ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

এক হচ্ছে লাফার্জ-হোলসিম

প্রকাশিত : ০৩:৩৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ সোমবার

এক হচ্ছে লাফার্জ সুরমা ও হোলসিম। দীর্ঘ রফা-দফার পর অবশেষে হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানি কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লাফার্জ সুরমা। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৪০ টাকায় কোম্পানিটি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে লাফার্জ সুরমা। রোববার কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছেন বলে ঢাকা স্টক-এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে। 

এদিকে দুই জায়ান্ট কোম্পানির একত্রীকরণের খবরে পুঁজি-বাজারে হঠাৎ গতি ফিরে পেয়েছে লাফার্জ সুরমা। এতে কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে ফেললে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, রোববার কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫.৪ টাকা, যা মূল শেয়ারের ৯.৯৪ শতাংশের সমান। সকালের দিকে ৫৫.৬ টাকায় কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে ৫৯.৭০ টাকায়।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির ১৯.৭২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে। ১.১৯ শতাংশ বিদেশি ও ১৪.৪১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে। অন্যদিকে কোম্পানিটির ৬৪.৬৮ শতাংশ শেয়ার নিজের হাতেই রাখা হয়েছে।

প্রায় তিন মাস ঝুলে থাকার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত অর্থেই মালিকানা পরিবর্তনের অনুমতি পেয়েছে হোলসিম সিমেন্ট। এতে চুক্তিমূল্যের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামেই বিক্রি করতে হলো হোলসিমকে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জুলাইয়ে বৈশ্বিকভাবে লাফার্জ ও হোলসিম একীভূত হওয়ার পর বিশ্বের সিমেন্ট খাতের বৃহৎ দুই জায়ান্ট এক ছাতার নিচে এসে ‘লাফার্জ-হোলসিম’ নামে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিমেন্ট কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী দুই গোষ্ঠীর ব্যবসা একীভূত হয়ে আসে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর লাফার্জ সুরমা হোলসিম সিমেন্টর শতভাগ শেয়ার ক্রয়ের তথ্য জানিয়েছিল।

ওই সময় কম্পানিটি জানায়, পরিচালনা পর্ষদ ১১ কোটি ৭০ লাখ ডলারে হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের শতভাগ সম্পদ কিনে তা একীভূত করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে নিয়মানুযায়ী বিদেশি কোনো কোম্পানি ক্রয় করতে হলে, ওই কোম্পানির টাকা পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী হোলসিম ওই অর্থ পাঠাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমতি চায়।

তবে পর্যালোচনার ভিত্তিতে এত পরিমাণ অর্থ পাঠানোর বিপক্ষে মত দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এক চিঠিতে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের অথরাইজড ডিলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে ছয় কোটি ২৫ লাখ ২৭ হাজার ১৮৮ ডলারে (১৭ সেপ্টেম্বরের বিনিময় হারের ভিত্তিতে) হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার অধিগ্রহণ ও সে অর্থ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হোল্ডারফিন বি ভির নামে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়। সেই হিসাবে দাম দাঁড়ায় ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

প্রসঙ্গত, দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের মুখ্য শেয়ারহোল্ডার লাফার্জ গ্রুপ। অন্যদিকে শেয়ারবাজারের বাইরে থাকা হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের ৭৪ শতাংশ শেয়ার ছিল হোলসিম গ্রুপ তথা হোল্ডারফিন বি ভির হাতে। ২১ শতাংশ সিয়াম সিটি ও সিয়াম সিমেন্ট এবং বাকি ৫ শতাংশ ছিল স্থানীয় ট্রান্সকম গ্রুপের হাতে। তবে একীভূত প্রক্রিয়া সহজীকরণ করতে ‘হোল্ডারফিন বি ভি’ সিয়াম সিটি ও ট্রান্সকম গ্রুপের হাতে থাকা ২৬ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়।

এমজে / এআর