ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

দেশে ৩ বছরে ব্লগার, লেখক ও প্রকাশকদের উপর হামলায় নিহত ৮, আহত ১০

প্রকাশিত : ০৯:৩০ এএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ শুক্রবার | আপডেট: ০৪:২১ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ শুক্রবার

২০১৩ সাল থেকে ২০১৫, এই ৩ বছরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তমনা ব্লগার, লেখক ও প্রকাশকদের উপর ১৩টি হামলায় ৮ জন নিহত ও ১০ জন আহত হন। এ’সব ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম, ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ আনসারউল্লাহ বাংলাটিমকে দায়ি করেছে পুলিশ। ৮ ব্লগার হত্যাকান্ডের মধ্যে মাত্র ১টি ঘটনার বিচার হয়েছে। দু’টি মামলা বিচারাধীন আর অন্য ৫টি হত্যা মামলায় অগ্রগতি বলতে তেমন কিছুই নেই। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তবুদ্ধি চর্চা আর যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার কারণে ২০১৩ সালের শুরুতেই মুক্তমনা ব্লগারদের উপর হামলা শুরু করে ধর্মান্ধ গোষ্ঠি। এর প্রথম শিকার হন আসিফ মহিউদ্দিন। ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর উত্তরায় কুপিয়ে আহত করা হয় তাকে। এ বছর ৫টি হামলার ঘটনায় ২ জন নিহত ও ৩ জন আহত হন। একই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে গণজাগরণমঞ্চ গড়ে উঠলে, মুক্তমনা ব্লগারদের উপর হামলা ও হত্যার ঘটনা সংগঠিত রূপ নেয়। মাত্র ১০ দিন পর ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পলাশনগরে খুন হন ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার। ৯ এপ্রিল অপর এক হামলায় গুরুতর আহত হন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আরিফ রায়হান দ্বীপ। প্রায় ৩ মাস মৃত্যুর সাথে লড়ে হার মানেন তিনি। ২০১৪ সালেও ব্লগারদের উপর হামলা ও হত্যার ঘটনা অব্যাহত থাকে। এ বছর ৩টি হামলার ঘটনায় ১ নিহত হন ব্লগার আশরাফুল ইসলাম। আহত হন আরও ৩ জন । তবে ২০১৫ সালে বছর জুড়ে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর হিং¯্রতায় প্রাণ হারান ৫ জন; গুরুতর আহত হন আরও ৪ জন । ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলায় খুন হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তমনা লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়। ৩০ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁওয়ের দক্ষিণ বেগুনবাড়িতে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান, ১২ মে সিলেটে অনন্ত বিজয় দাস, ৭ আগস্ট রাজধানীর খিলগাঁওয়ে নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়, আর ৩১ অক্টোবর রাজধানীর আজিজসুপার মার্কেট এলাকায় খুন হন জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপন। নিহত ব্লগারদের মধ্যে আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলার বিচার নিম্ন আদালতে সম্পন্ন হয়েছে। বিচারে ২ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। ব্লগার  আরিফ রহমান দ্বীপ ও ওয়াশিকুর রহমান হত্যা মামলার বিচারধীন। অন্য ৫টি মামলার মধ্যে অভিজিৎ ও দীপন হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দা পুলিশের। আইনশৃংখলা বাহিনীর বক্তব্য যাই হোক, এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠী প্রতিনিয়ত তাদের কৌশল পাল্টে চালিয়ে যাচ্ছে হামলা, হত্যাকান্ডের মতো বর্বরতা।