রাজস্ব আয়ে বড় ভূমিকা রাখবে আবাসন খাত
প্রকাশিত : ০৭:৩৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ১০:৩৫ এএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার
আবাসন খাত সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এ খাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে সরকার ও বেসরকারি সংস্থার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। ফ্ল্যাট কিনতে ঋণ সহজলভ্য, সুদহার কমানো, জটিলতা নিরসন, রেজিস্ট্রেশন সহজকরণ, সরকারি সংস্থা হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের অর্থের জোগান বাড়ানো, বহুজাতিক সংস্থার তহবিলের জোগানসহ নানামুখী পদক্ষেপ। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকগুলো মতো সরকারি ব্যাংকগুলোতে এখন পর্যন্ত সেভাবে সহজলভ্য ঋণ সুবিধা দিতে এগিয়ে আসেনি।
সরকারি ব্যাংকগুলো সহজলভ্য ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে স্বপ্নের আবাসন খাত রাজস্ব আয়ে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) পরিচালক ও আবাসন মেলা স্ট্র্যান্ডিং কমিটির চেয়াম্যান শাকিল কামাল চৌধুরী সম্প্রতি একুশে টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ আশা বাদ ব্যক্ত করেন। আবাসন খাতের বর্তমান অবস্থা ও আগামী সম্ভাবনাসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলছেন একুশে টিভি অনলাইনের সঙ্গে। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন ইটিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান।
একুশে টিভি: আবাসন খাতের বর্তমান অবস্থা কেমন?
শাকিল কামাল চৌধুরী: আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করছে। সবচেয়ে বড় কথা এই খাতে ক্রেতাদের যথেষ্ট আস্থা দেখা যাচ্ছে। যা কিছু দিন আগেও ছিল না। ক্রেতাদের আস্থার সংকট কেটেছে। আমরা আশা করি সরকারের সহযোগিতা পেলে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবো।
একুশে টিভি: রিহ্যাবের আয়োজনে ঢাকায় পাঁচ দিনব্যাপী আবাসন মেলা শেষ হচ্ছে আজ। আপনাদের প্রত্যাশাই কী?
শাকিল কামাল চৌধুরী: এবারের মেলায় ২০৩ টি স্টল ছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে ২৪ টি। ফলে যাচাই-বাছাই করে পছন্দের ফ্ল্যাট কেনার এটা সুবর্ণ সুযোগ হয়েছিলো। আমরা অনেক আশাবাদী কারণ এবারের মেলাতে দর্শনার্থীদের সংখ্যাও অনেক বেশি ছিল।
এর ফলে এবারের মেলা ঘিরে ব্যবসায়ীসহ আমরাও আশাবাদী। বিগত মেলাগুলো থেকে ভালো ফলও পেয়েছি। এবারের মেলায়, বিশেষ করে ছোট ও প্রস্তুত ফ্ল্যাট এর চাহিদা বেশি ছিল। তাই ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে সেরকম ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করছে রিহ্যাব সদস্যরা। এছাড়া কিছু ব্যাংক রয়েছে, যারা ক্রেতাদের ফ্ল্যাটের জন্য ঋণ দিতে চায়।
একুশে টিভি: সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ ও তহবিলের ব্যবস্থা করলেই এ খাতের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে?
শাকিল কামাল চৌধুরী: ব্যাংক থেকে কম সুদে ঋণসুবিধা পাওয়া যায় না, তাই মাধ্যম আয়ের মানুষ ফ্ল্যাট কিনতে পারেন না। এজন্যও স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি গৃহঋণ দরকার। এক্ষেতে বেসরকারি বেশকিছু ব্যাংক এগিয়ে আসছে। সরকারের মাধ্যেমে যদি সরকারি ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসে তাহলে আবাসন থেতে সংকট কমবে।
ছাড়া ঢাকা শহরে বর্তমানে জমি পাওয়া খুবই দুরূহ। দামও অনেক। সে জন্য সরকার যদি ঢাকার আশপাশের শহরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে দেয়, তবে বাকি কাজ রিহ্যাব সদস্যরা করে নেবে। এবারের মেলাতে আমরা অনেক আশাবাদী কারণ মেলাতে দর্শনার্থীদের চেয়ে ক্রেতার সংথ্যা বেশি ছিল। আর আমরা চাই সরকারের কাছ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল। এতে ক্রেতারা এখান থেকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ সুবিধা পাবে। ক্রেতারা সুবিধা পেলে আবাসন ব্যবসায়ীরাও সুফল পাবে।
একুশে টিভি: আপনারা সব সময়ই আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত টাকার বিনিয়োগের কথা বলেন। সরকারও সুযোগ দেয়। বিনিয়োগ কি পরিমাণ আসছে?
শাকিল কামাল চৌধুরী: এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। পাচার হওয়া এই অর্থের বড় অংশ গেছে মালয়েশিয়া বা কানাডার বেগম পল্লীতে ফ্ল্যাট ও বাড়ি কেনায়। তবে সরকারের সহযোগিতার সঙ্গে আমরা যদি সুযোগ তৈরি করে দিই, তবে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। সরকারের রাজস্বও বাড়বে।
একুশে টিভি: এ খাতের বর্তমান গ্যাস বিদ্যুৎএ বিষয়ে আপনার মতামত কি?
শাকিল কামাল চৌধুরী: এ খাতে গ্যাস কিছুটা সমস্যা আছে। সরকার সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আশা করছি। এছাড়া আমাদের যেহুতু গ্যাসের মজুদ সিমিত। ইতোমধ্যে আমরা বিল্ডিং-এর নিচে সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করছি। তাছাড়া বিদ্যুতের সমস্যা অনেক আগে ছিলো। এগুলো বড় ধরনের সমস্যা না। আশা করি এসকল সমস্যা কাটিয়ে উঠে আবাসন খাত সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
একুশে টিভি: আপনাকে ধন্যবাদ।
শাকিল কামাল চৌধুরী: একুশে টিভি পরিবারকেও ধন্যবাদ।