ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

প্রতিবেশীদের সঙ্গে সর্ম্পক উন্নয়ন বড় সাফল্য

প্রকাশিত : ০৭:২১ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৫:২১ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার

ডা.  দীপু মনি । বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। চাদপুর -৩ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল র্পযন্ত ‍তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার আমলে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র খাতে বেশ সফলতা অর্জন করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রেরিয়াল অ্যাকশন গ্রুপ এর প্রথম নারী এবং দক্ষিণ এশীয় চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। এছাড়া তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমুদ্র জয় করে। এতে করে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের এবং ভারতের সাথে প্রায় চার দশকের সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়টি আর্ন্তজাতিক আইনের আওতায় চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তির উদ্যেগ গ্রহণ করে। সরকারের বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে একুশে টেলিভিশন অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইন প্রতিবেদক আলী আদনান


একুশে টেলিভিশন অনলাইন: র্বতমান সরকারের আমলে পররাষ্ট্রনীতিতে সরকারের সাফল্য কেমন?

ডা. দীপু মণি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে ইতিবাচক সুনাম ও ভাবমূর্তি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছিল বাংলাদেশের সরব উপস্থিতি। প্রতিবেশীদের সঙ্গে পুরনো বিরোধ মিটিয়ে সর্ম্পককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

 

একুশে টেলিভিশন অনলাইন:  সরাকরের উল্লেখযোগ্য সফলতাগুলো কী কী?

ডা. দীপু মণি: ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এই সময়ের মধ্যে ভারত ও মিয়ামারের সঙ্গে স্থল ও সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি করা র্বতমান সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। চার দশক ধরে ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্থল সীমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। আমরা এই বিরোধ নিস্পত্তি করেছি। ‍ছিটমহলের মানুষ নতুন করে বাচতে শিখেছে।

এই সময়ের মধ্যে ভারত, চীন, জাপান, কুয়েতসহ কয়েকটি বন্ধু রাষ্ট্রের সরকার বাংলাদেশ সফর করেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি ও হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফর করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন ওআইসি, বিশ্বব্যাংক প্রধান, জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সফর করেছেন।

আমাদের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ডি-৮, ন্যাম, সার্ক, আসেম, জাতিসংঘ, ওআইসি, জি-৭ সহ অনেকগুলো বহুজাতিক সংস্থা ও জোটে যোগ ‍দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। বর্হিবিশ্বের অনেকগুলো রাষ্ট্র যেমন নেদারল্যান্ড, কানাডা, রাশিয়া, সৌদি আরব, জাপান, চীন ও ভারতের সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সফর হয়েছে।

আপনারা জানেন, বর্তমান সরকারের আমলেই সংসদ বিষয়ক দুটি আর্ন্তজাতিক সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। জাতীয় সংসদের স্পিকার  ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হযেছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ইন্টার পার্লামেন্টারি অ্যাসাসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। জাতিসংঘভুক্ত অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে  বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে।

 

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: সেই জায়গা থেকে আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি কেমন বলে মনে করছেন?

ডা. দীপু মণি: একটি রাজনৈতিক সরকারের সফলতা নির্ভর করে তার প্রধানের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তা ও দূরদর্শিতার উপর। ঐ জায়গা থেকে বর্তমান সরকারের যা অর্জন তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে। আপনারা জানেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন শুধু জাতীয় নেত্রী নয়, বরং বিশ্ব দরবারে তিনি আপন মহিমায় উজ্জ্বল। ২০১৫ সালে বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ’ফরেন পলিসি’ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বের র্শীষ চিন্তাবিদ হিসেবে আখ্যায়িত করে। জলবায়ু পরির্বতনের অভিঘাত ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের কারণে তাকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘ চ্যাম্পিয়নস অব দ্যা আর্থ” পুরষ্কারে ভূষিত করে। এছাড়া আইটিইউ প্রধানমন্ত্রীকে টেকসই উন্নয়নের জন্য আইসিটি পদক প্রদান করে।

জাতিসংঘের ৭১তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ’উন্নয়নের জন্য আইসিটি” পুরষ্কারে ভূষিত করেন। এটাও কিন্তু সরকারের সফলতা। এছাড়া ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার, প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, এজেন্ট অব চেঞ্জ, শান্তি বৃক্ষ পুরষ্কার সহ অসংখ্য পুরষ্কার আমাদের তালিকায় যোগ হয়েছে। এসব কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একক কৃতিত্বের ফল। এক কথায় আজ বিশ্ব দরবারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হযেছে। আপনি কী মনে করেন?

ডা. দীপু মণি: আমি অবশ্যই একমত। বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বঙ্গবন্ধু ‍কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত আজ বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের সঙ্গে সর্ম্পক উন্নয়নের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনের আত্মঅধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার ছিল বাংলাদেশ। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সন্ত্রাশবাদ দমনেও বাংলাদেশ ভালো ভূমিকা রেখেছিল।  ২০১১ সালে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ, সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সহ নানা সফলতা আজ বাংলাদেশকে বিশ্বের অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন:   মূল্যবান সময় দেওয়া জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ডা. দীপু মণি: একুশে টেলিভিশন অনলাইন পরিবারকেও ধন্যাবাদ।