নায়করাজের ৭৭তম জন্মদিন কাল
প্রকাশিত : ০৬:৫৩ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার
বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের ৭৭তম জন্মদিন পালন করবে রাজ্জাক প্রেমীরা। এ উপলক্ষে আগামীকাল পরিচালক সমিতি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বিগত ৫ দশক তার অভিনয় দক্ষতা দিয়ে নানা বয়সী দর্শকের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছেন এই নায়ক। সেলুলয়েডের ফিতায় বন্দি তার অসংখ্য অমর চরিত্র আজও দর্শকদের নস্টালজিয়ায় নিয়ে যায়।
পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন গণমাধ্যমকে জানান, এবারই প্রথম চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি নায়করাজ রাজ্জাককে ছাড়া তার জন্মদিন পালন করবে। অসময়ে তার চলে যাওয়ার জন্য ইন্ডাস্ট্রির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সমিতি আগামীকাল তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
বাংলা চলচ্চিত্রের এ মহানায়কের জন্মদিন উপলক্ষে বেশকিছু আয়োজন থাকবে উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, বেলা ১১টায় এফডিসির মান্না ডিজিটালের সামনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। তার সহকর্মী, সিনিয়র শিল্পী ও পরিচালকগণ এতে অংশ নেবেন। আলোচনা সভা শেষে তার রুহের মাগফেরাতের জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
সফল অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় জন্মগ্রহণ করেন। কিশোর বয়সে তিনি কলকাতায় মঞ্চনাটকে জড়িয়ে পড়েন।
বাংলা ও উর্দু মিলিয়ে প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। সেরা অভিনেতা হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
সিনেমার নায়ক হওয়ার অদম্য স্বপ্ন ও ইচ্ছা নিয়ে এ অভিনেতা ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। এরপর কলকাতায় ফিরে এসে শিলালিপি ও আরও একটি সিনেমায় অভিনয় করেন। তবে ১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে পড়ে রাজ্জাক তার পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হন।
’৬০-এর দশকে সালাউদ্দিন পরিচালিত হাসির ছবি ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এ একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রাজ্জাক ঢাকায় তার অভিনয় জীবনের সূচনা করেন। এরপর প্রতিভাবান পরিচালক জহির রায়হান তার লোকজ ছবি ‘বেহুলা’তে তাকে লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ দেন। এর মধ্যদিয়ে নায়ক হিসেবে তার অভিষেক হয়। ‘বেহুলা’ ছবিতে সুচন্দার বিপরীতে তার অভিনয় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
৬০-এর দশকের শেষ থেকে ’৭০ ও ’৮০-এর দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠেন রাজ্জাক। ‘কার্তুজ’ তার অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র।
১৯৭৭ সালে ‘অনন্ত প্রেম’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন।
২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে কাঁদিয়ে এ মহানায়কের মহাপ্রয়াণ ঘটে। চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মতে, রাজ্জাকের মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চেত্রের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কখনই পূরণ হবার নয়।
এম/ এমজে