জেড ক্যাটাগরির শেয়ারের দাম কেন বাড়ছে?
প্রকাশিত : ০৭:১৯ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ রবিবার
পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানিগুলোর (‘এ’ ক্যাটাগরি) তুলনায় মন্দ কোম্পানিগুলোর (‘জেড’ ক্যাটাগরি) শেয়ারের দাম বেশি বাড়ছে। গেল দুই মাসে গুজব ছড়িয়ে ভালো কোম্পানিগুলোর তুলনায় মন্দ কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম প্রায় ছয় গুণ পর্যন্ত বাড়ানো বেড়েছে।
গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরের মধ্যে পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানিগুলোর অর্থাৎ ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৭২ শতাংশ। একই সময়ে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর সব কোম্পানির শেয়ারের দাম গড়ে ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যের ভিত্তিতে আইডিএলসির এক হিসাবে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)র ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা বলছেন, ‘জেড’ ক্যাটাগরির বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের সংখ্যা খুব কম। তাই এসব কোম্পানির শেয়ার কারসাজি করা সহজ। কারসাজির গ্রæপটি তাই এ শেয়ারগুলোকেই টার্গেট করে। তারা বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ায়।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, কেউ যদি শেয়ার কিনে তাকে আটকানোর আইনগত কোনো সুযোগ নেই। তাই এ ব্যাপারে সাধারণ বিনিয়োগাকারীদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। কোনো গুজবে কান না দিয়ে ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ থাকবে।
মার্চেন্ট ব্যাংকাররা বলছেন, বিশ্বের পুঁজিবাজারে ভালো কিংবা মন্দ হিসেবে কোনো কোম্পানির আলাদা ক্যাটাগরি নেই। সেখানে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির সম্ভাবনা বিবেচনা করে শেয়ার ক্রয়ে করেন। কিন্তু আমাদের দেশে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা কম হওয়ায় এখানে ভালো লভ্যাংশ প্রদান, নিয়মিত এজিএম করা এবং কারখানা কার্যক্রম চালুর ভিত্তিতে ভালো ও মন্দ কোম্পানিগুলোকে পৃথক করে দেওয়া হয়। এরপরও বিনিয়োগকারীরা যদি সচেতন না হয় তবে সেটা দুঃখজনক।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা কোনো কোম্পানির যদি ভবিষ্যতে ভালো করার সম্ভাবনা থাকে তবে সে কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা যায়। সেক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। কিন্তু আমাদের বাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির বেশির ভাগ কোম্পানিই দীর্ঘদিন ধরে লোকসান করছে। অনেক কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তারপরও এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে। একটি গ্রæপ বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির দিকে আকৃষ্ট করে। তাদেরকে দিয়ে এসব শেয়ার কেনাচ্ছে। আর বিনিয়োগকারীরাও এসব শেয়ারের দাম দ্রæত বাড়তে দেখে তারা মোহে পড়ে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, যে কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ দিতে পারে না কিংবা উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ কিংবা যে কোম্পানি যথাসময়ে এজিএম করতে পারে না সেসব কোম্পানিকে মন্দ কোম্পানি হিসেবে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়।
টিকে