প্রেম হচ্ছে মায়া যেটি ধরা যায় না, ছোঁয়াও যায় না : ছবি
আউয়াল চৌধুরী
প্রকাশিত : ০৫:৪৭ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ০৬:৫৬ পিএম, ৪ মার্চ ২০২০ বুধবার
ফারজানা ছবি
ফারজানা ছবি বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান অভিনেত্রী। নাটক, টেলিফিল্ম, চলচ্চিত্র মিডিয়া- সব মাধ্যমে রয়েছে তার সমান বিচরণ। নাচের মাধ্যমে পথচলা শুরু হলেও পরবর্তীতে অভিনয়-ই হয়ে উঠে মুখ্য।
আর এই অভিনয়ের সুবাদে ধীরে ধীরে খ্যাতির শিখরে উঠেন। নিখুঁত ও সাবলিল অভিনয়ের জন্য ভূষিত হয়েছেন সম্মানজনক পুরস্কারে। ইটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় তার সাম্প্রতিক কাজ, ব্যস্ততা, ভালোলাগা ও জীবনের নানা দিক নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আউয়াল চৌধুরী।
ইটিভি অনলাইন : বর্তমানে ব্যস্ততা কি নিয়ে?
ছবি : আমি এরইমধ্যে একটি সিনেমার কাজ শেষ করলাম। ছবিটির নাম নদী কাব্য। মোহাম্মদ হোসেন জেমির লেখা এবং পরিচালনায় নদী কাব্য। ছবিটি সম্পূর্ণই নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী এবং নদীকে উপজীব্য করে বেঁচে আছে সেই জেলে সম্প্রদায় বা এ ধরনের কাজে যারা জড়িত তাদের জীবনভিত্তিক। রেজিয়া এই গল্পের প্রধান চরিত্র। আর আমি এই চরিত্রেই অভিনয় করেছি। একজন নারী সর্বশক্তি দিয়ে চাইলে সব ধরনের অন্যায় প্রতিরোধ করতে পারে। জীবনকে গড়বার জন্য একজন নারী নিজেই নিজের জন্য যথেষ্ট। সেই প্রতিপাদ্য নিয়ে এই ছবি নির্মাণ করা হয়েছে।
ইটিভি অনলাইন : শিল্পাঙ্গনে আসার পেছনে আপনাকে কে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। পেছনের গল্পটা জানতে চাই?
ছবি : আমাদের নিজেদের নিয়ে স্বপ্ন দেখার আগে স্বপ্নটা দেখা শুরু হয় পরিবার থেকে। আমরা যখন খুব ছোট থাকি তখন প্রত্যেকেরই স্বপ্ন তৈরির জন্য যে রসদগুলো লাগে সেটা তখনো আমাদের মস্তিস্কে তৈরি হয় না। আমাকে নিয়ে প্রথম স্বপ্ন দেখেছেন আমার মা। আমার চার বছর বয়স থেকে মা গুঙুর পরিয়ে হাত ধরে শ্বাশ্বত ললিতকলায় নিয়ে যেতেন। আমার জন্ম চট্টগ্রামে। এই শহরের শ্বাশ্বত ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শেখা দিয়েই আমার এই শিল্প মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘপথ কোলে করে, রেল লাইন পাড়ি দিয়ে, বড় মাঠ পার হয়ে মা আমাকে সেই শ্বাশ্বত ললিতকলায় নিয়ে যেতেন। গুঙুরের শব্দে আমার সকাল হতো, গুঙুরের শব্দেই আবার আমার বিকেল হতো। সেই নাচ দিয়ে শুরু করলাম। তারপর পরবর্তীতে যখন ঢাকায় আসলাম। তখন একটি ন্যাশনাল কম্পিটিশনে নিলাম। সেই প্রতিযোগিতায় আমি প্রথম হই।
ইটিভি অনলাইন : অভিনয় জীবন কিভাবে শুরু করলেন?
