ইটিভি অনলাইনকে চঞ্চল
মিসির আলীকে আমার মধ্যে খুঁজে পাবে দর্শক
প্রকাশিত : ০৫:৫৭ পিএম, ২ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৬:১৯ পিএম, ২ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার
‘বোঝো নাই ব্যাপারটা’- সংলাপটি এখনও মানুষের মুখে মুখে। বাংলাদেশের দর্শকদের ফের সিনেমামুখী করা আলোচিত চলচ্চিত্র ‘আয়নাবাজি’র সংলাপ এটি। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। নানামুখী অভিনয় দিয়ে ছোট পর্দায় তিনি যেমন দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন, ঠিক তেমনি বড় পর্দায়ও অভিনয়গুণে নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
‘মনপুরা’, ‘মনের মানুষ’, ‘টেলিভিশন’, ‘আয়নাবাজি’র মত সাড়া জাগানো সিনেমা চঞ্চলকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। যেকোনো চরিত্র গায়ে মেখে চঞ্চল বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি একজন জাত অভিনেতা। মঞ্চ নাটক থেকে উঠে আসা চঞ্চলের অভিনয়টা যে স্বভাবজাত, সেটা এতোদিনে কারো বুঝতে কি আর বাকি আছে?
নতুন খবর হচ্ছে কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস অবলম্বনে নতুন একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। আর সেই চলচ্চিত্রে আলোচিত ‘মিসির আলী’চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। মিসির আলী আরও একটি চমক হয়ে আসছে দর্শকদের কাছে-একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এমনটিই ইঙ্গিত দিয়েছেন চঞ্চল। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ
ইটিভি অনলাইন : ভাই কেমন আছেন?
চঞ্চল চৌধুরী : ভালো আছি।
ইটিভি অনলাইন : আপনি তো সম্প্রতি নতুন সিনেমা ‘দেবী’ তে কাজ করেছেন। সিনেমাটি নিয়ে কিছু বলুন?
চঞ্চল চৌধুরী : সিনেমাটি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। যেখানে আমি ‘মিসির আলী’চরিত্রে অভিনয় করেছি। এর আগেও অনেকে এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নতুন করে আমিও করলাম। অনেক ভালো একটা কাজ হয়েছে। এটি পরিচালনা করেছেন অনম বিশ্বাস। তিনি অনেক যত্ন করে কাজটি করেছেন। আশা করি দর্শক ভালো কিছু দেখতে পাবে।
ইটিভি অনলাইন : ‘মনপুরা’, ‘মনের মানুষ’, ‘টেলিভিশন’, ‘আয়নাবাজি’ আপনার অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। চলচ্চিত্রগুলোতে দর্শক আপনাকে দেখেছে আলাদা আলাদা চরিত্রে। ‘মিসির আলী’ বহুল পঠিত একটি উপন্যাসের চরিত্র। এটি নিয়ে কতটা আশাবাদী আপনি?
চঞ্চল চৌধুরী : অবশ্যই আশাবাদী। আমি সব সময়ই চেষ্টা করি চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে। অনেক পরিশ্রম করে চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়েছে। এককথায় মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করাটা আমার জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। সেটি দুটো কারণে-এক হলো ‘আয়নাবাজি’র পর দর্শকদের একটা এক্সপেকটেশনের (প্রত্যাশা) চাপ ছিল।
আর দ্বিতীয়টা হলো-মিসির আলী বহুল পঠিত একটা উপন্যাসের চরিত্র। যারা হুমায়ূন আহমেদের মিসির আলী পড়েছে কিংবা সংশ্লিষ্ট বিষয় জানেন, তাদের মধ্যে একটা মিসির আলী বাস করেন। সেটি মাথায় রেখে কাজটি করতে হয়েছে।
ইটিভি অনলাইন : উপন্যাসের মিসির আলীর সঙ্গে পর্দার মিসির আলীর কোনো পার্থক্য আছে কি?
চঞ্চল চৌধুরী : পার্থক্য তো কিছুটা থাকবেই। লেখকের কল্পনার সঙ্গে নির্মাতার কল্পনা এক হওয়া কঠিন। তবে দুটো বিষয়কে সমন্বয় করেই নির্মাতা একটা যোগসূত্র তৈরি করে দেন। এরপর নতুন একটা কিছু তৈরি হয়।
ইটিভি অনলাইন : আপনি উপন্যাসটি কতবার পড়েছেন?
চঞ্চল চৌধুরী : যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতাম তখনই পড়েছি। তবে এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে ভালোকরে বোঝার চেষ্টা করেছি।
ইটিভি অনলাইন : সিনেমাটির কোনো উল্লেখ্যযোগ্য দৃশ্যের কথা কি বলবেন, যা দর্শকদের হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখার জন্য অনুপ্রাণিত করবে?
চঞ্চল চৌধুরী : ওইভাবে তো বলা ঠিক হবে না। তবে ভালো কিছু একটা হয়েছে। চমক থাকছে। এমন গেটআপে কেউ কখনও আমাকে দেখেনি। যখন ফার্স্টলুক কিংবা প্রমোশনাল বিষয়গুলো দেখানো হবে তখন বোঝা যাবে। চলচ্চিত্রটির শুরুতেই মিসির আলীর যে অ্যাপিয়ারেন্সটা আছে সেটিই দর্শকদের চমকে দেওয়ার মতো। দর্শকরা সিনেমাটি দেখার পর যাতে বলতে পারেন- একজন শিল্পী কাজটি কষ্ট করে করেছেন।
ইটিভি অনলাইন : আপনি কি হুমায়ুন স্যারের কোনো নাটকে এর আগে কাজ করেছেন?
চঞ্চল চৌধুরী : হ্যাঁ করেছি। ‘কালা কইতর’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করা হয়েছে।
ইটিভি অনলাইন : হুমায়ূন আহমেদের নাটক, সিনেমা মানেই ভিন্ন ধারার একটা স্বাদ। ‘দেবী’তে কি দর্শক সেই স্বাদ পাবে?
চঞ্চল চৌধুরী : অবশ্যই। যেহেতু ‘দেবী’ হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত, তাই নির্মাতাও চেষ্টা করেছেন তার ধারাটিকেই উপস্থাপন করতে। আশা রাখি দর্শক মিসির আলীকে আমার মধ্যে খুঁজে পাবে।
ইটিভি অনলাইন : ‘দেবী’ পরিচালনা করেছেন অনম বিশ্বাস। ছবিটি দিয়েই চলচ্চিত্রে অভিষেক হতে যাচ্ছে তার। অনম বিশ্বাসের সিনেমায় কাজ করে আপনার কেমন লেগেছে? তার কাজের ধরণটা কেমন?
চঞ্চল চৌধুরী : অনম বিশ্বাস গুণী নির্মাতা। চলচ্চিত্রে অভিষেক হলেও তিনি যে কাজটি করেন যত্ন নিয়েই করেন। ‘দেবী’ দেখলেই দর্শক তা বুঝতে পারবে।
ইটিভি অনলাইন : আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
চঞ্চল চৌধুরী : আপনাকেও ধন্যবাদ। ইটিভি অনলাইনের প্রতি শুভ কামনা।
এসএ/এআর /