ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ইতিহাস সৃষ্টি করেন সংবেদনশীল লেখক: প্রণব মুখার্জি

প্রকাশিত : ০৭:০৯ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার

সংবেদনশীল লেখক, সাহিত্যিক ইতিহাস সৃষ্টি করেন কোন রাজা-মহারাজারা নয় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। তিনি বলেন, পরীক্ষায় পাস করার জন্য অন্যদের মুখস্থ করতে হয়, পরীক্ষা হয়ে গেলে তারা ভুলে যান। কিন্তু একজন শিল্পীর ছবি, একজনের লেখা, তার কবিতা, নিজের লেখা উপন্যাস কি কখনও ভুলে যায় না। সোমবার আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনের সমাপ্তি অধিবেশনে প্রণব মুখার্জি এসব কথা বলেন।

ভারতের সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা আমাকে আমন্ত্রণ করেছেন, আপনাদের সেই আমন্ত্রণ রাখতে পেরে নিজেকে গর্বিত ধন্য মনে করছি। এরপর হয়তো  আরো কিছু কাজকর্ম হবে, কিন্তু আমার দায়িত্ব অনুযায়ী মুখ্য অতিথি হিসেবে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। সবার ভালো হোক।

অনুষ্ঠানে নিজের বই পড়ার আগ্রহের কথা উল্লেখ করে প্রণব মুখার্জি বলেন, যখন রাজধানী কলকাতা থেকে কার্যালয় দিল্লী স্থানান্তরিত হয়, সে সময়ের বহু কাগজ গভর্নর জেনারেলের অফিসে নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে অনেক প্রাচীন উপাদানও রয়েছে। যেগুলো পড়তে প্রায় তিনটি প্রেসিডেন্সিয়াল টার্ম লাগবে। আমি পড়তে আরম্ভ করলাম, যতটা পারা যায় পড়েছি। অনেক বই আছে রাষ্ট্রপতি ভবনে।

তিনি বলেন, পাঠক হিসেবে এ সম্মেলনে যোগ দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। সম্মেলনে গৃহীত ও আলোচিত বিষয়গুলোকে চয়ন করে দেখলাম, ঢাকা সংকল্প তৈরি হয়েছে। বর্তমান বিশ্বের মূল্যায়ন হয়েছে সঠিকভাবে। শিল্পী, সাহিত্যিক, লেখক তারা অঙ্গীকার করেছেন- পৃথিবীর এই চেহারা পরিবর্তন করতে হবে। যেখানে মানুষ হিংস্রতার শিকার হচ্ছে কোনও কারণ ছাড়া।

প্রণব বলেন, গত একদশকে যে সস্ত্রাসবাদী আক্রমণ হয়েছে, তার কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা কী চান বোঝা যায় না। হিংস্রতা যেখানে, মানুষ সেখানে কিভাবে বাঁচবে। শুধু পরিবেশ দূষণ নয়, এরচেয়েও বড় দূষণ মানুষের চিন্তায়, ভাবনায়, মনে, কাজে। সেই দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে হবে না, জাতিসংঘ করতে পারবে না। এটা করতে পারবে যারা শিল্পী, সাহিত্য স্রষ্টা, লেখক। গত তিন দিনের সম্মেলনে যারা অংশ নিয়েছেন, তারাই নতুন পৃথিবী তৈরি করবেন।

একুশে ফেব্রুয়ারিকে সারাক্ষণ স্মরণ করার বিষয়ে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ করেছে। তৎকালীণ পূর্ব বাংলা দীর্ঘ ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মাতৃভাষার অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের জানাই সালাম ও প্রণাম।

তাদের শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি নয়, প্রতি মুহূর্তে মনে রাখতে হবে। কারণ আমরা তাদের কাছে দায়বদ্ধ। আমাদের ঐতিহ্য, হাজার বছরের ভাষাকে তারা রক্ষা করেছেন, লুট হতে দেননি। বাংলাদেশের সরকার, বাংলা একাডেমি ঢাকা, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন, ফেন্ডস অব ইন্ডিয়া সোসাইটি যাদের যৌথ উদ্যোগে সম্মেলন হলো, তাদের ধন্যবাদ।

 

আর