ছবি : আমি যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি তখন আবদুল্লা আল মামুন স্যারের ‘চিঠি’ নাটক এর মাধ্যমে কাজ শুরু করি। তিনি তখন বিটিভির গেস্ট ডিরেক্টর ছিলেন। ‘চিঠি’ লিউটলস্তয় এর গল্প অবলম্বনে বাংলায় অনুবাদ করা একটি এক ঘন্টার নাটক। ওই নাটকটির জন্য প্রয়োজন ছিল একেবারে বাঙ্গলী চেহারার, বড় বড় চুল, বলা যায় যাকে দেখলে একেবারে গ্রামের মেয়ে মনে হবে। আর এটি ছিল প্রধান চরিত্র। সেই চরিত্রের নাম ছিল পদ্ম। উনি আমাকে প্রথম দেখাতেই পছন্দ করে ফেললেন। তিনি তখন আমাকে তার নাটকে অভিনয়ের জন্য চাইলেন। তারপর উনার হাত ধরেই আমার নাটকে হাতে খড়ি। এরপর আমাকে থিয়েটার স্কুলে ডাকা হলো। সেখানে প্রথম দিন গিয়ে দেখি ফেরদৌসি মজুমদার, আবুল হায়াত, মামুনুর রশিদ, সোহেল আরমান, কে এস ফিরোজ, জহির বিশ্বাস, এস এম মহসিন আমাদের নাট্য জগতের সব মহারতিরা বসে আছেন। তখন খুব ঘাবড়ে গেলাম। ভয়ে ঠান্ডা হয়ে যাওয়া যাওয়া হাতটি প্রথম ধরলেন ফেরদৌসি মজুমদার। উনি আমাকে বললেন আমি তোমাকে তৈরি করবো। তুমি অবশ্যই পারবে। তিনি আমাকে শুটিং এর দিন শাড়ী পরালেন, সব কিছু গুঁছিয়ে দিলেন। এরপর আমার মা আমাকে শক্ত মনোবল তৈরিতে খুব সহযোগিতা করলেন। সেই থেকে আমার অভিনয় জীবন শুরু। এরপর ওই নাটকটি দেখে আমাকে আতিকুল হক চৌধুরী স্যার ডাকলেন। তার ‘রহস্যময় হাসি’ নামের একটি নাটকের জন্য। এটিও একটি বিদেশী গল্প অবলম্বনে। সেই নাটকটিতে অভিনয়ের পর আমাকে দর্শক ভালোবাসলেন। দর্শকের ভালোবাসায় একটু একটু করে পথচলা শুরু করলাম।
ইটিভি অনলাইন : নাটকের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
ছবি : আমার প্রথম নাটকের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে একটি কথা বলা দরকার। সেটি হলো আমি যেদিন প্রথম অভিনয় করলাম, অভিনয়ের পরে আমি স্টুডিও থেকে কাঁদতে কাঁদতেই বাড়ী ফিরেছি। সত্যি কথা বলতে কী, শিল্পের একটা নিজস্ব ক্ষমতা আছে যা আমাদের শিল্পীর চেয়ে অনেক বেশি প্রখর এবং শক্তিশালী। সহজ কথায় বললে শিল্পীর চেয়ে শিল্পের ক্ষমতা অনেক বেশি শক্তিশালী। কারণ আমরা শিল্পীরা কখনো নির্ধারন করতে পারিনা, কে গান গাইবে, কে নাচবে বা কে অভিনয় করবে।এটা শিল্পী নির্ধারন করে কখনও হয় না। শিল্পই নির্ধারন করে দেয় শিল্পীকে সে কোন দিকে টেনে নিয়ে যাবে। আমার নাচ দিয়ে জীবন শুরু হলেও অভিনয় আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেললো। প্রথম দিন আমি যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম তখন মনে হলো রক্তে মাংশে অভিনয়টা জীবনের সঙ্গে মিশে গেল।
সেদিন সত্যি আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরেছিলাম। আর ভাবছিলাম আমার অভিনয় তো ভালো হয়নি। কেউ হয়তো আমাকে আর অভিনয়ে নেবে না। এই যে আমি কাঁদছিলাম তার মানে আমি অভিনয়কে ভালোবেসে ফেলেছি। তাকে আমি ছেড়ে দিতে চাচ্ছি না। এজন্য এ কথাটা আমি সব সময় বলতে চাই যে শিল্পের ক্ষমতা অসীম।
ইটিভি অনলাইন : এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে যেতে চাচ্ছি। আপনার প্রেম বিয়ের গল্প শুনতে চাচ্ছি? যদি কিছু বলেন?
