ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৩ ১৪৩১

প্রাণনাশের শঙ্কায় লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ!

প্রকাশিত : ১০:২৬ পিএম, ৪ নভেম্বর ২০১৭ শনিবার

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরি ‘প্রাণভয়ে’ পদত্যাগ করেছেন। টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক বক্তব্যে আজ শনিবার তিনি বলেছেন, তাঁকে হত্যা করা হতে পারে এই ভয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

সাদ আল-হারিরির বাবা রফিক আল-হারিরি লেবাননের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৫ সালে এক হামলায় তিনি নিহত হন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাদ আল-হারিরির আকস্মিক পদত্যাগে লেবাননের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন করে টালমাটাল হয়ে পড়তে পারে।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে দেয়া এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শহীদ রফিক আল-হারিরির হত্যাকাণ্ডের সময় যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, এখন আমরা ঠিক সেই পরিস্থিতিতে বাস করছি। আমি বুঝতে পারছি, আমাকে হত্যার জন্য কোন ধরনের ছক তৈরি করা হচ্ছে।`

ভাষণে ইরান ও লেবাননে তাদের মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সমালোচনা করে সাদ আল-হারিরি বলেন, “লেবাননসহ কয়েকটি দেশে ইরান ‘ভয় ও ধ্বংসের’ বীজ বপন করেছে। ইরান দিন দিন আরব বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের প্রভাব হারাচ্ছে। লেবানন নিজেদের হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরে পাবে, আমাদের দিকে অন্যায়ভাবে কেউ হাত বাড়াতে চাইলে ওই হাত কেটে ফেলা হবে।”

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, লেবাননে শিয়াপন্থী সংগঠন হিজবুল্লাহ সক্রিয় রয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

গত বছরের নভেম্বর মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝতার ভিত্তিতে সাদ আল-হারিরি প্রধানমন্ত্রী এবং হিজবুল্লাহ মিত্র মিশেল আউন দেশটির প্রেসিডেন্ট হন। এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মেয়াদেও তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

আউনের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাদ আল-হারিরি টেলিফোনে তার পদত্যাগের কথা প্রেসিডেন্ট আউনকে জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট তার দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। তিনি দেশে ফিরলে তার পদত্যাগের কারণ খতিয়ে দেখা হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত সপ্তাহে দুইবার সৌদিআরব সফর করেন আল-হারিরি। সেখানে তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈরুত ভিত্তিক আল-জাদীদ টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, সাদ আল-হারিরির পদত্যাগ সংক্রান্ত বিবৃতি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ধারণ এবং সেখান থেকে সম্প্রচার করা হয়েছে।

গত বছর প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়ার পর দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাদ আল-হারিরি। তবে শুরু থেকেই তাঁর নেতৃত্বের বিরোধিতা করে আসছে ইরান। অন্যদিকে সাদের পক্ষে আছে সৌদি আরব। তবে রিয়াদ থেকে তাঁর পদ্যত্যাগের ঘোষণা বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।

কেআই/ডব্লিউএন