ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

‘সবার জন্য আবাসন নিশ্চিতে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে’

প্রকাশিত : ০৯:৫৪ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:০৭ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ শনিবার

দেশের ১৪টি বড় শিল্প খাতের মধ্যে আবাসন শিল্পের আবস্থান তৃতীয়। শিল্পের কর্মকান্ডের সঙ্গে দেড় কোটি মানুষের জীবিকা ১২ হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন জড়িত। বর্তমানে দেশের বেসরকারি ব্যাংক থেকে সিঙ্গেল ডিজিটে আবাসন ঋণ দেওয়া শুরু হয়েছে। এতে ক্রেতাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও খুশি। তবে আবাসন খাতে বছর জেুড়েই থাকে মন্দাভাব। মন্দা কাটাতেই আবাসন ব্যবসায়িরা বেছে নিয়েছেন আবাসন মেলা। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাকিত সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আবাসন মেলা-২০১৭।

এ সব বিষয় নিয়ে একুশে টেলিভিশন অনলাইনের মুখোমুখি হয়েছেন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (রিহ্যাব) পরিচালক কামাল মাহমুদ। একুশে টেলিভিশন অনলাইনের পক্ষে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ইয়াসির আরাফাত রিপন।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আবাসন খাতের বর্তমান অবস্থা কি?

কামাল মাহমুদ: বর্তমানে আবামন খাত বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। আমরা আশা করছি সামনের দিনগুলোতে ভাল অবস্থায় থাকবে। এখন এ খাতে ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে। যা কিছু কয়েক বছর আগেও ছিল না।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: রিহ্যাবের আয়োজনে ঢাকায় পাঁচ দিনব্যাপী আবাসন মেলা শুরু হয়েছে। মেলায় বিক্রেতাদের প্রত্যাশা কি?

কামাল মাহমুদ: দেশের আবাসন শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘রিহ্যাব ফেয়ার-২০১৭’ যা গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে। ‘স্বপ্নীল আবাসন, সবুজ দেশ লাল সবুজের বাংলাদেশ’-এ স্লোগানে এবারের মেলায় ২০৩টি স্টল রয়েছে। এছাড়া ৩০টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩টি অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

এর ফলে যাচাই-বাছাই করে পছন্দের ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ রয়েছে ক্রেতাদের জন্য। আর মেলাকে ঘিরে আমরা ব্যবসায়ীরা সব সময়ই আশাবাদী থাকি। বিগত মেলাগুলো থেকে ভালো ফলও পেয়েছি। এবারের মেলায়, বিশেষ করে ছোট ফ্ল্যাট নিয়ে আসার চেষ্টা করছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা ক্রেতাদের ফ্ল্যাটের জন্য ঋণ দিতে চায়।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ ব্যবস্থার কথা বলে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এখন ব্যংকগুলোও এগিয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে এ খাত কতটুকু এগুচ্ছে?

কামাল মাহমুদ: প্রথমেই ধন্যবাদ জানাব বেসরকারি যে সব ব্যাংকগুলো এগিয়ে এসেছে তাদের। তবে শুধু বেসরকারি ব্যাংকগুলো আসলেই হবে না সরকারি ব্যাংকগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।

এখনও সরকারি ব্যাংক হাউজিংলোনের ব্যবস্থা না করায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষ ফ্লাট কিনতে পারছেন না। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক এগিয়ে আসলে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষ ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন। তবে ব্যাংক ঋণ অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী হতে হবে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনারা ২০হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল সুবিধা চান। এতে কে বেশি লাভবান হবে, ক্রেতা না বিক্রেতা?

কামাল মাহমুদ: অবশ্যই ব্যবসায়ীরা ক্রেতার সুবিধার্তেই সরকারের কাছ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল চেয়েছে। এতে ক্রেতারা এখান থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা পাবে। ক্রেতারা সুবিধা পেলে আবাসন ব্যবসায়ীরাও কিছুটা সুফল পাবে। কারণ তাদের অবিক্রিত ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি হবে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: এ খাতে বর্তমানে অবিক্রিত ফ্ল্যাটের পরিমাণ কত?

কামাল মাহমুদ: বর্তমানে আবাসন খাতে প্রায় ৮ হাজার ফ্ল্যাট অবিক্রিত রয়েছে। তবে এ সংখ্যা আগামীতে কমে আসবে। বর্তমানে আবাসন খাতে ক্রেতার আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। আবার ভূইফোঁড় কোম্পানিগুলোও কমে এসেছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে সরকারের রাজস্বখাতে ভাল ভূমিকা রাখবে আবাসন খাত।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: এ খাতের বর্তমান সমস্যা গ্যাস-বিদ্যুৎ। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?

কামাল মাহমুদ: এটা বড় ধরনের সমস্যা না, পূর্বেও ছিল না। র্পথিবীর অন্য দেশেও এলপিজি গ্যাসের মাধ্যমে গ্যাস সমস্যার সমাধান করে। তাছাড়া গ্যাসের বিষয়টা ক্রেতারা জেনেই এখন ফ্ল্যাট ক্রয় করছে। যেহেতু গ্যাসের মজুত ফুরিয়ে আসছে আমরাও বিল্ডিংয়ের নিচে সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করছি। তাছাড়া বিদ্যুতের সমস্যা পূর্বে ছিল, এখন নেই। এগুলো বড় ধরনে সমস্যা না। এগুলোকে কাটিয়েই এ খাত সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনাকে ধন্যবাদ।

কামাল মাহমুদ: একুশে টেলিভিশন অনলাইনকেও ধন্যবাদ।