ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

শীতে শিশুর ডায়রিয়া : সুরক্ষায় যা করবেন

প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৮:৫০ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও খুব একটা কমেনি শীতের তীব্রতা। এসময় শিশুদের ডায়রিয়া প্রবণতা বেশি দেখা দেয়।

দূষিত পানি, বাহিরের খোলা ও অপরিস্কার খাবার খেলে শিশুো এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এসময় শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে পিতা-মাতাকে বাড়তি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানিয়েছেন সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেলা আখতার

সম্প্রতি একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান। সাক্ষাতকার নিয়েছেন একুশে টিভি  অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান

একুশে টিভি অনলাইন : শীতে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা কেন?

ডা. সোহেলা আখতার : ডায়রিয়া একটি ভাইরাস জড়িত রোগ। দূষিত পানি ও রাস্তার খোলা খাবার খেলে এ রোগ বেশি দেখা যায়। অসচেতনভাবে শিশুকে লালন পালন করলেও তাদের থেকে এ রোগ হতে পারে ।

একুশে টিভি অনলাইন : ডায়রিয়ার লক্ষণ কি ?

ডা. সোহেলা আখতার : ডায়রিয়া হলে শিশু প্রথম দিকে পানি বেশি পান করে থাকে। দিনে তিন বারের বেশি মলত্যাগ করে। শরীর দূর্বল হওয়া, দুই একদিন পানি বেশি পান করার পরে ধীরে ধীরে পানি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া এ রোগের লক্ষণ। এমনকি কান্না করলেও চোখে দিয়ে পানি আসে না। খাওয়ার ক্ষেত্রে রুচি কমে যাবে।  ডায়রিয়া শুরুতে বমি হয়। কিছুদিন পরে বমি কমে যায়। মাঝে মাঝে জ্বরও আসে। আস্তে আস্তে জ্বরের তীব্রতা বাড়ে।

একুশে টিভি অনলাইন : ডায়রিয়ার প্রতিকার কি ? 

ডা. সোহেলা আখতার: বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও খাওয়ার আগে ও পরে  ভালভাবে হাত পরিস্কার করার অভ্যাস করতে হবে। হাতের নখ সবসময় ছোট ও পরিস্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। তারা বাইরে খেলাধুলা করে, ঘরের ছোট ছোট জিনিস হাতে নিয়ে মুখে দেয়। তাই সব সময় হাত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। খাবার সব সময় ঢেকে রাখা উচিত। পরিষ্কার পরিচ্ছন স্থানে খাবার রাখতে হবে। না হলে মাছি বা অন্যান্য রোগবাহিত কীটপতঙ্গ খাবারে বসতে পারে। এগুলোর মাধ্যমে রোগ ছড়ায়। টয়লেট শেষে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিস্কার করতে হবে। হাতের কাছে সাবান না থাকলে ছাই দিয়ে হাত ধুয়ে বেশি পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে।

বাসায় খাওয়ার স্যালাইন ও জিংক ট্যাবলেট সব সময় রাখতে হবে। জিংক ট্যাবলেট খেলে অনেক সময় শিশুদের বমি হয়। তখন খাওয়ানো বন্ধ করে দিতে হবে। বমি বন্ধ হলে ১০ দিনের মধ্যে জিংক ওষুধের কোর্স সম্পন্ন করা উচিত। এতে পরে ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। শিশুকে খোসাযুক্ত ফল খাওয়াতে হবে। যেমন কমলা, কলা ইত্যাদি।

একুশে টিভি অনলাইন : ডায়ারিয়া হলে করণীয় কি ?

ডা. সোহেলা আখতার :  ডায়রিয়ার সবচেয়ে বড় ওষুধ খাওয়ার স্যালাইন। বড়দের ক্ষেত্রে চালের স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে। ডায়রিয়া হলে শরীরে লবণ-পানির স্বল্পতা হয়, খাবারের ঘাটতি দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন ডায়রিয়া হলে স্বাভাবিক খাবার খাওয়া যাবে না-এটা ঠিক নয়। রোগীর সব সময় শুধু স্যালাইন খেতে ভালো নাও লাগতে পারে। তাই রোগীর রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী খাবার খেতে দিতে হবে। স্বাভাবিক খাবার একটু নরম করে খাওয়ানো উচিত। খাওয়ার স্যালাইনের পাশাপাশি ডাবের পানি ও যেকোনো ফলের রস খাওয়ানো যেতে পারে। অল্প আকারে ডায়রিয়া হলে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত নয়। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

একুশে টিভি অনলাইন : মূল্যবান সময় দেওয়া জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ডা. সোহেলা আখতার :  একুশে পরিবারকেও ধন্যবাদ।

/ এআর /