নারীর হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর উপায়
প্রকাশিত : ০৪:৪০ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১০:৪১ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার
(ফাইল ফটো)
আমাদের দেশে পুরুষের তুলনায় নারীরা হৃদরোগ হয় খুব কমই মারা যায়। হৃদরোগে বেশি পুরুষরাই আক্রান্ত হন। কিন্তু বর্তমানে হৃদরোগের ঝুঁকিতে নারী ও পুরুষ উভয় একই রকম। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে নারীদের মেনোপোজাল (পিরিয়ড)। এছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে নারীদের হৃদরোগ বেড়ে গেছে।
হৃদরোগ হচ্ছে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা। শুধু তাই নয়, রয়েছে শ্বাসকষ্ট, পাকস্থলির ওপরের দিকে অসহনীয় ব্যাথা অনুভব করা, মাথা ভারী হওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন- পিঠে, কোমরে, পেটে, ঘাড়ে, গলায়, বাম বাহুতে অসহ্য ব্যাথা হতে পারে।
আজকাল নারীরা হৃদরোগে মারা যাচ্ছে প্রায় ৮০শতাংশ। বেশিরভাগ ৫০ বছর বয়সের পর থেকে নারীদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা যাওয়ার কারণে তারা ঐ বয়স থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। এদিকে আবার দেখা যাচ্ছে পুরুষরা হৃদরোগ সম্পর্কে বেশি সচেতন অর্থাৎ তারা অল্পতেই চিকিৎসকের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখে বা পরামর্শ নেয়, তাই হাতে গোনা কয়েকজন হৃদরোগ থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু নারীরা হৃদরোগ সম্পর্কে উদাসীন এবং সচেতনতাহীন হওয়ায় নারীরা বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে।
নারীদের হৃদরোগ থেকে বাঁচতে হলে তাদের সচেতন হতে হবে। তাই নারীদের জন্য কিছু পরামর্শ একুশে টেলিভিশন অনলাইনে তুলে ধরা হলো-
১) হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের পুরুষের তুলনায় বেশিমাত্রায় হাইপারটেনশনের আশঙ্কা বাড়তে থাকে। কম বয়সে যদি ক্ষতিকর খাবার ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার অভ্যাস থাকে তাহলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাইপারটেনশন বৃদ্ধি পায়। তাই এগুলো ছোটবেলা থেকেই বর্জন করতে হবে।
২) লবণ কম খেতে হবে : লবণ শরীরে রক্তচাপ বাড়ায়। তাই কাঁচা লবণ বর্জন করতে হবে। প্রতিদিনের রান্নায় খুব কম পরিমাণে লবণ ব্যবহার করতে হবে। কেননা হৃদরোগের জন্য এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর।
৩) ধূমপান বর্জন : ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মধ্যবয়সী নারীদের দুই-তৃতীয়াংশ ধূমপানের জন্য হৃদরোগ হয়। তাই নারীদের ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
৪) জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি : যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খায় তারাও কমবেশি হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়া উচিত।
৫) ক্ষতিকর কোলস্টেরল : আমাদের রক্তে দুই রকমের কোলস্টেরল রয়েছে। হৃদরোগের ঝুঁকির জন্য দায়ী ক্ষতিকর কোলস্টেরল। তাই কোলস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৬) ওজন নিয়ন্ত্রণ : নারীদের প্রধান সমস্যা ওজন বৃদ্ধি। যেসব নারীরা অলস জীবন যাপন করে তারা হৃদরোগের শিকার হন। তাই বাঁচতে হলে খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
৭) হৃদের ঝুঁকি কমাতে যেসব খাবার : হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে শাকসবজি, ফলমূল, শিম, বরবটি ও দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে। মাংসের মধ্যে মুরগি ও পাখির মাংস খেতে হবে। গরু, খাসি ও ভেড়ার মাংস বর্জন করতে হবে। মিষ্টিজাতীয় খাদ্য যেমন-সন্দেশ, রসগোল্লা, চমচম ইত্যাদি খাওয়া যাবে না।
৮) পরিশ্রমী হতে হবে : ধনী লোকেরা নিজ হাতে কাজ করাকে অসম্মান মনে করেন তাই বাড়িতে কাজের লোক রাখে ফলে শুয়ে, বসে থাকা নারীদের ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপের রোগ দেখা দেয়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি দেখা যায়। তাই নিজেকে কর্মঠ হতে হবে।
৯) হরমোন : অনেকেই হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে হরমোন থেরাপি নেন কিন্তু গবেষণায় জানা যায়, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই থেরাপি নিলে হৃদরোগের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। তাই নারীদের সতর্ক হয়ে হরমোন থেরাপি নিতে হবে।
প্রত্যেকটা জীবনের মূল্যে অনেক তাই সব বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে হবে ও চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা প্রয়োজন।
সূত্র : হেলথ ম্যাগাজিন
/কেএনইউ/ এসএইচ