ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

 নিয়মিত যোগাসন করলে ব্রেনের উপর প্রভাব পড়ে

প্রকাশিত : ০৮:৪১ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার

যোগাসন  শরীরের উপকারে লাগে। নিয়মিত যোগাসন করলে শরীরের উপকার হয় ঠিকই, কিন্তু সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের উপরও একটা প্রভাব পড়ে, যে সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা জরুরি। সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে নিয়মিত যোগাসন করলে ব্রেন পাওয়ার মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ব্রেনের বয়স হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে। ফলে কোনও ধরনের ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যেমন কমে, তেমনি মস্তিষ্ক দ্রুত কাজ করার কারণে সফলতা সঙ্গী হয়ে উঠতে সময়ই নেয় না।

ডিফেন্স ইনস্টিটিউট অব ফিজিওলজি অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সের গবেষকদের করা এই গবেষণাটি চলাকালীন দেখা গেছে যোগাসন করার সময় ব্রেনের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে কগনেটিভ ডিজেনারেশন হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। আর মস্তিষ্ক যদি বুড়ো না হয়, তাহলে খাতায় কলমে আমার শরীরের বয়স যতই বাড়ুক না কেন, বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তির ধার কমার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।

প্রসঙ্গত,ডিফেন্স ইনস্টিটিউট অব উিজিওলজি অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্স হল কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত ডিভেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা "ডি আর ডি ও" এর একটা শাখা প্রতিষ্টান। যোগাসন যে কেবল মস্তিষ্কের ক্ষমতাই বাড়ায় এমন নয় কিন্তু! ২০-৫০ বছর বয়সি ১২৪ জন পুরুষের উপর এই গবেষণাটি চলাকালীন বিশেষজ্ঞরা লক্ষ করেছিলেন এই বিশেষ ধর নের শরীরচর্চাটি নিয়মিত করা শুরু করলে আরও অনেক শারীরিক উপকার মেলে। যেমন...

১. সার্বিকভাবে শরীরের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত যোগাসন করলে ভিতর এবং বাইরে থেকে শরীর এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে রোগের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে মেন্টাল হেলথের উন্নতি ঘটে,শরীরের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, চোট-আঘাত লাগার আশঙ্কা কমে এবং শরীর থেকে সব ধরনের বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যায়।

২. ওজন কমে:

 অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন,তাহলে আজ থেকেই নিয়মিত যোগাসন করা শুরু করুন, বিশেষত সূর্য প্রণাম এবং কপালভাতি, তাহলেই দেখবেন ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগবে না। আসলে এই দুটি আসন করার সময় একদিকে যেমন শরীরে জমে থাকা ফ্যাট সেলেরা গলতে শুরু করে,তেমনি মেটাবলিক রেট বেড়ে যাওয়ার কারণে শরীরে নতুন করে মেদ জমার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।

৩. স্ট্রেস কমায়:

 বেশ কিছু স্টাডিতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে বর্তমান সময় যে যে রোগের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে,তাদের বেশিরভাগের সঙ্গেই স্ট্রেসের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কিভাবে? খুব সহজ! নিয়মিত যোগাসন শুরু করুন, দেখবেন মানসিক চাপ সংক্রান্ত কোনও বিষয় নিয়েই আর চিন্তা থাকবে না। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন প্রাণায়ম করা শুরু করলে ব্রেনের অন্দরে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, ফলে স্ট্রেস কমতে সময়ই লাগে না।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:

 শরীর,মস্তিষ্ক এবং মন যদি চাঙ্গা থাকে,তাহলে ইমিউনিটি কমার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। আর রোগ প্রতিরাধ ক্ষমতা যদি শক্তিশালী হয়ে ওঠে,তাহলে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। আর যেমনটা সবারই জানা আছে যে নিয়মিত যোগাসন করলে একসঙ্গে ব্রেন,শরীর এবং মনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে সুস্থ জীবনের স্বপ্ন পূরণ হতে একেবারেই সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, যোগাসন করার সময় শরীর এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে এই কারণেও রোগের খপ্পরে পরার সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়।

৫.শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পায়:

 প্রতিদিন যদি নিয়ম করে যোগাসন করতে পারেন, তাহলে শরীরের শক্তি তো বৃদ্ধি পায়ই, সেই সঙ্গে দেহের ফ্লেক্সিবিলিটিও বাড়তে শুরু করে। শুধু তাই নয়, বডি পসচারেও উন্নতি ঘটে। এক কথায় শরীরের সর্বত্তম উন্নতি ঘটে। এবার বুঝেছেন তো নিয়মিত যোগচর্চা করার প্রয়োজনীয়তা কতটা!

৬. মেরুদন্ডের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে:

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন যোগাসন করা শুরু করলে স্পাইনাল ডিস্কের ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি সামগ্রিকভাবে মেরুদন্ডের শক্তিও বাড়তে শুরু করে। ফলে ব্যাক পেন সহ স্পাইনাল কর্ড সম্পর্কিত আরও নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

কেআই/