ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সয়াবিন তেল

টিসিবির দর মানছেন না ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত : ০২:৩৭ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কেজিতে সাত টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলাবাজারে সয়াবিন তেল। টিসিবির মূল্য তালিকায় যে সয়াবিনের তেল সর্বনিম্ন দাম ধরা হয়েছে ৮৫ টাকা সেই সয়াবিন তেল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯২ টাকা। আজ শুক্রবার টিসিবির সর্বশেষ পণ্যমূল্য তালিকা ও রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দামের এ তারতম্য দেখা যায়।

টিসিবির ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত সর্বশেষ মূল্য তালিকায় দেখা যায়, (১৮ জানুয়ারি ২০১৮) প্রতিকেজি খোলা সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা। বাস্তব চিত্রে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায় সেই একই মানের তেল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯২ টাকা। একইভাবে বাজারে প্রতিকেজি সুপার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকা। অথচ টিসিবির মূল্য তালিকায় এই সয়াবিনের দর উল্লেখ করা হয়েছে ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা। ভোগ্যপণ্য হিসেবে তেলের দর সরকারিভাবে বেধে দেওয়ার পরও বাজারে এ বাড়তি মূল্যের জন্য হতাশ ক্রেতারা।

ক্রেতাদের অভিযোগ সয়াবিনের দাম বাড়িয়ে নিজেদের পকেট ভরতে ব্যস্ত থাকে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই কারণ ছাড়া হঠাৎই বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীদের অজুহাত দেখানোর শেষ নেই। অতিমুনাফার প্রত্যাশায় অযৌক্তিকভে এ দাম বাড়ানো হয়। তবে ক্রেতাদের এ অভিযোগ মানতে নারাজ বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাদের যুক্তি কোন পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে না, এটাই বাজারের নিয়ম। এখানে সরকারের কোন তদারকী দুর্বলতা আছে বলে মনে হয় না। চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে পণ্যের দামও দিনেদিনে বাড়ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সদয় করতে এসেছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মোস্তফা সারওয়ার। কাঁচাবাজার শেষে তিনি সয়াবিন তেল কিনছিলেন বাজার থেকে। এ সময় দেখা গেল এক কেজি খেলা সয়াবিল কেনার জন্য দোকানি তার কাছ থেকে মূল্য চাইল ৯৪ টাকা। এতো দাম কেন জানতে চাইলে দোকানি তার কাছ থেকে দুই টাকা কমিয়ে দাম রাখলো ৯২ টাকা।

মোস্তফা সারওয়ার বলেন, জিনিসের দাম ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা করেই বাড়িয়ে দেয়। এতে ব্যবসায়ীদের জেল জরিমানাও হবে না। তাই বিক্রেতারা সুযোগ বুঝে পাইকাররা দাম বেশি রাখে। সরকার তো আর সব সময় এগুলো নজরে আনতে পারে না। এর জন্য যদি গোপন গোয়েন্দা লাগিয়ে তথ্য নেওয়া হতো এবং জেল বা জরিমানা করা হতো। তবে হয়তো কিছু একটা করা যেত।

টিসিবির মূল্য তালিকার সর্বনিম্ন মূল্যের চেয়ে কেন সয়াবিন তেলের দাম বেশি রাখা হচ্ছে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজার সততা জেনারেল স্টোরের  স্বত্তাধিকারী মজিবুর রহমান রানা বলেন, আমরা ভাই যেমন কিনি তেমন বিক্রি করি। মোকামে যখন দাম বাড়ে তখন আমরাও বাড়াই। এতে সরকার বা টিসিবি কী দাম নির্ধারণ করলো তা দেখার সুযোগ থাকে না।

তবে টিসিবির তালিকার চেয়ে সয়াবিন বেশি দামে বিক্রি হলেও অন্যপণ্যের মূল্য কাছাকাছি দামেই বিক্রি হচ্ছে বাজারে। টিসিবির মূল্য তালিকায় প্রতিকেজি মিনিকেট চালের দাম ৫৮ থেকে ৬২ টাকা ধরা হয়েছে। যা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকাতেই। এ ছাড়া অন্যান্য চালও টিসিবির দেওয়া মূল্য তালিকার মধ্যে উঠানামা করছে।

এছাড়া রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়,  সবজি বাজারে পিয়াজের দাম কিছুটা কমলেও অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত। বাজারে দেশি ছোট পেঁয়াজ ৭৫ টাকা থেকে কমে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, ভারতীয় বড় পেঁয়াজ ৬৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা,  বড় রসূন ৯০ টাকা, ছোট রসূন ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৭০ টাকা, বিদেশি আদা ১২০ টাকা, দেশি আদা ১৮০ টাকা এবং শুকনা মরিচের দাম  ১৮০ টাকা কেজি।

এছাড়া টমেটো, সিম, বেগুন ,শসা ও করলাসহ বেশিরভাগ সবছি ছিল ৪৫-৫০ টাকা মধ্যে। আলু ২৫ টাকা, মুলা ২০ টাকা এবং পেয়াজের ফুল এক আটি ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  ফুল কপি ও বাধাকপির বাজার মূল্য ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা করে।

তবে সরবরাহ কম এবং নতুন সবজি হওয়ায় বর্ধিত দামে বিক্রি হচ্ছে মটরশুটি ১৮০ টাকা, পটল ১০০ টাকা , ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, ডেড়স ১০০ টাকা  এবং চিচিঙ্গা ৮০ টাকা দরে।

মাছের বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি (২ কেজি) এক হাজার ২০০ থেক এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত। রুই বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। পাঙ্গাস ও কই মাছ ১৫০ টাকা।

এছাড়া মাংসের বাজারে প্রতিকেজি পোল্ট্রি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, কক বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা, দেশি মুরগী পিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। গরুর মাংস ৪৪০ থেকে ৪৬০ টাকা, খাসীর মাংস ৮০০ টাকা।

আরকে// এসএইচ