ছবি : আমার জীবনে প্রথম প্রেম যখন আসে আমি তখন বুঝিনি যে আসলে এটা প্রেম। আমাকে অনেকে চিঠি পত্র দিয়েছে। ফোন করেছে। ভালোবাসার কথা বলেছে। এভাবে সময় নানাভাবে অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু সেই বিষয়গুলো থেকে আমি কখনো প্রেম অনুভব করিনি। প্রেমের যে একটা টান সেটা কখনো বুঝতে পারিনি। প্রেম শব্দের অর্থ আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, আজকের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আমি বলতে পারি, প্রেম হচ্ছে এক অধরা, মায়া। এই মায়াকে ধরা যায় না, ছোঁয়াও যায় না। শুধু অনুভব করা যায়। সেই মায়া আমি প্রথম অনুভব করেছি যখন আমি মাস্টার্সে পড়ি। আমার ক্লাসমেট তন্ময়। তার সঙ্গে প্রথম আমার বন্ধুত্ব তৈরি হয়। এবং সেই বন্ধুত্ব থেকে আস্তে আস্তে সখ্যতা গড়ে উঠে। বলা যায় একটা নির্ভরতা তৈরি হয়। আসলে তখনো বুঝতে পারছিলাম না যে এটাই প্রেম কিনা। সেই নির্ভরতাটা এমন জায়গায় গিয়ে পৌছালো তার প্রতিটি কথায়, প্রতিটি নি:শ্বাসে তার কথাই আমি মনে করছি। ওই মানুষটির ওপরই আমি আমার জীবনের জন্য আস্থা রাখতে পারছি।
মাস্টার্স শেষ করার পর আমার যখন বিয়ের প্রসঙ্গ আসলো তখন আমার কাছে মনে হলো আমি কি ওই মানুষটিকে ছাড়া থাকতে পারবো। তখন নিজের ভেতর থেকেই বলে উঠলো জীবনের বাকিটা সময় এ মানুষটাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। ওকে ছাড়া থাকলে দেখা যাবে ঘুরে ফিরে তার কথাই মনে করবো। তারপর বিষয়টি সবার আগে আমি আমার মাকে জানালাম। মা এবং বোন হচ্ছে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বন্ধু। এর বাইরে আমার আর কোনো বন্ধু নেই। আমার সব কথা, ভালো মন্দ, অপরাধ করলেও আমার মা বোনের কাছে আমি কনফেস করি। এবং সৃষ্টিকর্তার কাছেও কনফেস করি। এ বিষয়ে আমার মাকে জানানোর পরে মা যখন ওর সঙ্গে দেখা করলো, পেরে দেখি আমার চেয়ে মায়ের সঙ্গে তন্ময়ের বন্ধুত্ব বেশি গড়ে উঠলো। এরপর একটু একটু করে পারিবারিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজকে সেই মানুষটি আমার পাশে আছে জীবনসঙ্গী হয়ে।
ইটিভি অনলাইন : কোন কোন নাটক থেকে দর্শকদের বেশি সাড়া পেয়েছেন?
ছবি : আমার অভিনীত অসংখ্যা নাটক আমার প্রিয়। তার মধ্যে কয়েকটি নাটক আছে যেগুলো একটু বেশি ভালোলাগার, দর্শকদের সাড়াও পেয়েছি। যেমন ‘সীমানা পেরিয়ে’ আমার খুব প্রিয় একটি কাজ। এই নাটকটিতে অভিনয় করে আমি মেরিল প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কারের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছি। সীমানা পেরিয়ে শিউলী সাথী নামের একটি মেয়ের জীবনের বাস্তব ঘটনা নিয়েই এ গল্প। নাটকটি পরিচালনা করেছেন মাতিয়া বানু শুকু। এছাড়া আমার আরেকটি প্রিয় নাটকের নাম ‘পূর্ব রাগ’। হাসান শিকদারের লেখা ও পরিচালনায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি। আমার অরেকটি প্রিয় নাটক ‘পয়মন্ত’। এখানে আমি বেদেনি চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার প্রথম জীবনের খুব প্রিয় একটি নাটক হলো ‘গোধলী লগ্নে’। এই নাটকের কথা এখনো দর্শকদের মনে আছে। আমার আরেকটি প্রিয় নাটক হচ্ছে আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় ‘সাত নাম্বার বাড়ী’। সেখানে আমি পিয়ারী নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করি। গ্রাম থেকে আসা দু:সম্পর্কের একজন আত্বীয়। যে আত্বীয়কে তারা ঘরের কাজের মেয়ে হিসেবে রাখে। আরেকটি নাটক হলো গ্যালন। মাসুম আজিজের লেখা একটি নাটক। এরকম অসংখ্যা প্রিয় নাটকে অভিনয় করেছি। সম্প্রতি নদী কাব্য নামের একটি সিনেমায় কাজ করেছি। সত্যি আমি এ ধরনের কাজের কথা কখনো ভুলবো না। একটি শিশুকে কোলে নিয়ে আমি মাঝ নদীতে ঝড়ের মধ্যে কাজ করেছি। জাল ফেলেছি। সব মিলিয়ে এরকম অসংখ্যা প্রিয় কাজের মধ্যে দিয়েই আমি আমার প্রতিটি দিন অতিবাহিত করেছি।
ইটিভি অনলাইন : আপনি কোন কোন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন? এ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই?
