বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান পোপের
প্রকাশিত : ১০:১৮ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:১০ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থী সংকট নিরসনে বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। তবে এসময় তিনি রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি। এর আগে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন পোপ। এ সময় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
পোপ ফ্রান্সিস তার বক্তব্যে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি তাদের মৌলিক প্রয়োজন মিটিয়ে বাংলাদেশ উদার মনের পরিচয় দিয়েছে। তিনি বলেন, এটা ছোট বিষয় নয়, পুরো বিশ্বের সামনেই এটি ঘটেছে।
তিনি বলেন, পুরো পরিস্থিতি, মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট এবং শরণার্থী শিবিরগুলোতে থাকা আমাদের ভাই-বোন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, তাদের ঝুঁকির গুরুত্ব বুঝতে আমরা কেউই ব্যর্থ হইনি। এই সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান পোপ। তবে তার বক্তব্যে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি এড়িয়ে যান তিনি।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ তার ভাষণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে পোপকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনদিনের সফরে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান পোপ ফ্রান্সিস। বিমানবন্দরে পোপকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বিমানবন্দর থেকে পোপ সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে যান তিনি।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে গেলে পোপ ফ্রান্সিসকে স্বাগত জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা। জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন পোপ। জাদুঘরের বিভিন্ন প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন এবং সেখানে পরিদর্শন বইয়ে সই করেন এ ধর্মগুরু।
পরে সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে যান পোপ। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দরবার হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি। রাতে বঙ্গভবনে তার সম্মানে রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন তিনি।
বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার সকাল ১০টায় পোপ ফ্রান্সিস রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্রিষ্টধর্মীয় উপাসনা এবং যাজক অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এদিন দুপুর সোয়া ২টায় তিনি ভ্যাটিকান দূতাবাসে যাবেন। সেখানেই তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। দূতাবাস থেকে ফিরে বিকেল ৪টায় রমনার প্রবীণ যাজক ভবনে বাংলাদেশের বিশপদের বিশেষ সভায় বক্তব্য দেবেন পোপ। বিকেল ৫টায় আর্চবিশপ হাউসের মাঠে শান্তির জন্য আন্তঃধর্মীয় সমাবেশেও বক্তব্য দেবেন তিনি।
সফরের তৃতীয় দিনে শনিবার পোপ ফ্রান্সিস তেজগাঁও মাদার তেরেসা ভবন, তেজগাঁও কবরস্থান, পুরাতন গির্জা পরিদর্শন এবং সবশেষে নটর ডেম কলেজে যুব সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। তিনদিনের সফর শেষে শনিবার বিকেল ৫টায় রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।
আর/এসএইচ