ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ষোড়শ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু

প্রকাশিত : ১০:৩৩ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

ষোড়শ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আজ শুরু হয়েছে। ৯ দিনব্যাপী এ উৎসব চলবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে  জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

এ উৎসবের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ।

এ উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

উৎসব আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান কিশোওয়ার কামালের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরোও  বক্তৃতা করেন ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল ও আয়োজন কমিটির সদস্য  হামিদ।

উৎসবে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ৬৪টি দেশের ২১৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণকারী দেশের তালিকায় আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, চেক রিপাবলিক, মাদাগাস্কার, থাইল্যান্ড, মঙ্গোলিয়া, সার্বিয়া, তুর্কি, স্পেন, জর্ডান্ প্যালেস্টাইনসহ আরো অনেক দেশ রয়েছে।

ষোড়শ এ উৎসবে এশিয়ান কম্পিটিশন বিভাগ, রেস্ট্রোস্পেক্টিভ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেনস ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, উইমেন ফিল্ম মেকার সেশনসহ শর্ট এ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট এ আটটি ক্যাটাগরিতে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

এবার এশিয়ান কম্পিটিশন বিভাগে ১৫টি চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা করছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক মানের একটি জুরি বোর্ড ওই চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে এক বা একাধিক চলচ্চিত্রকে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বলে ঘোষণা দেবেন। এ বছর উৎসবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য পুরষ্কার হিসেবে থাকছে এক লক্ষ টাকাসহ একটি ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট। এছাড়া শ্রেষ্ঠ অভিনেতা-অভিনেত্রী, শ্রেষ্ঠ চিত্র গ্রাহক ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যের জন্যও পুরষ্কার থাকবে।

ফরাসি দুই নারী চলচ্চিত্র নির্মাতার সাতটি ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ। এছাড়া উৎসবের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মত থাকছে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিক এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজনে এবং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক ফেডারেশনের সহযোগিতায় প্রথম এশিয়ান ফিল্ম ক্রিটিকস এসেম্বেলী। এখানে এশিয়া অঞ্চলের ১২ দেশ অংশগ্রহণ করছে।

রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ ১৯৭৭ সাল থেকে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকলেও ১৯৯২ সাল থেকে দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনায় আয়োজন করে চলেছে দেশের সর্ববৃহৎ এ চলচ্চিত্র উৎসব। পূর্বে দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনায় ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসব পরিচালিত হলেও গতবছর থেকে উৎসবটি প্রতিবছরই ধারাবাহিকভাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় উৎসবের আয়োজক কমিটি।

আজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তুরস্কের নির্মাতা কাজিম ওজ’র আলোচিত চলচ্চিত্র ‘জার’ প্রদর্শিত হয়। ছবির কাহিনীতে দেখা যায়, দাদীর মৃত্যুর পর তার কাছে শোনা গল্প থেকে নিজের অতীত খুঁজতে নিউ ইয়র্ক থেকে কুর্দিস্তানের উদ্দেশে যাত্রা করে তরুণ জ্যান। দীর্ঘ জার্নির নানা ঘটন-অঘটন নিয়েই সিনেমা ‘জার’।

উৎসবে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল ও প্রধান মিলনায়তন, অঁলিয়স ফ্রঁসেজ মিলনায়তন, রাশিয়ান কালচার সেন্টার ও স্টার সিনেপ্লেক্সে চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে। চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং সেমিনারের ভেন্যু হিসেবে এবারে নির্বাচন করা হয়েছে

কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার চত্বরে উৎসব চলাকালীন নিয়মিত মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে চলচ্চিত্র র্নিমাতা, দর্শক, পরিবেশক, প্রযোজকগণ তাদের ভাবনা বিনিময় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ধারনা ও তথ্য আদান প্রদান করার সুযোগ থাকবে।

উৎসবে চলচ্চিত্রের যাবতীয় তথ্য সমৃদ্ধ স্মরণিকা প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি উৎসব চলাকালীন প্রতিদিনকার সংবাদসহ একটি বুলেটিন প্রকাশ করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমকর্মীদের সুবিধার্থে নিয়মিত মিট দ্য প্রেস’র আয়োজন করা হয়েছে। এখানে চলচ্চিত্রকার, প্রযোজক, অভিনয় শিল্পীসহ দেশি-বিদেশি ডেলিগেট সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন এবং উৎসবের সর্বশেষ জানাবেন। মিট দ্য প্রেস’র স্থান পাবলিক লাইব্রেরির সেমিনার রুম, সময় প্রতিদিন বিকেল ৪টা। ‘মিট দ্য প্রেস’ চলবে ১৫ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।

প্রথম দিন ১৫ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন উপ-মহাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপর্ণা সেন, সঙ্গে থাকবেন ভারতের খ্যাতিমান নির্মাতা মধুরিমা সিনহা।

উৎসবের অংশ হিসেবে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক দু’দিনব্যাপি ‘চতুর্থ আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্স’ শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। আলিয়ঁস ফ্রসেজ মিলনায়তনে সকাল ৯টায় এ কর্মশালার উদ্বোধন করবেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। কর্মশালায় দেশি বিদেশি নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ব্যক্তিত্বদের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী নির্মাতাগণ অভিজ্ঞতা অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ পাবেন বলে আয়োজকগণ আশা করছেন।

সূত্র: বাসাস

এম/টিকে