টেস্টে ১৮ তে পা দিলো টাইগাররা
প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ১২:১৬ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০১৭ শনিবার
২০০০ সালের ১০ নভেম্বর। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয় এক দিন। এ দিনই টেস্ট ক্রিকেটের অভিজাত আঙিনায় পা রাখে বাংলাদেশ। এরপর সাফল্য ও ব্যর্থতাকে সঙ্গী করে টেস্ট ক্রিকেটে ১৭ বছর পার করে ১৮ তে পদার্পণ করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
২০০০ সালের আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামে বাংলাদেশ। পুরো বাংলাদেশের চোখ সেদিন টেলিভিশন পর্দায়। টস করতে ভারত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে মাঠে নামেন নাইমুর রহমান দুর্জয়। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ভারতের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে টেস্ট আঙিনায় নবজাতক দলটি প্রথম ইনিংসেই ৪০০ রানের বিশাল স্কোর সংগ্রহ করে ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের আগমন জানান দেন। অভিষেকেই ১৪৫ রানের বিশাল ইনিংস খেলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এখনও টেস্টে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ইনিংস এটি। ব্যাট হাতে ঝলক দেখিয়েছিলেন ‘মিস্টার ফিফটি’ খ্যাত হাবিবুল বাশার সুমন। ৭১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
শুধু ব্যাট হাতে নয়। বল হাতেও জাদু দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। নাইমুর রহমান একাই তুলে নেন শচীন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলির উইকেটসহ মোট ছয় উইকেট। প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৯ রানের লিড নিতে পারে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ভেঙ্গে পরে টাইগার ব্যাটিং লাইনআপ। শ্রীনাথ-সুনিল জোসিদের মারাত্মক বোলিংয়ে মাত্র ৯১ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে ভারতের সামনে মাত্র ৬৩ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। ভারত মাত্র এক উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।
টেস্ট ক্রিকেটের পরের পাঁচ বছরও সুখকর ছিল না বাংলাদেশের। একের পর এক পরাজয়, কোনো কোনোটা আবার ইনিংস পরাজয়। তবে ২০০৫ সালে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। এ বছরই আসে বহুল প্রতীক্ষিত টেস্ট জয়।
চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে মোহাম্মদ রফিক ও এনামুল হক জুনিয়রের স্পিন-বিষে নীল হয় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ পায় ২২৬ রানের বিশাল জয়।
১৭ বছরে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ১০৪টি। এর মধ্যে ১০টিতে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ৭৯ টি। আর ড্র হয়েছে ১৫টি।
২০০৯ সালের ক্যারিবীয় সফরটা ছিল সবচেয়ে সাফল্যের সফর। এ সফরে দুটি জয় আসে টাইগারদের। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে এক সময়ের পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ জয়লাভ করে ৯৫ রানে। আর সেন্ট জর্জে ৪ উইকেটে জিতে হোয়াইটওয়াশ করে ক্যারিবীয়দের। এরপর বাংলাদেশ একে একে হারিয়েছে ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় বড় দলকে।
সাকিব-তামিম-মুস্তাফিজদের বাংলাদেশ দল আগের তুলনায় এখন অনেক শক্তিশালী। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ব্যর্থ হলেও বিশ্বের বাঘাবাঘা দলগুলো বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট খেলতে ভয় পায়। দেশে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ নামে বসছে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা আসর। বড় বড় বিদেশি খেলোয়াড়দের সাথে খেলছে বাংলাদেশের তরুণ ও উদীয়মান খেলোয়াড়েরা। এসব টুর্নামেন্ট থেকে উঠে আসছে মিরাজ, তাসকিন, মোসাদ্দেকের মতো খেলোয়াড়রা। ভবিষ্যতে তাই বাংলাদেশ দল আরো শক্তিশালী হবে – টাইগার প্রেমিদের এমনই প্রত্যাশা।
এমআর/ডব্লিউএন