অনশনে শিক্ষকরা
না খেয়ে মরবো, তবু দাবি থেকে পিছু হটবো না
প্রকাশিত : ০৯:০০ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ০৯:০১ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ শনিবার
আমরা না খেয়ে মারা যাবো তবু দাবী থেকে পিছু হটবো না। এমনটিই বলছেন বৈষম্য দূরীকরণ ও নতুন করে বেতন গ্রেড নির্বাধণের দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনরত বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের নেতা আনিসুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরন করা হচ্ছে। যা মেনে নেওয়া যায় না। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের গ্রেড নিয়ে যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে এবং সামনে তাদেরকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেটা আমরা মেনে নিতে পারি না। তাদের সঙ্গে আমাদের এত পার্থক্য কোনোভাবেই থাকতে পারে না।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল নির্ধারণ এর দাবীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকাল ১০টা থেকে চলছে সারাদেশ থেকে আগত হাজার হাজার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের আমরণ অনশন।
ইটিভি অনলাইনকে শিক্ষক নেতা আনিসুর রহমান আরও বলেন, বর্তমানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেডে অর্থাৎ ১২,৫০০ টাকা বেতন পাচ্ছেন। আর আমরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেড অর্থাৎ ১০২০০ টাকা পাচ্ছি। ১৬ বছর চাকরির পর একজন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে একজন সহকারী শিক্ষকের বেতন ব্যবধান হবে ভাতাসহ প্রায় দ্বিগুন। বর্তমানে একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকরি শুরু করেন একজন সহকারী শিক্ষক সেই স্কেলে চাকরি শেষ করবেন। যা একজন সহকারী শিক্ষকের জন্য চরম বৈষম্য ও বাস্তবসঙ্গত নয়।
তিনি বলেন, এক সময় প্রধান শিক্ষক আর সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড ছিল এক। ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত আমরা একই গ্রেডে কাজ করেছি। ১৯৮৫ সালের শেষের দিকে এসে প্রধান শিক্ষকদের একধাপ উপরে দেওয়া হয়। ২০০৬ সালে এসে এটাকে দুই ধাপ পার্থক্যর মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে এসে প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের তিন ধাপ ব্যবধান তৈরি হয়। তারা এখন ১১তম গ্রেডে আর আমরা ১৪তম। এখন তাদের জন্য আবার ১০ গ্রেড দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এটা তো আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।
শিক্ষক মহাজোটের এই নেতা বলেন, প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের একটা ধাপের পার্থক্য থাকতে পারে। তাদের যদি ১১ হয় আমাদের ১২ হতে পারে। তাই আমরা আমাদের এই বৈষম্য দূরীকরণে আন্দোলনে নেমেছি। আমরা গত বছরও আন্দোলন করেছিলাম। শিক্ষামন্ত্রী আমাদের বলেছিলেন, তোমাদের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে আন্দোলন করার দরকার নেই। তোমরা বাড়ি ফিরে যাও। কিন্তু আমাদের সমস্যা সমাধা হয়নি। বরং আরো বাড়ছে। এখন আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন, অনশন চলবে। প্রযোজনে না খেয়ে মারা যাবো তবু এই দাবি আদায়ের আন্দোলন থেকে পিছু হটব না।
এসি / এআর