বেশি বেশি সেলফি তোলা মানসিক রোগ : গবেষণা
প্রকাশিত : ০৪:৩৬ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ রবিবার
সেলফি এমন এক ছবি, যা তুলেতে গিয়ে কত প্রাণ যায়, তা আর আজ গুণে শেষ করা যাবে না। তবু সেলফি নেওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। সেলফি নেওয়া প্রবণতাকে মেন্টাল জিসঅর্ডারের লক্ষণ হিসেবেই বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিপদের ঝুঁকি নিয়ে এমন ছবি তোলার অভ্যাসকে চিকিৎসকরা একাদিক কেস স্টাডির পর নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে, যারা সেলফি নিতে খুব পছন্দ করেন তারা আসলে এক ধরনের মানসিক রোগের শিকার।
নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং ত্যাগরাজ স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের একদল অ্যানালিস্ট এই বিষয়ে গবেষণা চালাতে গিয়ে লক্ষ করেছিলেন যে, যারা কথায় কথায় সেলফি নিয়ে থাকেন তাদের ব্রেনের গ্রাফ সাধারণ মানুষদের থেকে একেবারেই আলাদা। এর পর পরই শুরু হয় আরও বেশ কিছু গবেষণা। তাতেও একই কথা উঠে আসে।
বিশেষজ্ঞরা এই মেন্টাল ডিসঅর্ডারকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন, বর্ডারলাইন, অ্যাকিউট এবং ক্রনিক। যারা দিনে কম করে তিনটে সেলফি তোলেন, কিন্তু সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন না, তারা বর্ডারলাইনে রয়েছে। অন্যদিকে যারা দিনে তিনবার সেলফি নিয়ে প্রতিবারই সোস্যাল মিডিয়ার পোস্ট করেন, তারা অ্যাকিউট অবস্থার শিকার। আর একেবারে শেষে আসে ক্রনিক মেন্টাল ডিসঅর্ডার। এই বিভাগে রাখা হয় তাদেরকেই যারা দিনে ছয়বারের বেশি সেলফি তুলে সো্স্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে।
সেলফি নেওয়ার এমন প্রবণতা শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। যেমন-
১. সেলফি মৃত্যু ডেকে আনে: ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত হওয়া একটি স্টাডিতে দেখা গেছে, সারা বিশ্বে প্রায় ১২৭ জন সেলফি নিতে গিয়ে মারা পরেছিলেন। সেলফি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর অনেক প্রয়াস শুরু হলেও কতটা সফল হবো জানি না। কারণ আমরা বড়ই একগুঁয়ে।
২. নার্সিসিজমের শিকার: নার্সিসিজম মোটেও সাধারণ মানসিক অবস্থা নয়। ওহিয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক প্রায় ১০০০ জন পুরুষের উপর একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন দেখেছেন, যার নিজের ছবি তুলতে দিনের বেশিরভাগ সময়ই মত্ত থাকেন, তারা আসলে নার্সিসিজমের শিকার।
৩. মানসিক শান্তি দূর হয়: গবেষণায় দেখা গেছে সেলফি নেওয়ার সময় আমাদের মস্তিষ্কের উপর নানা কারণে চাপ পরতে থাকে। ফলে স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
৪. ত্বকের সৌন্দর্য কমে: বেশকিছু গবেষণায় দেখা গেছে, সেলফি নেওয়ার সময় মোবাইল ফোনের রেডিয়েশনের প্রভাব মারাত্মকভাবে পরে মুখের উপর। ফলে স্কিন টোন খারাপ হতে শুরু করে।
৫.কুনুইয়ে যন্ত্রণা: অনেক স্টাডিতে দেখা গেছে, যারা খুব সেলফি নিতে পছন্দ করেন, তাদারে বেশিরভাগই কুনুইয়ের যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন। একটু খেয়াল করে দেখুন, সেলফি নেওয়ার সময় আমাদের কুনুই যে অ্যাঙ্গেলে থাকে তা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
আতএব, মাত্রাতিরিক্ত সেলফি নেওয়ার অভ্যাস যে, বিপদের তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সূত্র: বোল্ড স্কাই
একে// এআর