ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

৩৮তম বিসিএস প্রিলি

‘রিভিশন ও মডেল টেস্টে জোর দিন’

প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:২৯ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৭ বুধবার

মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিন উজ্জল

মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিন উজ্জল

৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দরজায় কড়া নাড়ছে। দেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ চাকরি প্রার্থী অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে এ পরীক্ষায়। তাই এ পরীক্ষাকে সামনে রেখে প্রিলিমিনারিতে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ৩৬তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিন উজ্জল। একুশে টেলিভিশনের অনলাইনের পাঠকদের জন্য তার টিপস নিয়ে লিখেছেন একুশে টিভি অনলাইন রিপোর্টার মো. মাহমুদুল হাসান

বিসিএস প্রিলিমিনারির জন্য যারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের জন্য শেষের সময়টুকু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়টুকু যে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবেন তাদের জন্য এ পরীক্ষা সহজ হবে। পূর্বের পড়াগুলো ভালোভাবে রিভিশন দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুটি বিষয় রিভাইস দিতে হবে। রিভিশন এর মাধ্যমে পূর্বের পড়াগুলো ভালোভাবে ঝালাই করে নিতে হবে। বাসায় নিজেকে পরীক্ষা করার জন্য মডেল টেস্ট দিতে পারেন। এতে করে নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে এবং নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।  

এ সময়ে কখনোই আত্মবিশ্বাস হারানো যাবে না । আপনি সব সময় নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন । সাড়ে প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী  বিসিএস প্রিলিমনারির জন্য আবেদন করেছে  আমি কি তাদের মধ্যে চান্স পাব? এ ধারণা কখনই মাথায় আনা যাবে না। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে প্রস্তুতি নিতে থাকুন চান্স আপনার হবেই। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে পূর্বে যারা চান্স পেয়েছে তারা আমাদের মতই মানুষ। সঙ্গে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। অনেকে বলছেন ৩৮তম প্রিলির জন্য খুব অল্প সময় রয়েছে। কিন্তু তা আমি মনে করি না। কারণ এখনও এক মাসের বেশি সময় রয়েছে। এই সময়টুকু যদি ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। এ সময়টুকুতে যদি আপনারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রস্তুতি নিতে পারেন তাহলে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

বাংলা- ৩৫

বাংলা বিষয়ে সাহিত্য ও ব্যাকরণ এই দুটি অংশ বিভক্ত করে পড়তে পারেন। প্রাচীন ও মধ্যযুগ জন্য ৫ নম্বর থাকে। এখানে পড়া কম থাকে তাই একটু ভালো করে পড়লে এ অংশে ভালো করা সম্ভব। অন্যদিকে আধুনিক অংশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান সাহিত্যিকদের কর্ম এবং তাদের জীবনী সম্পর্কে জানতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম সারির কবি-সাহিত্যিকের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদকের নাম ও কবি সাহিত্যিকদের উপাধি ও ছদ্মনাম ভালোভাবে আয়ত্ব করতে হবে। এ অংশ থেকে একাধিক প্রশ্ন আসে।

আর ব্যাকরণ অংশের জন্য নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বইটি ভালোভাবে পড়তে হবে। এ অংশে ধ্বনি, বর্ণ, বানান, প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, প্রতিশব্দ, পারিভাষিক শব্দ, বিপরীত শব্দ, পদ-প্রকরণ, সন্ধি ও সমাসের ব্যতিক্রম উদাহরণগুলো পড়তে হবে।

এছাড়া বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকের সাম্প্রতিক তথ্যসহ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উল্লেখযোগ্য সাহিত্য সম্পর্কে জানতে হবে।

ইংরেজি- ৩৫

ইংরেজিতে ভালো করতে হলে বিগত বছরে বিসিএস ও পিএসসিতে আসা প্রশ্নগুলো পড়ে নিতে হবে। অন্যদিকে ইংরেজির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইংরেজি শব্দার্থ জানা। আমি মনে করি যে যত বেশি শব্দার্থ জানবে তার জন্য ভালো করা ততো সম্ভব। প্রস্তুতি নেওয়ার সময় প্রয়োজনে লিখে লিখে প্রস্তুতি নিতে পারেন। তবে গ্রামারের নিয়মগুলো উদাহরণসহ আয়ত্ব করতে পারলে ভালো হবে।  

