।
মৌরি
পেটের যেকোনো সমস্যা দূর করতে মৌরি দারুণ কাজে দেয়। মৌরিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফাইবার থাকে। সেই সঙ্গে এই প্রকৃতিক উপাদানটি পাচকরস তৈরি হতে সাহায্য করে এবং স্নায়ুকে ঠিক মতো কাজ করতে সাহায্য করে। বলা হয় যে মৌরি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে, সেই পানি সকালে পান করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সারাদিন খুব ভাল ভাবে থাকা যায়।
লবঙ্গ
লবঙ্গ হাজারো গুনে সমৃদ্ধ। যেমন এর মধ্যে জীবাণুনাশক, ছত্রাকনাশক, অ্যালার্জি নিরোধক এবং ক্ষতস্থান সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে। সেই কারণেই তো দৈনন্দিন জীবনে লবঙ্গের ব্যবহার খুবই অপরিহার্য। লবঙ্গের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রেক কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
গোলমরিচ
যেকোনো রান্নাতেই এই মশলাটির ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র রান্নায় মশলা হিসাবে নয়, গোলমরিচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভেষজ গুণ ও খনিজ গুণ রয়েছে। গোলমরিচের আরও একটি গুণ আছে, এটি হলুদের সঙ্গে মিশে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে হলুদ মেশানো দুধে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও গোলমরিচ হজম প্রক্রিয়া দৃঢ় করতে সাহায্য করে।
মধু
মধুর গুণ নিয়ে আলাদা কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। রূপচর্চা থেকে শুরু করে শরীরের যত্ন, সবকিছুতেই দশে দশ দেওয়া যায় মধুকে। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন মধু খাওায়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন।
সূত্র:বোল্ড স্কাই
এম / এআর