মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেমিট্যান্স, কমছে বৈধ পথে
প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার
মোবাইলে রেমিটেন্স সেবা বাড়ছে ব্যাপকভাবে। প্রবাসীরা বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, ইউ ক্যাশসহ অন্যান্য এমএফএস সার্ভিসের মাধ্যমে তাদের অর্জিত রেমিটেন্স প্রদান করছে। এর ফলে দ্রুত বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাসীদের আত্মীয়-স্বজনরা পেয়ে যাচ্ছেন। এ সার্ভিসের এজেন্টদের মাধ্যমে সারাদেশে হুন্ডি সিন্ডিকেট কাজ করছে। তবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এভাবে বিদেশ থেকে অর্থ পাঠানোকে বৈধ চ্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে রেমিটেন্স প্রবাহ হ্রাস পাওয়ার পরিবর্তে বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত শীর্ষক কর্মশালায় এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাবিশ্বে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমলেও বাংলাদেশে কমেছে উল্লেখযোগ্যহারে। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমার কারণ হিসেবে গবেষণায় বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ী করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকের শাখার দূরত্ব, অর্থ পেতে সময়ক্ষেপণ, ব্যাংকারদের ভালো আচরণের অভাব, নানা ধরনের জবাবদিহিতা, বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রের প্রয়োজনীয়তা, সাপ্তাহিক ছুটি, অবৈধ অভিবাসী ইত্যাদি।
ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই রেমিট্যান্স প্রবাহে শ্লথ প্রবৃদ্ধি। তবে আশার দিক হলো গত মাসে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি ধরে রাখার জন্য কাজ করছে।
তিনি বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে রেমিট্যান্সের একটি বড় অংশ অবৈধভাবে দেশে আসছে। হুন্ডি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হলেও বিভিন্ন উপায়ে এটিকে কমিয়ে আনতে হবে। এজন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে অবৈধ চ্যানেলে লেনদেন বন্ধ করতে হবে বলেও জানান তিনি।
বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসায় জাতীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলকে কাজে লাগাতে হবে। গত ৫ বছর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিসর বাড়লেও রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে এটিকে কাজে লাগানো হয়নি। এ কারণে দ্রুত মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেমিট্যান্স আনার বিষয়টি কাজে লাগাতে না পারলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও কমে যেতে পারে।
বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে খরচ বেশি হয়। এর প্রভাব পড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। তাই খরচ কমিয়ে আনতে হবে।
এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মেহমুদ হোসেন বলেন, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে (এমএফএস) কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। না হলে হুন্ডি কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবিবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি দল।
আর/ডব্লিউএন