৮ ঘণ্টা ঘুম না হলেই বাড়ে দুশ্চিন্তা : গবেষণা
প্রকাশিত : ০৫:৩০ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৫:৩৩ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার
মস্তিষ্ক ঠিক মতো আরাম না পেলে ব্রেনের ভেতরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বাড়তে শুরু করে। যে কারণে একদিকে যেমন খারাপ চিন্তা ঘাড়ে ছেপে বসে, তেমনি স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি লেভেলও বাড়তে শুরু করে। ফলে জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ। সম্প্রতি একট গবেষণায় এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বিংহেমটন ইউনিভার্সিটির দুই গবেষক এই বিস্ময়কর গবেষণাটি করার সময় লক্ষ্য করেছিলেন যে, যারা প্রতিদিন কম করে ৮ ঘন্টা ঘুমোন, তাদের নেগেটিভ চিন্তাকে পাশ কাটিয়ে জীবনের রাস্তায় এগিয়ে যেতে কোনো সমস্যাই হয় না। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ আরাম পাওয়ার কারণে ব্রেন পাওয়ার এতটা বেড়ে যায় যে, দুশ্চিন্তা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। কিন্তু একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটে ঠিক মতো না ঘুমালে। সেক্ষেত্রে খারাপ চিন্তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া একেবারেই সম্ভব হয় না। ফলে স্ট্রেস লেভেল ক্রমশ বাড়তে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে স্ট্রেস হল এমন একটি বিষ, যা ধীরে ধীরে শরীর এবং মনকে একেবারে ঝাঁঝরা করে দেয়। ফলে মানসিক অবসাদের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
একাধিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, বর্তমান সময় যে যে মারন রোগের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তার বেশিরভাগের সঙ্গেই স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের সরাসরি যোগ রয়েছে।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু খাবার রয়েছে যা নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে অনিদ্রার মতো সমস্যা দূর হতে একেবারেই সময় লাগে না। সাধারণত যে যে খাবারগুলিকে রোজের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে সহজেই ঘুমের কোটা পূরণ হয়ে যায়, সেই খাবারগুলি হল-
১. আখরোট: এই প্রকৃতিক উপাদানটির ভেতরে রয়েছে "ট্রাইপটোফেন" নামক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা সেরাটোনিন এবং মোলাটোনিনের মতো স্লিপ হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঠিকমত ঘুম না হওয়ার মতো সমস্যা কমে যেতে সময়ই লাগে।
২. বাদাম: ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ এই খাবরটি নিয়মিত এক মুঠো করে খাওয়া শুরু করলে অনিদ্রার মতো সমস্যা দূর হতে সময়ই লাগে না। আসলে এই খনিজটি শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখাতে শুরু করে যে, নিমিষেই ঘুম এসে যায়। জার্নাল অব অর্থোমলিকিউলার মেডিসিন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে শরীরে এই খনিজটির ঘাটতি দেখা দিলে একদিকে যেমন হাড়ের স্বাস্থ্যের অবনটি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ঠিক মতো ঘুমও আসতে চায় না।
৩. পনির: শুনতে অবাক লাগলেও একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, ডিনারে নিয়মিত পনির বা যে কোনো ধরনের দুগ্ধজাত খাবার, যেমন দই, দুধ বা চিজ খাওয়া শুরু করলে দারুন ঘুম হয়।
৪. লেটুস শাক: আজ থেকেই সপ্তাহে ৩-৪ দিন লেটুস শাক খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার সমস্যা কমতে সময়ই লাগবে না। আসলে এই শাকটিতে রয়েছে ল্যাকটুকেরিয়াম নামক একটি উপাদান, যা নিমেষে ঘুম আসতে সাহায্য করে।
৫. মাছ: সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে নিয়মিত মাছ খাওয়া শুরু করলে শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি৬-এর ঘাটতি দূর হয়। এই দুই পুষ্টিকর উপাদান, মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. চেরির জুস: স্ট্রেস এবং অন্যান্য নানা কারণে যাদের রাতের ঘুম উড়েছে আজ থেকেই শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস করে চেরির জুস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ঘুম আসতে সময়ই লাগবে না। আসলে চিরির ভেতরে রয়েছে এমন অনেক উপকারি উপাদান, যা মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। তাই তো ইনসমনিয়ায় ভুগতে থাকা রোগীদের নিয়মিত চেরির রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
তাই সুস্থভাবে বাঁচতে ৮ ঘন্টার কম সময় ঘুমবেন না যেন!
সূত্র: বোল্ডস্কাই
একে// এআর