ক্যান্সারের কাছে কি হেরে যাবে মেহেদী?
প্রকাশিত : ০৯:৩৯ পিএম, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ০৯:৫৩ পিএম, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭ বুধবার
(ফাইল ফটো)
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু…। ভুপেন হাজারিকার একটি বিখ্যাত গান। মানুষ একে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মাত্র কয়েক লাখ টাকার জন্য একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর জীবন অকালেই ঝড়ে যাবে এটা কি হতে পারে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে যে স্বপ্নের জাল বুনে ছিল মেধাবী শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান তার সেই স্বপ্ন আজ মলিন। নিভে যেতে বসেছে তার জীবন প্রদীপ। গরিব বাবা-মায়ের আশা পূরণের আশায় ২০০৫-২০০৬ শিক্ষা বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। সেই কুষ্টিয়ার অজোপাড়া আব্দালপুর গ্রাম থেকে।
মেধার স্বাক্ষরও রেখেছেন মেহেদী। বিএসএস সম্মান ও এমএসএস সম্পন্ন করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। এছাড়াও সে ইতোমধ্যে বিসিএসসহ প্রায় ৩২টি সরকারি চাকরির ভাইভা দিয়েছেন। আরও আবেদন করা রয়েছে বেশ কয়েকটি চাকরির আবেদন। কিন্তু
সর্বনাশা ক্যান্সার সমস্ত স্বপ্ন নীলাভ করে দিচ্ছে তার। জীবনঘাতী ক্যান্সারের চিকিৎসায় সর্বশান্ত মেহেদীর পরিবার। ইতোমধ্যে মেহেদীর গরিব বাবা -মা প্রায় ৯ লাখ টাকা তার চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন। কিন্তু তার চিকিৎসার জন্য আরও লাখ দশেক টাকার প্রয়োজন বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। যা দরিদ্র বাবা-মায়ের পক্ষে যোগান দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। উপায়ন্তর না দেখে জীবন বাঁচাতে অন্যের সাহায্য প্রত্যাশা করছেন এ তরুণ।
মেহেদী বলেন, ‘বিসিএসসহ ৩৩টি মৌখিক পরীক্ষায় (সরকারি চাকরির) অংশ নিয়েছি। ভাগ্যদোষে একটিতেও হলো না। আরও ২০টি চাকরির দরখাস্ত করে রেখেছি। ধৈর্য হারাইনি। জানি, স্বপ্ন দিয়েই স্বপ্ন জয় করতে হয়। কিন্তু ক্যান্সারের কারণে জীবনের এ বেলাতেই স্বপ্নযাত্রা দমে যাবে, তা কখনও ভাবিনি’।
রোগের বর্ণনা দিতে তিনি গিয়ে বলেন, ডান হাতের বুড়ো আঙুলের নখে একটি চিকন কাল দাগ ধরা পড়ায় গেল ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডা. আবেদা সুলতানার কাছে যাই। সেখানেই ধরা পড়ে ম্যালিগনেন্ট ম্যালানোমা (এক জাতীয় স্কিন ক্যান্সার)। এরপর ডাক্তার অধ্যাপক এম ইউ কবীর চৌধুরীর স্মরণাপন্ন হলে তিনি পরীক্ষায় ক্যানসারের জীবাণু ধরা পড়ায় আঙুলের নেইল প্লেট তুলে ফেলেন। এরপরেও জটিলতা থেকে যায়। পরে বাংলাদেশের ডাক্তাররা ভারতে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ দেখানোর পরামর্শ দেন।
অবশেষে গত ১১ নভেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ে অ্যাপোলো বিশেষায়িত হাসপাতালে গিয়ে আঙুল কেটে ফেলা হয় বলে জানান মেহেদী। তিনি বলেন, আঙুলের কেটে ফেলা অংশে ফের সমস্যা দেখা দেয়ায় ডাক্তাররা দ্রুত অপারেশন করার পরামর্শ দেন। এযাবৎ প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে চিকিৎসায়। যেটুকু জমি ছিল, তাই বিক্রি করে বাবা অর্থের যোগান দিয়েছেন।
ফের অপারেশন, ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আরও লাখ দশেক টাকা লাগবে উল্লেখ করে বলেন, আর পারছি না। কিছুই নেই পরিবারে। বাঁচার আকুতি থেকেই হৃদয়বান মানুষের কাছে সাহায্য প্রত্যাশা করছি।
মো. মেহেদী হাসান, হিসাব নম্বর- 1711010322992, ডাচ বাংলা ব্যাংক, সাত মসজিদ শাখা, ধানমন্ডি। বিকাশ নম্বর- 01786518251(পারসোনাল)
এসএইচ/