ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

যেভাবে গ্রেফতার হন অনন্য মামুন

মালয়েশিয়া থেকে শেখ আরিফুজ্জামান

প্রকাশিত : ০৫:০৯ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ০৩:০৯ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আড়ালে মানব পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা অনন্য মামুনকে  পুত্রা কোর্ট কন্ডোমিনিয়ামের এপার্টমেন্ট থেকে গ্রেফতার করে মালয়েশিয়ান পুলিশ।

কুয়ালালামপুরে ‘সিনেমাটিক বাংলাদেশি নাইটস’ নামের কনসার্টে অংশ নিতে মামুনের আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে ৫৭ জনের একটি দল দেশটিতে আসে। যেখানে ছিলেন তারকা কণ্ঠশিল্পী, ব্র্যান্ড, নির্মাতা, সাংবাদিক এবং চিত্রনায়ক-নায়িকা।

জানা গেছে, অনন্য মামুনকে যখন আটক করা হয় সে সময় সংগীতশিল্পী এইচএম রানা অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী।  তিনিও সেই কনসার্টে অংশ নিতে ৫৭ জনের বহরে আসেন। 

রানা এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা যে অ্যাপার্টমেন্টে ছিলাম সেখানেই ঘটনাটি ঘটে। পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমি। অনন্য মামুন যে এমন একটি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তার কোনও কিছুই জানতাম না।  আমি যে অ্যাপার্টমেন্টে ছিলাম সেখানেই রাখা হয়েছিল পাচার হওয়া মানুষদের।  তারা ছিলেন ২০ তলায়। আমি, নায়ক ইমন-নিরব ও উপস্থাপক দেবাশীষ বিশ্বাস ছিলাম একই এপার্টমেন্টে।  পুরো ভবনটি ২৬ তলা।  বাকিরা অন্য একটি হোটেলে ছিলেন।

এদিকে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ এয়ারপোর্টে বেশ কয়েকজনকে আটক করে।  তাদের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শিকার করেন অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে অনুষ্ঠানের নামে মালয়েশিয়া আনা হচ্ছিল।  এ বাবদ অনন্য মামুন প্রতিজনের কাছ থেকে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ পর্যন্ত টাকা নিয়েছেন।

এ সময় মালয়েশিয়ান পুলিশ সাদা পোশাকে বাকি ব্যক্তিদের ধরতে জালান ইপোর পুত্রা কোর্ট কন্ডোমিনিয়ামের এপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে অনন্য মামুনের দুই সহযোগী রাকিব ও মিরাজসহ ২০ জনকে আটক করেন। 

এদিকে, প্রধান সহকারী মিরাজের সঙ্গে ১০ হাজার রিঙ্গিতের কন্ট্রাকে তাদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে পুলিশের সঙ্গে চুক্তি হয়। এ জন্য অনন্য মামুনকে খবর দিয়ে টাকা নিয়ে হাজির হতে বলে। 

এ সময় রাকিব ও মিরাজ মামুনকে ফোন দিয়ে বলেন দুই লাখ টাকা দিলেই সবাইকে ছেড়ে দেবে। সেই মোতাবেক মামুন, শিবা ও একজন মহিলাসহ যখন এপার্টমেন্টে প্রবেশ করে তখন তাদেরকে আটক করা হয়। 

এদিকে অনন্য মামুনের ঘটনায় মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটিতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। তারা অনন্য মামুনসহ তার সঙ্গে বাকী সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। 

কমিউনিটির কয়েকজন অভিযোগ করেন, যারা মালেয়শিয়াতে কালচারাল প্রোগ্রাম করতে সহযোগিতা করেছে তারা নিশ্চয় জানত, তা নাহলে এত বড় গেইম করা সহজ হতো না। এই অনুষ্ঠানের আয়োজকসহ সব সহযোগীদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে তলব করা হউক এবং অপরাধ কর্মে সহযোগিতা কারীদের শাস্তি না হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না বলে উল্লেখ করেন। 

 

এসএইচ/