সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের শর্তই প্রধান বিচারপতি হবার যোগ্যতা
প্রকাশিত : ০৭:১২ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ০৯:৪০ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৭ শুক্রবার
নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে চলতি মাসের ১১ তারিখে পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস.কে.) সিনহা। সদ্য সাবেক হওয়া এ প্রধান বিচারপতির পদের মেয়াদের ৮১ দিন বাকি থাকতেই তিনি পদত্যাগ করেন। বিচারিক অঙ্গনে এখন সব থেকে বেশি যে প্রশ্নটি আলোচিত হচ্ছে তা হলো- কে হচ্ছেন ২২তম প্রধান বিচারপতি? ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। এমন পরিস্থিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ এবং অন্য বিষয়ে ইটিভি অনলাইনের মুখোমুখি হয়েছেন সাংবিধানিক আইনের গবেষক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. বিল্লাহ মাসুম। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ইটিভি অনলাইনের সহ-সম্পাদক শাওন সোলায়মান।
ইটিভি অনলাইন: কেমন আছেন স্যার?
ড. বিল্লাহ মাসুম: বেশ ভালো আছি।
ইটিভি অনলাইন: বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগে বিধান কী?
ড. বিল্লাহ মাসুম: বাংলাদেশে সংবিধান বিষয়ক কথাবার্তা বেশি হয়। এর মানে একটা হতে পারে যে, সংবিধান আমাদের জন্যে এক আফসোসের নাম। কথায় বলে, কানা তার চোখের কথা বারবার বলে। যাই হোক, প্রধান বিচারপতি বিষয়ক আলোচনায় একটা জিনিস খেয়ালে রাখতে হবে, আমাদের প্রধান বিচারপতি কিন্তু সাংবিধানিকভাবে ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি’ হিসেবে অভিহিত হবেন। তিনি কিন্তু শুধু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি! তাই রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতির ওপর প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ভার দেওয়া আছে। আমরা বলি, বর্তমান সংসদীয় কাঠামোয় যে দুটি কাজ রাষ্ট্রপতি নিজ থেকে করতে পারেন তার একটি হলো প্রধান বিচারপতি নিয়োগ। অন্যটি প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ ক্ষমতা শুধুমাত্র প্রতীকী, কেননা সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধানকেই তিনি সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। সেক্ষেত্রে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ রাষ্ট্রপতির একমাত্র আদি ক্ষমতা। কিন্তু আমাদের সামগ্রিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার এই নিয়োগের ক্ষেত্রেও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়।
ইটিভি অনলাইন: সংবিধান এ বিষয়ে কী বলে? বয়স এবং জ্যেষ্ঠ্যতার বিষয়ে আইন কী?
ড. বিল্লাহ মাসুম: সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক নিয়ে আমাদের সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হবে। আর রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন। কাকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা যাবে এরকম সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের কথা সংবিধানে নেই। তবে আগের ওই কথার সঙ্গে এক নিঃশ্বাসে বলা আছে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করে সুপ্রিম কোর্টের অন্য বিচারক নিয়োগ করা যাবে। প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারক নিয়োগের যোগ্যতা বলা না থাকলেও সংবিধানের ৯৫ নম্বর অনুচ্ছেদে কিছু অযোগ্যতার কথা বলা আছে। সেই অযোগ্যতাগুলো না থাকা-ই যোগ্যতা। আইনের ভাষার মারপ্যাঁচে বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তি প্রধান বিচারপতি পদের যোগ্য হবেন না যদি তিনি বাংলাদশের নাগরিক না হন এবং যদি তার বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের বয়স বা ওকালতির ন্যূনতম ১০ বছরের অভিজ্ঞতা না থাকে। আর একটা আইন করার কথা ছিল অন্য সব যোগ্যতা নির্ধারণ করে, যেটা আজও হয়নি। প্রধান বিচারপতি নিজেও আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। কাজেই এই যোগ্যতা বা অযোগ্যতার মান তার নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিবেচ্য। এখন আমরা ধরে নিচ্ছি, বর্তমানে আপিল বিভাগে যে পাঁচজন বিচারপতি আছেন, রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্যে থেকে যে কাউকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন। প্রথাগত সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী, সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ জন হবেন প্রধান বিচারপতি, তবে এরকম কিছু লিখিত নেই। রাষ্ট্রপতি অন্য আরও প্রাসঙ্গিক বিষয় যেমন প্রাজ্ঞতা, সরকারের নীতি, রাজনৈতিক, বিচারিক ও রাষ্ট্রের স্বার্থ বিবেচনা করে এই নিয়োগ দিয়ে থাকেন। মুরুব্বীকে ডিঙিয়ে নবীনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের উদাহরণ আমাদের দেশে ও ভারতে রয়েছে। একে ‘সুপারসিশন’ বলে। ‘প্রিন্সিপল অব সিনিয়রিট’ ক্ষমতা অপব্যবহেরের বিরুদ্ধে একটা রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করে। এই নীতির যে লঙ্ঘন অতীতে হয়েছে (যেমন বিচারপতি খায়রুল হকের নিয়োগের সময়) তা ছিল অতীতের ধারাবাহিকতার ফল । কিন্তু অনুশীলনটা শুরু করেছিল ২০০১ এর বিএনপি সরকার। যেটাই হোক, এগুলো অণুকরণযোগ্য উদহারণ নয় । এবং ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে অনুশীলন করা উচিত। একজন বিচারক বর্তমানে তার ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
ইটিভি অনলাইন: আপিল বিভাগে থাকা বর্তমান বিচারপতিদের মধ্যে কে সম্ভাব্য প্রধান বিচারপতি হতে পারে বলে আপনি মনে করেন। আর জ্যেষ্ঠতা হিসেবে কে এগিয়ে আছেন?
