ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ গুরুতর সমস্যা : গভর্নর

প্রকাশিত : ০৮:০৭ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ১১:৩১ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার

ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)-এর যৌথ উদ্যেগে আয়োজিতকারেন্সি ম্যানেজম্যান্ট অ্যান্ড পেমেন্ট সিস্টেম ওরিয়েন্টেশন কোর্স২০১৭শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রসঙ্গত, ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণের ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশই বর্তমানে খেলাপি ঋণ। গত বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকার বেশি।

রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ওই কর্মশালায় গভর্নর আরও বলেন, খেলাপি ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্বিগ্ন। তবে এ ঋণের পরিমাণ হঠাৎ করেই বাড়েনি। এটা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, সত্যতা যাচাই না করেই কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করলে ক্ষণিক সময়ের জন্য নিজের ইমেজ বাড়ানো যায় কিন্তু সত্যিকারের সাংবাদিকতা হয় না। অনেক সময় সত্যতা যাচাই না করে বিভিন্ন ব্যক্তির উদ্ধৃতি দেওয়া হয়, এটা সাংবাদিকতার ইথিকস্-এ পড়েনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, মাঝে মধ্যে অনেকেই ধাতব মুদ্রা বা কয়েন নিতে চান না। এটা উচিত নয়। কমার্সিয়াল ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক বাজার থেকে কয়েন নিতে চায় না এটা বেআইনী।

প্রবাসী আয় কমে যাওয়া প্রসঙ্গে শুভঙ্কর সাহা বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন কারণে সম্প্রতি প্রবাসী আয় কমেছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে রেমিটেন্স কমার কারণ হলো, দেশটিতে এখন কাজের পরিমাণ কমে গেছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকেও কিছুটা কমেছে। এর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আগে সৌদিতে একজন শ্রমিক একাধিক জায়গায় কাজ করতে পারতো। কিন্তু বর্তমানে তা পারছে না। এখন শ্রমিকদের বিভিন্ন স্থানে কাগজ দেখে কাজ দেওয়া হচ্ছে।

আবার একইভাবে মালয়েশিয়ায় রিংগিতের অবমূল্যায়নের কারণে সেখানে থেকে রেমিট্যান্স কমার অন্যতম কারণ। এর আগে মালয়েশিয়ায় একজন শ্রমিক তিন রিংগিতের বিনিময়ে ১ ডলার পেত। এখন শ্রমিকরা চার রিংগিত আয় করে এক ডলার পায়।

কর্মশালার সমাপনি বক্তব্যে ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বলেন, প্রত্যেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটা সঙ্কটের মধ্যে যায়। সেসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক সাফল্যের সঙ্গে ভূমিকা পালনের পাশাপাশি নতুন নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে।

কর্মশালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে সচ্ছতা তৈরি হবে। পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে এ ধরণের আয়োজনে রুল প্লে তৈরি হবে।

অনুষ্ঠান শেষে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।

কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইআরএফ’র সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী, এসএম মনিরুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর শাহা, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ড. হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

আর/টিকে