মাছের বুদ্ধিমত্তায় অবাক বিজ্ঞানীরা
প্রকাশিত : ১০:৪৪ এএম, ৯ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার
সংঘবদ্ধ কাজে সফলতা আসে। এটি মানবসমাজে যেমন সত্য, প্রকৃতিতেও মিথ্যে নয়। এমনটাই প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ প্রজাতি মাছের ঐক্য ও বুদ্ধিমত্তা বিজ্ঞানীদের অবাক করছে। তাদের আচরণ বিজ্ঞানীদের নতুন দিশা দিয়েছে।
জার্মানির গবেষক ড. ইয়ান কুজিন বড় একটা পুল তৈরি করেন। তার মধ্যে স্টিকলব্যাক মাছের চারাপোনা কিলবিল করছে। পুলের কিছু অংশে আলো, কিছু অংশে ছায়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাছেরা রোদের তাপ এড়িয়ে যতটা সম্ভব ছায়ার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। এ প্রজাতির মাছের জন্য এমন আচরণ অত্যাবশ্যক। কারণ রোদের আলোয় তাদের ত্বক জ্বলজ্বল করে। শত্রুরা তাদের সহজেই শনাক্ত করতে পারে। ইয়ান কুজিন যখন একটিমাত্র মাছকে পানিতে ছেড়ে দেন, তখন কিন্তু সেটি ছায়া খুঁজে পায় না। সম্ভবত শুধু ঝাঁকের মধ্যেই তাদের এ ক্ষমতা প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, ঝাঁক হিসেবে তারা যে সম্মিলিত বুদ্ধিমত্তা দেখায়, তা সত্যি বিস্ময়কর। এককভাবে কোনো সমস্যা সমাধান করতে না পারলেও গোষ্ঠীবদ্ধ হিসেবে প্রায়ই তা সম্ভব হয়।
কিন্তু এ সম্মিলিত বুদ্ধিমত্তা কীভাবে সম্ভব? ঝাঁকের মধ্যে মাছেরা কীভাবে এমন ক্ষমতা আয়ত্ত করে, এককভাবে যা সম্ভব নয়? গবেষকরা বহুকাল ধরে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন ও মাছেদের পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা প্রাচীন এক রুশ বইয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিতও খুঁজে পেয়েছেন। বিজ্ঞানী দিমিত্রি রাডাকভ বুঝতে পেরেছেন যে, গোষ্ঠীর নিজস্ব চরিত্র গড়ে ওঠে। ইয়ান কুজিন ও তার সহকর্মীরা আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে সে চিন্তাকে আরও সূক্ষ্ণ করে তুলেছেন। গবেষকরা প্রতিটি মাছের পিঠে বারকোড লাগিয়েছেন। ফলে প্রতিটি মাছকে আলাদাভাবে চেনা ও সবসময় শনাক্ত করা সম্ভব। তারপর তিনি বড় পুকুরে মাছের ঝাঁক ছেড়ে দেন। প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছগুলো ছায়ার মধ্যেই ঘুরে বেড়ায়। একটি ক্যামেরার মাধ্যমে সর্বক্ষণ তাদের ছবি তোলা হয়। পরে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিটি মাছের গতিপথ দেখা যায়। পর্যবেক্ষণের সময় বিজ্ঞানীদের আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ একটি বিষয় চোখে পড়ে। দেখা যায়, ছায়ার মধ্যে এলে মাছেদের সাঁতারের গতি কমে যায়।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।