ইংরেজি সাহিত্য অংশে ভালো নম্বর পাওয়ার মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে রাখতে পারেন। এখানে যেহেতু মুখস্ত করার অনেক বিষয় থাকে তাহলে মুখস্ত রাখতে পারলে এতে ভালো করতে পারবেন। ইংরেজি সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ কবি ও  সাহিত্যিকদের নাম, আলোচিত গ্রন্থ, সাহিত্যে তাদের অবদান সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে  হবে।

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা -(১৫+১৫):

প্রথমে বিসিএসের সিলেবাস অনুযায়ী অষ্টম এবং নবম-দশম শ্রেণির গণিতসহ উচ্চতর গণিত বইটি ভালোভাবে শেষ করতে হবে। গণিত অনুশীলনের সময় ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করা বুদ্ধিমানের কাজ। গণিতের জন্য সামন্তধারা, গুণোত্তরধারা, বিন্যাস-সমাবেশ, সম্ভাব্যতা, সেট, মান নির্ণয়, সূচক-লগারিদম ও জ্যামিতিক অংশগুলো ভালোভাবে আয়ত্ব করতে হবে। গণিতে ভালো করার মূলমন্ত্র হচ্ছে বেশি পরিমাণে অনুশীলন। যে যত বেশি অনুশীলন করবেন সে ততো বেশি এগিয়ে থাকবেন। তাই প্রতিদিন গণিত অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে প্রস্তুত রাখুন। মানসিক দক্ষতা অংশে ভালো করতে হলে বিগত সালের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে।

সাধারণ জ্ঞান- ৫০

সাধারণ জ্ঞান বিষযে দুটি অংশ রয়েছে। একটি হলো বাংলাদেশ বিষয়াবলি আর অন্যটি হলো- আন্তর্জাতিক বিষয়বলি। উভয় বিষয়েই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। এ অংশ থেকে তিন নম্বরের প্রশ্ন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের কৃষি ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ইতিহাস থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পূর্বের বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে। বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্পর্কেও জানা থাকতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিভিন্ন আন্দোলন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, প্রাচীন স্থাপত্যের ওপর বেশি জোর দিতে হবে। এছাড়াও বাংলা পত্রিকার প্রথম ও শেষ পাতা, সম্পাদকীয় ও মতামত, আন্তর্জাতিক, বাণিজ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক বিষয়গুলো পড়তে হবে।

সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি- (১৫+১৫)

সাধারণ বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে ভালো করতে হলে বিসিএসসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আসা প্রশ্নগুলো পড়ে নিতে হবে। এছাড়া নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বইটি ভালোভাবে পড়তে হবে। বাজারে প্রচলিত যে কোনো একটি বই অনুশীলন করতে পারেন। অন্য দিকে কম্পিউটার বিষেয়ে ভালো করতে হলে বাস্তব জ্ঞানের মাধ্যমে শিখতে পারলে খুব ভালো হয়।

ভূগোল পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা - ১০

এ বিষয়ে ভালো করতে হলে বিগত সালের প্রশ্নগুলো আগে পড়ে নিতে হবে। মানচিত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। বিশ্বের কোন দেশ কোথায় অবস্থিত সেটা জানা না থাকলে এ অংশে ভালো করা সম্ভব নয়। তাই বিশ্ব মানচিত্র সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। নবম-দশম শ্রেণির ভুগোল বইটি পড়ে নিলে ভালো হয়। এছাড়াও পড়ার সময় যে বিষয়টি কঠিন মনে হবে সে বিষয়টি মার্ক করে পড়লে সহজে আয়ত্বে আসবে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে কাজ করে এমন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে হবে।

নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন- ১০

এ বিভাগের প্রশ্নের উত্তর শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে দেওয়া উচিত নয়। তা না হলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিগত সালের প্রশ্নগুলো পড়ে এ সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যেতে পারে।

 

এসএইচ/