ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

শীতে চর্ম রোগ ও প্রতিকার

প্রকাশিত : ০৪:৪৯ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৪:৫২ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার

অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার

অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার

সারাদেশে মতো রাজধানীতে জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত। শীতের কারণে একদিনে যেমন নগরবাসীর দূর্ভোগ বেড়েছে অন্যদিকে বিভিন্ন রকম চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী। শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যেতে পারে।  

শীতকালে এক বিছানায় চাপাচাপি করে ঘুমানো এবং অপরিস্কার পোষাক পরিধান করার কারণে  সংক্রমিত হয়ে পারে। চর্ম রোগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেসব শিশু স্কুলে যায় তারাই এতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে শরীরে অসম্ভব রকম চুলকানি হতে দেখা যায় এবং রাতের বেলা চুলকানির তীব্রতা আরো বাড়ে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই একটু দরকার বাড়তি সচেতনতা।

এ বিষয়ে সাক্ষাতকার এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চর্ম ও যৌন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান।

একুশে টিভি: চর্মরোগ কি?

ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার: ছত্রাকজনিত একটি রোগ। ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণের কারণে চর্মরোগে আক্রান্ত হয়। কেরাটিন (Keratin) নামক এক ধরণের আমিষ আমাদের ত্বক, চুল এবং নখের গঠনে সহায়তা করে। ছত্রাক এই কেরাটিন ধ্বংস করে ত্বকের ক্ষতি করে। দাদ বা Ringworm জাতীয় সংক্রমণ মানুষের মাধ্যমে ছড়ায়। ব্যবহৃত বিছানার ছাদর, তোয়ালে, চিরুনী এছাড়া অন্যান্য ব্যক্তিগত সামগ্রী অন্য কেউ ব্যবহার করলে এ রোগ হতে পারে।

একুশে টিভি : শীতকালে কেন চর্মরোগ বেশি দেখা দেয়?

ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার : শীতে মানুষের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। শীতকালে মানুষ মোটা কাপড় পরিধান করে। যা অনেক সময় অপরিষ্কার, অপরিছন্ন থাকে। ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে থাকে ও নিজেও অপরিচ্ছন্ন থাকে তাদের ক্ষেত্রে ত্বকের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কয়েকটি সাধারণ চর্মরোগ হচ্ছে : পাঁচড়া, খুজলি ও দাদ। তবে পাঁচড়া : পাঁচড়া জাতীয় চর্মরোগের লক্ষণ হলো আঙ্গুলের মাঝখানে, কব্জিতে, কোমরের চারদিকে, যৌনাঙ্গের আশপাশে, শরীরের অন্যান্য অংশেও ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা যায়।

একুশে টিভি : চর্ম রোগের লক্ষণ কি?

ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার : আক্রান্ত স্থানে সবসময় চুলকানির ভাব অনুভূতি হয়, না চুলকিয়ে থাকা যায় না, চুলকাতে চুলকাতে চামড়া উঠে যায়, ফুসকুড়িগুলোয় পুঁজ/পানি জমে, আবার চুলকালে পুঁজ ছড়িয়ে পড়ে ও চুলকানি অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়, ব্যথায় শরীরে জ্বর আসে।

একুশে টিভি : এ রোগের প্রতিকার কিভাবে পাওয়া যাবে?

ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার : অপরিস্কার কাপড় পরিধান ত্যাগ করতে হবে। পরিষ্কার পরিছন্ন কাপড়-চোপড় ব্যবহার করলে খোসপাঁচড়া হবে না। নিয়মিত গোসল করতে হবে। গোসলের সময় পানি গরম করে নিতে হবে। গরম পানিতে নিমপাতা দিয়ে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলেও উপকার পাওয়া যাবে। এসপ্তাহের বেশি দিন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই রোগটি সাধারণত অপরিষ্কার থাকার কারণে বা ভিটামিন সি-এর অভাবে হয়ে থাকে, তাই ছেলেদের স্বপ্নদোষ হলে সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে পরিষ্কার করা উচিত অথবা প্যান্টের জাঙ্গিয়ার নিচে ঘেমে গেলে তা সবসময় পানি দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। এ রোগ হলে অবশ্যই ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। যেমন কমলা বা কমলার তৈরি জুস ইত্যাদি বেশি খেতে হবে।

একুশে টিভি: আপনার মূল্যবান সময় দেওয়া জন্য ধন্যবাদ।
ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার : একুশে পরিবারকেও ধন্যবাদ ।