ড. বিল্লাহ মাসুম: জ্যেষ্ঠতা হিসেবে বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা এগিয়ে আছেন। কেননা তিনি যেমন বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ এবং জ্যেষ্ঠ, তেমনি প্রধান বিচারপতির চলতি দায়িত্ত্বেও আছেন। তবে ওই যে বললাম, আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতিদের মধ্যে থেকে যে কাউকে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারেন। সেটা নিয়ে আমরা আলাপ করতে পারি, কিন্তু আইনি প্রশ্ন তোলার অবকাশ কম। প্রশ্নটা বিচারিক সংস্কৃতির।
এখন একটা কথা উঠেছে কতদিনের মধ্যে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে হবে। এ বিষয়ে সংবিধানে স্পষ্টভাবে কিছু বলা নেই। আমরা এটাকে যুক্তিসঙ্গতার মানদণ্ড দেই। রাষ্ট্রপতির সন্তোষ দেশ ও দশের কল্যাণে অনুশীলন হবে এটাই সবার প্রত্যাশা।
ইটিভি অনলাইন: সাবেক প্রধান বিচারপতির এমন পদত্যাগে বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থার ঘাটতি তৈরি হবে কী না?
ড. বিল্লাহ মাসুম: আর্জেন্টাইন একজন বিচারককে সামরিক সরকারের আমলে প্রশ্ন করা হয়েছিল চাপের মুখে একজন বিচারকের কি করা উচিত। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন এক্ষেত্রে একজন বিচারকের তিনটি পথ খোলা থাকে- এক. শাসক যা বলেন তা মেনে নেওয়া; দুই. পদত্যাগ করা; এবং তিন. নিজ পদে থেকে যতদূর সম্ভব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাওয়া। এর মধ্যে প্রথমটি আসলে কোনো বিকল্পই নয়। বিচারপতি সিনহা বাকি দু’টি করার চেষ্টা করেছেন। আমি মনে করি তার বেশ আগেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল, তাতে তিনি আরও নমস্য হতেন। তার বিদায়ের ধরন অবশ্যই জনমনে বড় প্রশ্ন হয়ে রয়ে যাবে। আস্থার সংকট তৈরি না হলেও, আদালত আগের মতো মনোবল নিয়ে বিচারকার্য করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। বিচারপতি সিনহার ঘটনা জনগণ ও আইনের ছাত্রদের ভুল বার্তা দিয়েছে। বিচারপতি সিনহা যেভাবেই যান না কেন তার কিছু রায়ের (যেমন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, যুদ্ধাপরাধ মামলা) জন্য আমরা তাকে মনে রাখবো। আবার কিছু রায়ের জন্যে তিনি আলোচিত এবং সমালোচিত দুই হতে থাকবেন (যেমন ষোড়শ সংশোধনী মামলা, আদালত অবমাননা মামলা ইত্যাদি)। বিচার কাজে গতি আনার জন্যে বিচারক বন্ধুদের তার সুনাম করতে দেখেছি।
ইটিভি অনলাইন: নতুন যিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হবেন তিনি কতটা গ্রহণযোগ্য হতে পারেন বা তার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থার বিষয়টি কেমন হতে পারে?
