হাসকেল লাইব্রেরি
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সেতুবন্ধ
প্রকাশিত : ০১:৪১ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ১০:৩৫ এএম, ২১ নভেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা পাশাপাশি দুটি দেশ । তাদের নাগরিকদের পরিচয়-তারা হয় কানাডিয়ান নয় আমেরিকান। সীমান্ত নিয়ে দুটি দেশের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। তবে একটি জায়গায় দু’দেশের নাগরিকদের বেশ মিল। ওই ইস্যূতে তারা কেউ কানাডিয়ানও নয় আবার আমেরিকানও নয়। এমন একটি আশ্চর্য্জনক জায়গা হলো যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সীমান্তে অবস্থিত হাসকেল লাইব্রেরি।
লাইব্রেরিটি যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্ট ও কানাডার কিউবি সীমান্তে অবস্থিত। শুধু তাই নয় এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্টের ডার্বি লাইনকে কিউবির স্ট্যান্ডস্টেড থেকে পৃথক করেছে। সবচে’ আশ্চর্যের বিষয় হলো- লাইব্রেরিটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে এর কোনো অংশ যুক্তরাষ্ট্র অংশে পড়লে আরেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে কানাডা ভূখণ্ডে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে মিলনের এমন চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, লাইব্রেরিটির সামনের দরজা, বুলেটিন বোর্ড এবং শিশুদের জন্য রাখা বইগুলো পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভূখণ্ডে। আবার পড়ার রুম ও অন্যান্য বইগুলো রয়েছে কানাডা ভূখণ্ডে।
এদিকে দর্শকদের বেশি চমকে দিচ্ছে, বইয়ের সংগ্রহগুলো। বইয়ের সংগ্রহগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স ও কানাডার ইতিহাসকেন্দ্রিক বই । লাইব্রেরিতে প্রথম দরজা দিয়ে ঢোকার সময় যুক্তরাষ্ট্র অংশ দেখা যায় । তবে লাইব্রেরিতে ঢুকেই দেখা যাবে, ফ্রান্স ও কানাডার ইতিহাস কেন্দ্রিক বইয়ের বিশাল সমাহার, এতে মনে প্রশ্ন জাগে যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরিতে কানাডা-ফ্রান্সের বই এর সংগ্রহ কেন ?
এদিকে লাইব্রেরির ঠিক মাঝ-বরাবর আড়াআড়িভাবে কালো ট্যাপে মাড়ানো একটি লাইন আছে । এই লাইনটিই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা পরষ্পরকে পৃথক করেছে। কথিত আছে, এই লাইনটি কেউ পার হতে পারে না । না কানাডিয়ানরা, না আমেরিকানরা।
তবে সম্প্রতি বিবিসির কাছে লাইব্রেরিটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছেন এমন কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি সত্য নয়। লাইব্রেরিতে আসেন, এমন সবাই লাইব্রেরিটির সব জায়গায় যেতে পারেন।
অন্যদিকে লাইব্রেরিটির মধ্যে রয়েছে সুবিশাল একটি কনফারেন্স রুম। কনফারেন্স রুমের স্টেজটি পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র অংশে আবার বেশিরভাগ আসন পড়েছে কানাডা অংশে। বিচিত্র সব আয়োজনে সম্পন্ন করা হয়েছে এই লাইব্রেরিটির কার্যক্রম।
লাইব্রেরির তত্বাবধায়ক কানাডার হল নিউম্যান বলেন, এখানে আসা লোকজনকে কেউ কানাডিয়ান বা আমেরিকান বলতে পারেন না । তারা বন্ধু । একটি রেখা আমাদের আলাদা করতে পারে না, এই রেখাটি আমাদের মনের মধ্যে নেই।
লাইব্রেরির পরিচালক ন্যান্সি রুমারি বলেন, উভয়দেশের মধ্যে থাকা এই লাইব্রেরিটি পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। কিন্তু আমার এ কাজটি করতেই ভালো লাগে।
উল্লেখ্য, শতবর্ষ পূর্বে, হাসকেল পরিবারের সদস্যরা এই লাইব্রেরিটি নির্মাণ করেন। লাইব্রেরিটি নির্মাণের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ক্রসবর্ডার মিথষ্ক্রিয়া ও পারষ্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা।
সূত্র : বিবিসি
এমজে/এআর