ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

টেস্টিং সল্টে রয়েছে ভয়ংকর বিষ

প্রকাশিত : ০৫:১৫ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ শুক্রবার

খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত টেস্টিং সল্ট নামে মারাত্মক বিষ গ্রহণ করছে মানুষ। এটি একটি রাসায়নিক উপাদান, যা খাবারকে মুখরোচক বা মজাদার করার লক্ষ্যে বেশি ব্যবহৃত হয়। এটি অধিক পরিমাণে ব্যবহার করলে স্বায়ুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলছেন বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন জটিল রোগের ঝুঁকি আছে এতে, অথচ কোনো পুষ্টিগুণই নেই।

টেস্টিং সল্ট প্রধানত চায়নিজ ও থাই খাবারে এবং পাশাপাশি নামিদামি হোটেল, বিয়ে, মেজবানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের রান্নায় অধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। অনেকে ঘরোয়াভাবে তৈরি খাবারেও ব্যবহার করেন এই সল্ট।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা টেস্টিং সল্টকে স্নায়ুবিষ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিশেষজ্ঞরা জানান, টেস্টিং সল্ট মস্তিস্ককে উদ্দীপ্ত করে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি করে যাতে মনে হয়, খাবারটি খুবই সুস্বাদু। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর টেস্টিং সল্টমিশ্রিত খাবার সরবরাহ নিষিদ্ধ করতে সরকারকে উদ্যোগী হতে আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেস্টিং সল্ট মানবদেহে প্রবেশ করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে বিষিয়ে তোলে। ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ঘুম কম হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে স্বাভাবিক খাবার অরুচিকর লাগে। কাজে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

নিয়মিত টেস্টিং সল্ট ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাথাব্যথা, খিঁচুনি, হরমোন নিঃসরণে গোলযোগ, শিশুদের ক্ষেত্রে লেখাপড়ায় কম মনোযোগ, মনোবৈকল্য, অতিরিক্ত ছটফটানি ভাব, মুটিয়ে যাওয়া, হাঠৎ ক্ষেপে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অ্যাজমায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা টেস্টিং সল্ট খেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া মস্তিস্কে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয় এটি।

১৯০৮ সালে জাপানি রসায়নবিদ ও টোকিও ইমপেরিয়াল ইউনিভার্সিটির গবেষক কিকুনেই ইকেতা টেস্টিং সল্ট উদ্ভাবন করেন। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ও পরে চীনে খাবার সুগন্ধিকারক হিসেবে এটি জনপ্রিয়তা পায়। তবে বর্তমানে চীনে টেস্টিং সল্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশের বারবানকি এলাকায় এক খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা একটি বহুজাতিক কোম্পানির খাদ্যে টেস্টিং সল্ট পাওয়ার প্রমাণ দেওয়ার পর দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর সরকার ওই বহুজাতিক কোম্পানি পণ্যটি নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়।

খাবারের স্বাদবর্ধনকারী টেস্টিংসল্টের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হয়েছে। এবার সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব আপনার।

 

একে/এমআর