ড. বিল্লাহ মাসুম: বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা আরও দৃঢ়চেতা বিচারক হিসেবে পরিচিত। তিনি দীপ্তিমান বিচারিক মনস্কতার অধিকারী। আব্দুল কাদের মোল্লা, ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলা, সাঈদির মামলায় তার ভিন্ন মতের রায় রয়েছে-যেগুলো বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক দর্শন এর সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ মনে নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে তিনি প্রধান বিচারপতি হলে, আমরা সুপ্রিম কোর্টকে আরও এসারটিভ বা সক্রিয় হতে দেখবো। স্মর্তব্য, ষোড়শ সংশোধনী মামলায় বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি থেকেও নির্বাহী বিভাগের সমালোচনা করেছেন তীর্যক ভাষায়। যেমন ওই সংশোধনীকে তিনি সংবিধান সংশোধনের ‘দুধ-ভাত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিচারবিভাগের ওপর মানুষের আস্থার বিষয়টা অনেকটা সফি’স চয়েসের মতো। যেটাই হোক, বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা থাকতেই হবে। রাজা যায়, পার্লামেন্ট যায়, কিন্তু বিচারবিভাগ থাকেই, ঠাঁই দাঁড়িয়ে, বিচারের ঝাণ্ডা হাতে নিয়ে।
ইটিভি অনলাইন: সামগ্রিক বিষয়টিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
ড. বিল্লাহ মাসুম: সার্বিকভাবে বিষয়টাকে আমি সাংবিধানিক হতাশা হিসেবে দেখি। আমি মনে করি, ষোড়শ সংশোধনী এবং বিচারপতি সিনহা ইস্যু আরও বৃহত্তর সাংবিধানিক ক্যানভাস থেকে মূল্যায়ন করা যেত। আমি আইনমন্ত্রী হলে একটা ‘জাজ-অঅপসারণ আইন’ এর খসড়া আগেভাগে বানাতাম। তারপর সংশোধনী আনতাম, এর আগে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করতাম। এর পরেও যদি সেটা, বাতিল হতো তাহলে বলতাম, ষোড়শ সংশোধনী মামলায় আমরা আদালতকে ওইভাবে বুঝাতে পারিনি। কিন্তু আমরা মনে করি এটা (পার্লামেন্টারি মডেল ) জনকল্যাণে করা হয়েছিল। আমার দল এবং সরকার এ বিষয়ে আরও মন দিয়ে কাজ করে যাবে। জনমত গঠন করে, আবার আদালতের দ্বারস্থ হবে বিষয়টির সাংবিধানিকতা যাচাই করার জন্যে। এভাবে বলতাম। এতে সাময়িক হার হয়তো হতো, কিন্তু আখেরে দল এবং আইনের শাসন লাভবান হতো। বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারা প্রতিষ্ঠায় বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ব্যাপক অবদান রয়েছে। যেমন নির্বাচন কমিশন নিয়োগের ব্যাপারে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের সাংবিধানিক দর্শন প্রতিফলিত করে দলটি একটি প্রথাগত সাংবিধানিক আইন তৈরি করেছে। একটা সংলাপময় সংস্কৃতির আবহ তৈরি করেছেন। তাই এক্ষেত্রে দলটি হীরে ফেলে কাঁচ তুলে ভিখেরি সাজলে মনে কষ্ট পাই। আওয়ামী লীগকে ব্যারিস্টার আমীর-ঊল ইসলামের মতো মানুষদের মূল্যায়ন করতে হবে।
ইটিভি অনলাইন: বর্তমান সময়ে বিচার বিভাগ নিয়ে আপনার পরামর্শ কী?
ড. বিল্লাহ মাসুম: কিছুদিন আগেই আমাদের সংবিধান দিবস গেলো (৪ নভেম্বর)। আমার কথা একটাই, সংবিধানের যে ‘প্রি-এম্বল বা প্রস্তাবনা’ আমাদের আছে তাকে আপনারা ক্ষুদ্রার্থে নেবেন না। এটা আসলে আমাদের `প্রস্তাবণা` মাত্র ছিল না, ছিল প্রসন্ননামা- সাংবিধানিক রুব্রিক—‘অন্ধকারে পূব আকাশে ওঠা দিনমনি’ (Pole Star)। তাই সংবিধান দিবসের প্রাক্কালে আসুন প্রি-এম্বল এর জবাবে কার্যত একটা পোস্ট-এম্বল লিখি। আর এই যে ’৭২ ফিরে যাবার কথা বলেন সবাই, আসলে `৭২ একটা চেতনা, নিতাইগঞ্জ বা চিলমারীর বন্দর। সাংবিধানিকতার বন্ধুর পথ দিয়ে ওখানটায় পৌঁছাতে হবে। তাই আইনের শাসন কিংবা বিচারবিভাগের স্বাধীনতা যদি হয় ৭২-এর চেতনা, পার্লামেন্টারি মডেল বা সুপ্রিম কাউন্সিল তা অর্জনের উপায়। প্রথমটা আদি ও অব্যয় এবং আর দ্বিতীয়টা সময়কালে পরিবর্তন হয়। আমি আশা করি, বিচার বিভাগ তার বর্তমান সংকট কাটিয়ে আমাদের আবার আলোর পথ দেখাবে এবং অন্য বিভাগ একে যথাযথ সহযোগিতা দেবে।
ড. বিল্লাহ মাসুম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিট অব ওয়েলিংটন থেকে ‘ভূমি আইনের রাজনীতি’ শীর্ষক গবেষণার জন্য ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাংবিধানিক আইন বিষয়ে তার জ্ঞানগর্ভ গবেষণা বেশ প্রশংসিত এবং সমাদৃত। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার লেখালেখি এবং বক্তৃতায় সাংবিধানিক এবং মানবাধিকার আইনের তথ্যবহুল আলোচনা পাওয়া যায়।
এসএইচএস/টিকে