ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে চাঙ্গা নেতাকর্মীরা

আলী আদনান

প্রকাশিত : ০৮:৩৬ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ১১:৩২ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ শনিবার

বিলম্বে হলেও ছাত্রলীগের সম্মেলনের ঘোষণা আসার সাথে সাথেই ছাত্রলীগের সকল স্তরের নেতা কর্মীদের মাঝে নতুন করে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। নেতৃত্বে আসতে আগ্রহীরা হয়ে উঠেছেন সক্রিয়। পাশাপাশি চলছে নানা পর্যায়ে লবিং। তবে সঠিক সময়ে সম্মেলন না হওয়ায় বয়সের কারণে ও ছাত্রত্ব শেষ হওয়ায় অনেক যোগ্য ছাত্রনেতারাও মূল নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা। তবে এসব কিছু নিয়েই আগামী ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

শুক্রবার ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ সকলকে সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন। এর আগে সোমবার ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করলে সেখানে বিষয়টি চূড়ান্ত হয় বলে জানা যায়।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই সম্মেলন হচ্ছে। তিনি আমাদের অভিভাবক। নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এর আগে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকের র‌্যালিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সম্মেলন মার্চে সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেন।

সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই ছাত্রলীগের ২৮ তম সম্মেলনে বর্তমান নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে ছয় মাস কেটে যায়। সেই হিসেবে বর্তমান কমিটি দুই বছর পূর্ণ করেছে আরো ছয়মাস আগে। যদিও গঠণতন্ত্রে দুই বছর পর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। বর্তমান কমিটির দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা জানান, বর্তমানে ছাত্রলীগের ১০৯ টি সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট।

আগামী সম্মেলনের ব্যাপারে কেমন প্রস্তুতি নেওয়া হতে পারে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "ছাত্রলীগের সব কিছুর ব্যাপারে আপার (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তার সিদ্ধান্ত নিয়েই আমরা আনুষ্ঠানিক প্রস্ততি শুরু করব।"

বর্তমানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আদিত্য নন্দী একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, "ছাত্রলীগের ইতিহাসে ১৯৯২ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরারসি হস্তক্ষেপে মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরীকে সভাপতি ও ইকবালুর রহিমকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছিল। এবারো তেমনি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর যেহেতু নির্বাচনের বছর সেহেতু সব মিলিয়ে নেত্রীর হস্তক্ষেপ আমাদের কাম্য।"

ইতোমধ্যে নতুত নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা লবিং-এ ব্যস্ত হচ্ছেন। তবে নেতৃত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে বয়সসীমা কী অনূর্ধ্ব ২৯ নাকি অনূর্ধ্ব ২৭ নির্ধারণ করা হবে তা নিয়ে নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, “বয়সের সীমা ২৯ হলে এক ধরনের নেতৃত্ব আসবে। আর যদি ২৭ হয় তাহলে নেতৃত্বের ধাঁচ হবে ভিন্নরকম। তবে কোন বয়সসীমা নির্ধারিত হবে তা নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তের আগে বলতে পারছেন না কেউ। তবে বর্তমান কমিটির বেশির ভাগ ছাত্রনেতাই বয়স ২৯ নির্ধারণ করে সম্মেলন করার পক্ষে।

যারা আগামী কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আসার আলোচনায় আছেন তারা হলেন-বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি আদিত্য নন্দী, সহ-সভাপতি মেহেদি হাসান জনি, যুগ্ম-সম্পাদক সায়েম খান, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক গোলাম রব্বানী, কর্মসূচী ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম প্রমুখ। বর্তমান কমিটির বাইরে থেকেও যারা মূল নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা আছেন তারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স ও ঢাকা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বায়েজীদ আহমেদ খান।

 

এএ/টিকে