ছবি : আমি প্রথম কাজ করেছি বিশ্লেষণধর্মী একটি চলচ্চিত্রে। হাসিনা বানু সোমার চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় ‘জীবনও মরনও সীমানা ছাড়ায়ে’। এটি হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাদম্বরী দেবির সঙ্গে যে মানসিক আত্মিক সম্পর্ক ছিল সেই সম্পর্কের একটি বিশ্লেষণমূলক অভিব্যাক্তি। এখানে আমি কাদম্বরী চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই ছবিতে রবিন্দ্রনাথ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল। এটি দু’ঘন্টার একটি সিনেমা। তারপর আমি ‘জোসনা রাতের গল্প’ নামেরও একটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। এর পোস্ট প্রোডাকশন শেষ হয়েছে। যেকোনো সময় রিলিজ হবে। তারপর শাহ আবদুল করিমের জীবন ভিত্তিক একটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। সেটার নাম ‘রঙ্গিন দুনিয়া’। তার একটি গান থেকেই এই শব্দটি নেওয়া হয়েছে। এখানে আমি শাহ আবদুল করিমের স্ত্রীর চরিত্রে কাজ করেছি। এখানে একই চলচ্চিত্রে আমার তিনটি বয়স উপস্থাপন করা হয়েছে। সো চলচ্চিত্র অনেক বড় একটি মাধ্যম। এখানে কাজ করতে পেরে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে।
ইটিভি অনলাইন : দুই মাধ্যমে আপনার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আপনি কোন মাধ্যমে কাজ করতে বেশি সাচ্ছন্দবোধ করছেন?
ছবি : চলচ্চিত্র ও নাটক দুটি মাধ্যমে কাজ করলেও এর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য মনে হয়নি। দুই জায়গাই আমার কাছে সমান। আমি প্রত্যেক জায়গাতেই অভিনয়টা সতর্কতার সঙ্গে করার চেষ্টা করি। এ ক্ষেত্রে আমি খুব পারফেক্টশনিস্ট। এ জন্য অনেকে আমাকে একটু খোঁচা দিয়েও বলে ওভার পারফেক্টশনিস্ট। আমার সহকর্মীরাও এ নাম বলে ডাকে। সো, আমি যখন যে কাজটি করি সেটি স্বল্প বাজেট আর বড় বাজেট যেটিই হোক না কেন আমার সব ধ্যান জ্ঞ্যন থাকে আমার চরিত্রটি নিয়ে। আমার চরিত্রটি সঠিকভাবে বিশ্বাসযোগ্যভাবে যেন দর্শকদের সামনে উপস্থাপন হয়। দর্শক যেন কখনো অবিশ্বাস নিয়ে আমকে না দেখে। আমার চরিত্রটিকে অবিশ্বাস না করে। তাই নাটক এবং সিনেমায় যখনই কাজ করেছি আমার কাছে কখনো আলাদা মনে হয়নি। তবে একটি বিষয় বলার আছে নাটকে যেহেতু সময় কম সেখানে বিশ্লেষনের সময় কম থাকে আর ফিল্মে অনেক সময় থাকে, সেখানে বড় ক্যানভাস, তাই ডিটেইল দেওয়া সম্ভব।
ইটিভি অনলাইন : না বলা কোনো ঘটনা আছে, বলার মতো?
ছবি : আমার প্রথম কষ্ট হচ্ছে আমার বাবাকে আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছি। আমার জীবনে প্রথম নায়ক প্রথম পুরুষ আমার বাবা। কিন্তু বাবাকে আমার কখনো বলা হয়নি বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমার বাবা এখন নেই। এটি হচ্ছে আমার প্রথম কষ্ট। আর দ্বিতীয় একটি কষ্ট এটি সর্বাঙ্গিন সর্বজনীন। আমি শিল্পী হয়ে তো জন্মাইনি। কিন্তু জন্মের পর থেকে শিল্পী এবং শিল্পের মন নিয়ে এগোতে শুরু করেছি। শিল্পীর মনে সব সময় আক্ষেপ অতৃপ্তি থাকেই। যতই ভালো অভিনয় করি না কেন। যত চরিত্রেই রুপ দান করি না কেন। মনে হয় যে কিছুই করা হয়নি। এই আক্ষেপ হচ্ছে আজীবনের কষ্ট। শিল্পী হওয়ার কারণে অনেক বেশি আবেগি। অনেক বেশি ইমোশনাল আমি। অনেক বিশ্বাস করি, আস্থা রাখি। সব কিছু কে সাদা চোখে দেখি। সাদার বাহিরে যে অন্য কোনো রং হয় সেটা আমার জানা নেই। যেহেতু আমার মনের ভেতরে একটা শিল্পী আছে, এই শিল্পী আজীবন কষ্ট পাবে।
/ এআর /