পোশাক কারখানায় সিইবিএআই প্রশিক্ষণের দাবি
প্রকাশিত : ০৮:০৪ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার
দেশের সব পোশাক কারখানায় সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রির (সিইবিএআই) প্রশিক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে। গত ২০১৪ সালে শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ করে তোলা কয়েকজন পোশাক শ্রমিক এ দাবি জানায়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বাংলাদেশ গার্মেন্টস মেনুফ্যাকচারিং এন্ড এক্সপোর্টাস এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ভবনে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডার শেয়ারিং মিটিং আইএলও আরএমজি সেন্টার অব এক্সিলেঞ্চি প্রজেক্ট’সভায় তারা এ দাবি জানায়।
সভায় বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এইচই ছারলত্তা শিলিটার, বাংলাদেশ ইমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিএফএফ) প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস মেনুফ্যাকসার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড-এর (বিটিইবি) মোস্তাফিজুর রহমান, ইনহ্যান্স এন্ড মৌরিজ (এইচ এন্ড এম) বাংলাদেশের সাসটেইনেবল ম্যানেজার কিরান গোকাথোতিসহ পোশাক শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত পোশাক শ্রমিক মোসাম্মাৎ শিরিনা আক্তার বলেন, আমি একটা কাজের জন্য বিভিন্ন পোশাক কারখানার দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কিন্তু দক্ষতা না থাকার কারণে তেমন কাজ মেলাতে পরিনি। সবশেষে যখন আমি সিইবিএআই প্রশিক্ষণের সন্ধান পেলাম, তখন মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে আমি দক্ষ হয়ে উঠলাম। আর দক্ষ হওয়ার কারণে আমার বেতন ৫ হাজার ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৯ হাজার ৫০০ টাকা হল। এখন আমি আমার পরিবার নিয়ে অনেক সুখে আছি। তাই আমি সংশ্লিদের কাছে দাবি রাখবো, এ প্রশিক্ষণের সুযোগ যেন দেশের সব কারখানায় করা হয়। তাহলে আমার মতো অনেক অসহায় দরিদ্র তাদের দারিদ্রতা ঘুচাতে পারবে।
সব কারখানায় প্রশিক্ষণের দেওয়ার একই দাবি জানিয়ে পোশাক শ্রমিক আরিফা আক্তার বলেন, সিইবিএআই প্রশিক্ষণ আমার চোখে আলো এনে দিয়েছে। আমি যেন অর্থের টানাপোটড়নে চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। দক্ষতা না থাকার কারণে কোথাও কাজও হচ্ছিল না। এ প্রশিক্ষণের সুযোগে আমার পরিবার এখন ভালোভাবেই চলে যায়।
বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দেশের পোশাক শিল্পে অগ্রগতি ধরে রাখতে আমাদের এ সেক্টরে নিয়োজিত শ্রমিক, ব্যবস্থাপকসহ সব ধরনের লোকবলকে দক্ষ করে তোলার বিকল্প নেই। সিইবিএআই সে কাজটি করে যাচ্ছে। আশা করি, ভবিষ্যতেও এ কাজ অব্যাহত থাকবে।
সভায় আতিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীতে ৫০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন গবেষণা, দক্ষ শ্রমিক এবং মধ্যম সারির ব্যবস্থাপক। এ জন্য আমরা কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় আইএলও এবং সিইবিএআইয়ের সঙ্গে এই চুক্তি করা হয়। মাত্র চার বছর আগের নেওয়া উদ্যোগে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। দেশের পোশাক শিল্পের আরও সমৃদ্ধি আনতে এ সাফল্যের ধারাবাহিকতা রাখতে হবে।
সভায় আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস রেডি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে এ খাতের ব্যাপক সমৃদ্ধি আনা সম্ভব। শ্রমিক ও ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা তৈরিতে সিইবিএআই-এর প্রশিক্ষণের ফলাফল জানতে আমি দেশের সব কারখানাকে অনুরোধ করবো। কারণ দক্ষতা বাড়াতে যতটুকু খরচ হয়, উৎপাদন বাড়ার মাধ্যমে তার চেয়ে বেশি অর্থ উঠে আসে।
তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিক, মধ্যম সারির ব্যবস্থাপনা কর্মীর দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করতে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমই এর গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রির (সিইবিএআই) সঙ্গে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) একটি সমঝোতা স্মারক সই হয় ২০১৪ সালে। সে আলোকেই এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
আরকে/ডিডি/