কাতারের সম্পদ হরণই সৌদি জোটের মূল উদ্দেশ্য!
প্রকাশিত : ১১:৩৬ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার
কাতার রাজ পরিবারের সদস্য শেখ আবদুল্লাহ বিন আলি আল থানি বলেছেন, কাতারের সম্পদ হরণ করাই হল সৌদি আরব আর তার মিত্রদের মূল উদ্দেশ্য। আর এ জন্যই কাতারের ওপর অবরোধ আরব করে উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে সৌদি জোট।
সম্প্রতি এক অডিও বার্তায় এসব কথা বলেন কাতার রাজ পরিবারের এই সদস্য। পাশাপাশি আত্মহত্যার হুমকিও দেন তিনি।
গত বছরের জুনে কাতারের ওপর সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মিশর স্থল, সাগর এবং আকাশপথে অবরোধ আরোপ করে। সেই সময়েই তিনি সৌদি আরবে বসবাস শুরু করেন। গত বুধবার ১৭ জানুয়ারি কুয়েতে ফিরে এসে তিনি দাবি করেন যে, তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
তবে সে সময় সৌদি এবং আমিরাতের টেলিভিশনগুলোতে তাকে কাতারের বিপক্ষে সৌদি জোটের নেওয়া পদক্ষেপের পক্ষেই কথা বলতে দেখা যায়।
অন্যদিকে গত ১৪ জানুয়ারি আমিরাত থেকেই এক ভিডিও বার্তায় নিজেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে “বন্দী” হিসেবে দাবি করেন। পাশাপাশি নিজের যে কোনো ক্ষতির জন্য আবুধাবির যুবরাজ “শেখ মোহাম্মদ”কে দায়ী করেন।
আর ১৫ জানুয়ারি প্রকাশিত ঐ অডিও বার্তায় শেখ আবদুল্লাহ বলেন, “আমার ওপর প্রয়োগ করা চাপ, বন্দীত্ব এবং আমার দেশে ফিরে যাওয়ার অথবা আমার পরিবারকে পুনরায় আর দেখতে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় আমি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে করে অন্তত আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপদে থাকবে”।
ঐ একই অডিও বার্তায় আমিরাতের আমির মোহাম্মদ বিন জায়েদ এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ইঙ্গিত করে শেখ আবদুল্লাহ বলেন, “গালফ অঞ্চলে এই অচলাবস্থার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ঐ দুই যুবরাজ যেন অন্যায়ভাবে কাতারের সম্পদ হাতিয়ে নিতে পারে”।
সৌদি জোটের থেকে কাতারবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার প্রিয় কাতারবাসীকে সতর্ক করতে চাই তারা যেন নিজেদেরকে রক্ষা করে। নিজের এই হীন উদ্দেশ্য পূরণে সৌদি জোট আপনাদের জন্য ‘টোপ’ এবং ‘ফাঁদ’ ফেলবে”।
তবে শেখ আবদুল্লাহর এমন বক্তব্যকে “স্বাভাবিক” প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাজেদ আল-আনসারি। বার্তা সংস্থা আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, “আমরা জানি যে, শেখ আবদুল্লাহকে অনেক চাপে রেখেছিল সৌদি জোট। শুরুতে তাকে যতটা প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল শেষ কয়েকমাস যাবত তাকে সেভাবে দেখা যাচ্ছিল না। এর অর্থ আবদুল্লাহ সৌদি জোটের সাথে সেভাবে সহায়তা করছিলেন না”।
“তবে আবদুল্লাহ এখন যে সব কথা বলছেন তা সত্যি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ দুই দেশের দুই আমিরের বিষয়ে কেউ যদি সব থেকে ভালো বলতে পারে তাহলে সে হচ্ছেন আবদুল্লাহ। তিনি শুরু থেকেই তাদের মিত্র এবং কাতারের বিপক্ষে অবস্থান করছিলেন। তাই তার কাছে সৌদি জোটের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে”।
গত বুধবার দেশের ফেরার পর আবদুল্লাহকে কাতারের স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
//এস এইচ এস/টিকে