ইসিকে ৩ বাম দলের ১৮ দফা সুপারিশ
প্রকাশিত : ০২:৪৭ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০২:৪৭ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি যৌথভাবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ১৮ দফা সুপারিশ দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির কার্যালয়ে এক বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার কাছে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন এই তিন বাম দলের নেতারা।
দল তিনটি বলছে, এসব সুপারিশ কমিশনের নিজস্ব উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এর জন্য সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন প্রয়োজন হবে না।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কিছু বিষয়ে সিইসির সঙ্গে এক জরুরি মতবিনিময় সভায় বসেন সিপিবি, বাসদ ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে আমরা তিন দল আলাদা আলাদা মতামত কমিশন দিয়েছে। আমরা মনে করি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা জরুরি। আমাদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করতে হবে। আবার অনেক সুপারিশ আছে যা কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি যাদের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। সেসব দলের সদস্যরা যাতে হুট করে অন্য দলের প্রার্থী হতে না পারে সেই বিষয়ে নজর রাখা। রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট দলের কমপক্ষে ৫ বছর সক্রিয় সদস্য হতে হবে।
এছাড়া নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে প্রার্থীদের জন্য পরিচিতি সভার আয়োজন ও নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিপিবি, বাসদ ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১৮ দফা সুপারিশ হচ্ছে-
১. সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত ৫ হাজার টাকা করতে হবে।
২. ভোটার তালিকার সিডি বিনামূলে দিতে হবে।
৩. সকল প্রার্থীর টিআইএন বাধ্যতামূলক করার পরিবর্তে আয়করযোগ্যদের টিআইএন বাধ্যতামূলক করা।
৪. অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের সুবিধা।
৫. তফশিল ঘোষণার পর বেসমারিক প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনীসহ আইন শৃংখলা বাহিনী, মন্ত্রিপরিষদ, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে চলবে।
৬. রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হলে কমপক্ষে ৫ বছর দলে সক্রিয় সদস্য হতে হবে।
৭. মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।
৮. প্রতি এলাকায় কমিশন কর্তৃক প্রার্থীদের পরিচিত সভা করতে হবে।
৯. প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
১০. প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় মনিটরিং করতে হবে।
১১. নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের হিসাব ভোটের ৭ দিনের মধ্যে দিতে হবে। নয়তো নির্বাচিতদের শপথ বন্ধ করতে হবে।
১২. নির্বাচনে যেকোন ধরনের পেশি শক্তির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
১৩. নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার ও সাম্প্রদায়িকতা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে।
১৪. প্রচারণায় যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে তার যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া আচরণ বিধি লংঘনকারীদের প্রার্থীতা বাতিল করতে হবে।
১৫. সীমানা নির্ধারণ স্বচ্ছ করা এবং ভোটারের সম সংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করা।
১৬. ভোট কেন্দ্রের তালিকা নির্বাচনে দুই সপ্তাহ আগে প্রার্থীদের দিতে হবে।
১৭. ইভিএম চালু না করা।
১৮. আরপিও;র অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক ধারা বাতিল করা। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহের বিধান বাতিল করতে হবে।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, দলের জাতীয় পরিষদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাহিদুল হক মিলু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান উপস্থিত ছিলেন।
টিআর/এমআর