ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

দেহঘড়ি

মস্তিষ্ক মানবদেহের সবচেয়ে রহস্যময় অঙ্গ

প্রকাশিত : ০৭:১২ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৮:৫০ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার

আমরা জানি, মায়ের ডিম্বাণু আর বাবার শুক্রাণু থেকে যে নতুন ডিএনএ তৈরি হয়েছিলো, মূলত সেখান থেকেই মানবদেহের সৃষ্টি ও বিকাশ। এমনকি মস্তিষ্কের মতো জটিলতর অঙ্গটিও তৈরি হয়েছে সেই একটি ডিএনএ থেকেই।

ব্রেন বা মস্তিষ্ক আমাদের খুলির ভেতর অবস্থিত আশ্চর্য এক অঙ্গ, যা স্পাইনাল কর্ডের মাধ্যমে সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসহ পুরো শরীরের স্নায়বিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। মস্তিষ্ক আবৃত থেকে মেনিনজেস নামক তিন স্তর বিশিষ্ট পর্দা দিয়ে। মানুষের মস্তিষ্কের ওজন প্রায় দেড় কিলোগ্রাম। আমাদের মাথার খুলির ভেতর সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ) নামে এক ধরনের তরল পদার্থ থাকে। এর মধ্যে ভাসে বলে মস্তিষ্কের ওজন অনুভূত হয় মাত্র ৫০ গ্রাম।
মস্তিষ্কের রয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন নিউরোন। প্রতিটি নিউরোন কমপক্ষে ১০ হাজার নিউরোনের সাথে সংযুক্ত। কোনো কোনো নিউরোন প্রায় পাঁচ লক্ষ নিউরোনের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারে। আমরা যদি মস্তিষ্ককে সুবিশাল আকাশের সাথে কল্পনা করি, তবে নিউরোনগুলো হচ্ছে এর নক্ষত্র।

মানবদেহের সবচেয়ে ‍দুর্জ্ঞেয়, রহস্যময় আর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি হচ্ছে মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক দুই অংশে সমানভাবে ডান ও বাম বলয়ে বিভক্ত থাকে। ডান বা বাম বলয় আড়াআড়িভাবে স্নায়ুগুচ্ছ দিয়ে সংযুক্ত থাকায় মস্তিষ্কের ডান বলয় নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের বাম অংশের এবং বাম বলয় নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের ডান অংশকে।

দুই বলয়ের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাম বলয় বেশি সক্রিয় থাকে এবং এটি নিয়ন্ত্রণ করে কথা শ্রুতি অঙ্ক যুক্তি ভাষা ক্ষুধা হজম ও বৈষয়িক ভাবনা। আর ডান বলয় নিয়ন্ত্রণ করে কল্পনা আবেগ বিশ্বাস ঘুম স্বপ্ন সংগীত সৃজনশীলতা অতিচেতনা আত্মিক ও আধ্যাত্মিক ভাবনা।

ব্রেনের বাম এবং ডান বলয়ের বৈশিষ্ট্য অনুসারে মানুষের যাবতীয় আচরণকে আমরা দুভাগে ভাগ করতে পারি। বাম বলয়ের প্রভাবে অধিকাংশ মানুষ জন্মের পর থেকে শুধু চায় আর চায়।

অন্যদিকে, যাদের ডান বলয় বেশি সক্রিয় তাদের দিকে তাকালে মনে হবে, তাদের কাছে এই পৃথিবীটা হচ্ছে দু’দিনের দুনিয়া। কাঁথা বালিশ কম্বল নিয়ে তারা মসজিদে অথবা মন্দির মঠ আশ্রমে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিংবা কেউ কেউ আবার ব্যস্ত নানা ধরনের সৃজনশীল কাজে। যেমন: চিত্রকলা সংগীত সাহিত্য ইত্যাদি।

এই দুই গ্রুপের মধ্যে সঠিক পথে আছেন কারা? আমরা বলতে পারি, দুই বলয়ের মধ্যে যিনি যোগসূত্র সৃষ্টি করতে পেরেছেন, জাগতিক চাওয়া-পাওয়া সাথে যিনি নিজের সৃজনশীলতা ও আত্মিক অনুভূতির ভারসাম্যপূর্ণ সংযোগ ঘটাতে পেরেছেন তিনিই মূলত সফল।

 

এম/টিকে